১২ অক্টোবর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ৬:৪৫

ঝরে পড়ছে অর্ধেক শিক্ষার্থী

শিক্ষাখাতে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা ফলাও করে প্রচার করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বলা হচ্ছে- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, সরকারিকরণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি-মিড ডে মিল (প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা পেলেও বঞ্চিত ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষার্থীরা) এর ব্যবস্থা করেছে সরকার। তবে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার মান নিয়ে এখনো রয়েছে যথেষ্ট প্রশ্ন। শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও প্রতিবছরই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে বিভিন্ন শ্রেণি থেকে। শিক্ষা নিয়ে কাজ করা একাধিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য এবং শিক্ষাবিদ জানিয়েছেন, প্রাথমিক শ্রেণিতে যে সংখ্যক শিক্ষার্থী থাকে তা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগ পর্যন্ত অর্ধেকের বেশি (৭৫ শতাংশের মতো) ঝরে পড়ে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে না পারা, আর্থ-সামাজিক অবস্থা, দারিদ্রতা, বাল্যবিবাহ, করোনা পরবর্তী সময়ে পরিবারের আয় কমে যাওয়া, শিক্ষা উপকরণসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। যারা স্কুলে আসতো তাদেরও অনেকেই আবার এসব কারণে ঝরে পড়ছে। অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষা ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানামুখী বৈষম্যের কারণে মাদরাসা শিক্ষার্থীও আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস), মদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার পরিমাণ কমেছে বলে তথ্য দেয়া হলেও সেটি যৎসামান্যই। শিক্ষাবিদরা বলছেন, প্রতিটি শ্রেণিতে যে হারে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে সেটি একত্রিত করলে তা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক। এছাড়া মাদরাসা শিক্ষার আলিম, ফাযিল ও কামিল পর্যায়ে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার চিত্র আরো বেশি। যদিও ব্যানবেইসের প্রতিবেদনে প্রতিবছর মাদরাসা শিক্ষার্থী বৃদ্ধির পরিসংখ্যান দেখানো হচ্ছে, কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে উল্টো কথা। বরং মাদরাসার পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে যে পরিমাণ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ব্যানবেইসের প্রতিবেদনে তার দ্বিগুন, তিনগুন সংখ্যা উল্লেখ করা হচ্ছে। মাদরাসা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যানবেইস মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা নিয়ে যে, প্রতিবেদন দিচ্ছে তা ভুলে ভরা। কারণ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায় সুযোগ সুবিধা না থাকায় প্রতিবছরই মাদরাসা শিক্ষার্থী কমছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি, মিড ডে মিলসহ যেসব সুযোগ-সুবিধা পায়, মাদরাসায় ভর্তি হলে তার সব থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে মাদরাসা থেকে গিয়ে স্কুলে ভর্তি হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

ঝরে পড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকার বাইরের একাধিক মাদরাসা ও স্কুলের শিক্ষক জানান, করোনার আগে শিক্ষার্থীদের যে উৎসাহে অভিভাবকরা স্কুল-মাদরাসায় পাঠাতেন এখন সেটি কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে নি¤œ ও নি¤œ মধ্যবিত্তদের সন্তানদের স্কুলের পরিবর্তে কাজে পাঠানোকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।

তারা বলেন, অভিভাবকরা জানিয়েছেন, দ্রব্যমূল্যসহ শিক্ষা উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির কারণে তারা তাদের সন্তানদের পড়াশুনা চালিয়ে নিতে পারছেন না। আবার একই পরিবারের একাধিক শিক্ষার্থী থাকলে কাউকে বাদ দিয়ে কাউকে পড়ানো হচ্ছে।

ভুলে ভরা মাদরাসার তথ্য: ব্যানবেইসের তথ্য অনুযায়ী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসায় ২০১২, ’১৩ ও ’১৪ সালে ৬ লাখ ৭৬ হাজার, ২০১৫ সালে ৫ লাখ ২০ হাজার, ’১৬ সালে ৫ লাখ ৭৩ হাজার, ’১৭ সালে ৬ লাখ ১৯ হাজার, ’১৮ সালে ৬ লাখ ৮৮ হাজার, ’১৯ সালে ৯ লাখ ৬১ হাজার, ’২০ সালে ৮ লাখ ১৪ হাজার এবং ২০২১ সালে ৪ লাখ ৪১ হাজার। একই সময়ে কমেছে মাদরাসার সংখ্যাও। যেখানে ২০১৯ সালে মাদরাসার সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৩৭৮টি, ২০২১ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮৩৯টিতে।

আবার ২০২২ সালে মাদরাসার শিক্ষার্থীর সংখ্যা দেখানো হয়েছে ২৭ লাখ ৬২ হাজার। যার মধ্যে দাখিলে ১৪ লাখ ১২ হাজার, আলিমে ৪ লাখ ৮৬ হাজার, ফাজিলে ৬ লাখ ৬২ হাজার এবং কামিলে ৩ লাখ। অন্যদিকে ২০২২ সালে দাখিল পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার, ২০২১ সালে দাখিল পরীক্ষার্থী ছিল ৩ লাখ ১ হাজার, ২০২০ সালে পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৭৬ হাজার, ২০১৯ সালে ৩ লাখ ১০ হাজার। আর ২০১৮ সালে আলিম পরীক্ষার্থী ছিল ৯৭ হাজার, ২০১৯ সালে ৮৬ হাজার, ২০২১ সালে ৮৮ হাজার।

অথচ ব্যানবেইসের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে- ২০১৮ সালে আলিমে শিক্ষার্থী ছিল ৪ লাখ ৪২ হাজার, ২০১৯ সালে ৪ লাখ ৩৫ হাজার, ২০২১ সালে ৪ লাখ ৬০ হাজার।

পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সংখ্যা বিশ্লেষণ করে দেখা যায় মাদরাসা শিক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যহারে কমছে। মাদরাসা শিক্ষার ফাজিল ও কামিল পর্যায়ে এটি আর ভয়াবহ চিত্র। প্রতিটি বর্ষে ২০ থেকে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিবছর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন।

মাদরাসা শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মাদরাসা শিক্ষকদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী বলেন, সাধারণ শিক্ষার শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, মিড ডে মিল দেওয়াসহ নানা রকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। কিন্তু বিপরীতে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা এ থেকে বঞ্চিত। ফলে অভিভাবকরা মাদরাসার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ভর্তি করছে। তিনি বলেন, ইবতেদায়ী হচ্ছে মাদরাসা শিক্ষার ভিত্তি সেখানে প্রতিবছর শিক্ষার্থী কমছে। ফলে উপরের শ্রেণিতে তার প্রভাব পড়বেই। তিনি আরো বলেন, একই শ্রেণিতে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ১৪’শ নম্বরে পরীক্ষা দিচ্ছে, আর সাধারণ শিক্ষার শিক্ষার্থীরা ১ হাজার নম্বরে। এটাও অনেকে চাপ মনে করেন।

প্রাথমিক:
২০২২ সালে প্রাথমিক-প্রাথমিকোত্তর বিভিন্ন স্তর মিলিয়ে মোট শিক্ষার্থী ২ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার ৮১৬ জন, যা ২০২১ সালে ছিল ১ কোটি ৯৭ লাখ ২১ হাজার ৪৫০ জন। অন্যদিকে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের করা ২০২২ সালের বার্ষিক প্রাথমিক বিদ্যালয় শুমারি (এপিএসসি) অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে দেশে প্রাথমিক স্তরের প্রায় ৮ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলো সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি করোনাকালে প্রাথমিক স্তরের ১৪ লাখ শিক্ষার্থী কমে গিয়েছে। ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী ঝরে পড়ার হার ছিল ১৪ দশমিক ১৫ শতাংশ; যা ২০২০ সালে ছিল ১৭ দশমিক ২০ শতাংশ। এ থেকে বোঝা যায়, দেশে প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার কিছুটা কমেছে। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার ছিল ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ, ২০২১ সালে ১৪ দশমিক ১৫, ২০২০ সালে ১৭ দশমিক ২০, ২০১৯ সালে ঝরে পড়ার হার ছিল ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ, ২০১৮ সালে ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ, ২০১৭ সালে ১৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ, ২০১৬ সালে ১৯ দশমিক ২ শতাংশ, ২০১৫ সালে ২০ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ২০ দশমিক ৯ শতাংশ।

দেশে মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ লাখ ১৮ হাজার ৮৯১টি। এতে প্রাক প্রাথমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ২ কোটি ১ লাখ ৯৭২ জন। শুধুমাত্র প্রাথমিকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ৬৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯৬৭ জন। ২০২১ সালে প্রথম শ্রেনীতে শিক্ষার্থী ছিল ৩২ লাখ ৫০ হাজার ২৫১ জন, দ্বিতীয় শ্রেনীতে ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৩১৯ জন, তৃতীয় শ্রেনীতে ৩৩ লাখ ৫৭ হাজার ৫২ জন, চতুর্থ শ্রেনীতে ৩১ লাখ ৫৪ হাজার ৯১৮ জন এবং পঞ্চম শ্রেনীতে ৩৬ লাখ ৪ হাজার ৪২৭ জন।

মাধ্যমিক: ব্যানবেইসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ১৮ হাজার ৯০৭টি। এসব বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে ৮৮ লাখ ৮৯ হাজার ৬৭৪ শিক্ষার্থী। ২০২১ সালের তুলনায় শিক্ষার্থী কমেছে ৪০ হাজার ৫৭১ জন। ওই বছর মোট শিক্ষার্থী ছিল ৮৯ লাখ ৩০ হাজার ২৪৫ জন। অবশ্য স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে মাধ্যমিকে মোট শিক্ষার্থী ১ কোটি ১৯ লাখের বেশি।

২০১৮ সালে মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী ছিল ১ কোটি ৪ লাখ ৭৫ হাজার ১০০ জন। ২০১৯ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১ কোটি ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৩ জনে। ২০২০ সালে এ সংখ্যা আরও কমে হয় ১ কোটি ২ লাখ ৫২ হাজার ১২৬ জন।
২০২১ সালের প্রতিবেদনে দেখা যায়, মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে হয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ ২২ জন। আর ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ৫৬ হাজার ৮৭৯ জন কমে হয়েছে ১ কোটি ১ লাখ ৩৩ হাজার ১৪৩ জন।
২০২২ সালে মাধ্যমিকে ঝরে পড়ার হার ছিল ৩৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ, ২০১৮ সালে ঝরে পড়ার হার ছিল ৩৭ দশমিক ৬২ শতাংশ, ২০১৭ সালে ৩৭ দশমিক ৮১ শতাংশ, ২০১৬ সালে ৩৮ দশমিক ৩০ শতাংশ, ২০১৫ সালে ৪০ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৪১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদ বলেন, মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী কমার কথা বলা হচ্ছে। এটা হতেই পারে। তবে তথ্যের নির্ভরযোগ্যতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। আর উপরের শ্রেণিতে শিক্ষার্থী বৃদ্ধির কারণ হতে পারে পরীক্ষায় সবার পাস করা বা অধিকাংশের পাস করার বিষয়টি। কারণ যখন একজন শিক্ষার্থী উপরের স্তরে চলে যায়, তখন কষ্ট করে হলেও পড়া শেষ করতে চায়। তবে এসব বিষয়ে আরও বিশ্লেষণ হওয়া দরকার।

উচ্চ মাধ্যমিক : উচ্চ মাধ্যমিকে ২০১৮ সালে ঝরে পড়ার হার ছিল ১৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ, ২০১৭ সালে ১৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ২০১৬ সালে ২০ দশমিক ০৮ শতাংশ, ২০১৫ সালে ২০ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ২১ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

গত সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত এডুকেশন ওয়াচের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশিরভাগ শিক্ষক স্কুলে মিড-ডে মিলকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছেন। একইসঙ্গে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারগুলোর জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিধি বাড়ানোর কথা তারা বলেছেন।

সরকারি হিসেবে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার যেভাবেই দেওয়া হোক না কেন প্রকৃতপক্ষে প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশই ঝরে পড়ে। ১২ বছর শিক্ষা জীবনে টিকে থাকা শিক্ষার্থীর হার ২৫ শতাংশের বেশি হবে না বলে মনে করেন পিপলস্ ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশনের (পপি) নির্বাহী পরিচালক মোরশেদ আলম সরকার।

শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. মঞ্জুর আহমেদ জানান, প্রাথমিকে ঝরে পড়ার পর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির হার ৬০ শতাংশ, দশম শ্রেণি পর্যন্ত তা ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ এবং দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আসতে পারে ১০ থেকে ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী। আবার এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা উত্তীর্ণ হয়ে ফেরেন তাদের শিক্ষার মান নিয়েও রয়েছে সংশয়।

তিনি জানান, ২০১৫ সালে ২০৩০ সাল পর্যন্ত শিক্ষার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, ২০২২ সাল পর্যন্ত অর্ধেক সময় চলে গেলেও অর্জন কাক্সিক্ষত লক্ষমাত্রা থেকে অনেক পিছিয়ে। করোনার দুই বছরে এ লক্ষ্যমাত্রা থেকে আমরা আরও পিছিয়ে পড়েছি।

মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) হাবিবুর রহমান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের বৃত্তির বিষয়ে একটি নীতিমালা রয়েছে। যে কারণে ইবতেদায়ির শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পাচ্ছে না। তবে আমরা নীতিমালা পরিবর্তনের উদ্যোগ নিচ্ছি। এটি পরিবর্তন হলে, মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও বৃত্তি পাবে। তবে মাদরাসা শিক্ষার্থীর সংখ্যার বিষয়েও তিনি কোনো তথ্য দিতে পারেননি।

প্রাথমিকে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, করোনাকালীন দুই বছর শিক্ষা উপবৃত্তি দেওয়া বন্ধ ছিল। পাশাপাশি ‘মিড ডে মিল› কর্মসূচিও বন্ধ ছিল। এগুলো আবার চালু হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীও বাড়ছে।

https://dailyinqilab.com/national/article/609136