১৬ অক্টোবর ২০২৩, সোমবার, ২:১৪

অস্থির ডিমের বাজার

সরকারের বেঁধে দেয়া দাম, বিদেশ থেকে আমদানি, তারপরও অস্থিরতা কমছে না ডিমের বাজারে। বাজারভেদে এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কয়েক দফা বেড়েছে সবজির দাম। মাছ-মুরগির দামও ঊর্ধ্বমুখী। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাজারে গিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন- লোক দেখানো হাতেগোনা কয়েকটি অভিযান চালালে হবে না। বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন সমন্বিত প্রচেষ্টা ও সঠিক নজরদারি।
গত ১৪ই সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। বেঁধে দেয়া দাম কার্যকর না হওয়ায় ১৮ই সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথম দফায় ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয়। এরপর দুই দফায় আরও ১১ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডিমের বাজার।

সরজমিন কাওরান বাজার রেলস্টেশন সংলগ্ন রাজধানীর সবচেয়ে বড় ডিমের পাইকারি বাজারের দোকানগুলোয় গিয়ে দেখা যায়, ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি শ’ (১০০টি) বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১৯৫ টাকা থেকে ১২শ’ টাকায়।

যা প্রতিপিস পড়ছে ১১টাকা ৯৫ পয়সা থেকে ১২টাকা। একই বাজারে খুচরা পর্যায়ে বাদামি রঙের এই ডিম ডজন প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫৮ থেকে ১৬০টাকা দরে। এক হালি হিসাবে নিলে পড়ছে ৫৫ টাকা। এর অদূরে রাজধানীর হাতিরপুল বাজারে এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা মূল্যে। ধানম-ি এলাকার রায়ের বাজারে এই ডিমই বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা ডজন। হালি ৫৫টাকা। পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে দাম আরও বেশি।

তেজগাঁওয়ের ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আমানত উল্লাহ বলেন, চাহিদার তুলনায় পাইকারি বাজারে ডিম কম আসছে। সে কারণে ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। উৎপাদন বৃদ্ধি বা আমদানিকৃত ডিম বাজারে ঢুকে গেলে দামও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

ডিম আমদানিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠান মীম এন্টারপ্রাইজের মালিক ইয়ার হোসেন বলেন, ডিম আমদানির এলসি (ঋণপত্র) খোলা হয়েছে। এ সপ্তাহেই ডিম দেশে আসার কথা রয়েছে। ডিম বাজারে চলে এলে দাম কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এদিকে রাজধানীর সবজির বাজারও চড়া। বাজারভেদে সিম কেজি প্রতি ২০০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, বেগুন ১০০-১৪০ টাকা, ঝিঙে ৮০ টাকা, উচ্ছে ১০০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৮০টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা কেজি, পেঁপে ৪০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সরকারের দাম বেঁধে দেয়া পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫টাকা দরে। আর ৩৫/৩৬ টাকা দাম বেঁধে দেওয়া আলু কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে। বেড়েছে মাছ-মুরগির দামও।

কাওরান বাজারে বাজার করতে আসা ফজলুর রহমান নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, যেভাবে বাজারে নিত্যপণ্যোর দাম বাড়ছে, তাতে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। প্রতিদিনই বাজারে নতুন দাম। যে পণ্যের দাম বাড়ছে, তা আর কমছে না। এইভাবে কোনো দেশের বাজার ব্যবস্থা চলতে পারে না।

https://mzamin.com/news.php?news=78787