৩১ অক্টোবর ২০২৩, মঙ্গলবার, ৫:২৪

ভোটের আগে একনেকে ৮২ প্রকল্পের রেকর্ড

৩২ প্রকল্প পরিকল্পনামন্ত্রীর ক্ষমতায় অনুমোদন

 

ঠিক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের মতোই এবারো সংসদ নির্বাচনের দু’মাস আগে একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনার রেকর্ড। ঠিক দু’মাস বাকি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের, আর আজ মঙ্গলবার ৮২টি প্রকল্প উঠছে একনেকে। যার মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের ৮টি এবং সড়ক বিভাগের ৭টি প্রকল্প রয়েছে। তড়িঘড়ি করে এত প্রকল্প নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। এই প্রকল্পগুলো অনুমোদন পেলে নিয়ম অনুযায়ী অর্থছাড় করতে পারবে না পরিকল্পনা কমিশন। ফলে অনুমোদন নিয়ে ঝুলে থাকবে পরবর্তী সরকার আসা পর্যন্ত। পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব প্রকল্প এখন রাজনৈতিক কারণে অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। এই ৮২টি প্রকল্পের মধ্যে ৩২টি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান নিজ ক্ষমতায় অনুমোদন দিয়েছেন, যা একনেককে অবগত করা হবে। এসবই রাজনৈতিক।

পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য বলছে, তালিকায় থাকা ৮২ প্রকল্পের মধ্যে ৪৪টি নতুন ও সংশোধিত প্রকল্প। এ ছাড়া ছয়টি মেয়াদ বাড়ানোর এবং বাকি ৩২টি পরিকল্পনামন্ত্রী অনুমোদিত প্রকল্প। যেগুলো একসাথে একনেকে উপস্থাপন করা হবে। একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচনের আগে সরকারের ওই মেয়াদের শেষ একনেক সভায় সর্বোচ্চ ৩৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। আর কার্যতালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবার যেসব প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে সেগুলোর বেশির ভাগই রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিশ্রুতির প্রকল্প। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর এলাকার ৪ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা-ধোনাগোদা নদীর ওপর ঝুলন্ত সেতুর নির্মাণ প্রকল্প। রাষ্ট্রপতির এলাকায় বহুল আলোচিত পাবনা জেলার ইছামতি নদী পুনরুজ্জীবিতকরণ প্রকল্প।

একনেকে যেসব নতুন বড় প্রকল্প অনুমোদন পেতে যাচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে, নওগাঁ, মাগুরা ও জয়পুরহাট জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে তিন প্রকল্প, মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র স্থাপন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কিশোরগঞ্জের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্প, লার্নিং এডুকেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে অফসাইড পানি সরবরাহের সুবিধাদি স্থাপন প্রকল্প, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ এর গ্যাস বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণ, যশোর রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা প্রকল্প, ১০ জেলায় বিএসটিআইয়ের আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন এবং জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাঁচটি প্রকল্প।

সভায় ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন পেতে যাচ্ছে। ভৌত অবকাঠামোর বড় প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ভাঙ্গা- যশোর বেনাপোল মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তর, রিজিলিয়ান্ট আরবান অ্যান্ড টেরিটোরিয়াল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, ঢাকার ইনার সার্কুলার রিং রোডের বেড়িবাঁধ রায়েরবাজার থেকে লোহার ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন প্রকল্প, চট্টগ্রাম দোহাজারী মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজ রেলপথে রূপান্তর প্রকল্প এবং যমুনা রিভার সাসটেনেবল ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প ইত্যাদি।

এত প্রকল্প বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, গত প্রায় এক মাস একনেক সভা হয়নি। যে কারণে এবারের সভায় অনুমোদনের জন্য অনেক প্রকল্প পেন্ডিং আছে। আমরা কোন দিকে যাবো, প্রকল্প কম হলেও বলা হয় সরকারের মনে হয় টাকা নেই, আবার বেশি হলেও সমস্যা। একনেক সভা বেশি দিন হয়নি বলেই একসাথে অনেক প্রকল্প সভায় উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া অন্য কিছু না। তিনি বলেন, এর আগেও তো আমরা প্রতিটা একনেক সভায় ২০ থেকে ২৫টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছি। এক মাসে চারটি একনেক সভা হয়। সেই হিসেবে প্রকল্পের সংখ্যাও ঠিক আছে।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/787934