১২ অক্টোবর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ৬:৪৩

৩ মাসে রিজার্ভ থেকে ৩.৭৫ বিলিয়ন ডলার বিক্রি

গত দেড় বছর ধরে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকলেও বাজারে ডলার সংকটের কারণে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর ২০২৩-২৪ সালের প্রথম তিন মাসে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে রিজার্ভ থেকে ৩.৭৫ বিলিয়ন ডলার বিক্রি হয়েছে। আন্তর্জাতিক পেমেন্ট নিষ্পত্তির জন্য ডলার সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে সাহায্য করতে হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। এর আগে, ২০২৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ১৩.৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করে। রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই সংকটে রয়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এরমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারা ক্রমাগত ডলার বিক্রি, রিজার্ভের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করেছে। সেপ্টেম্বর শেষে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেমে এসেছে ২১.০৫ বিলিয়ন ডলারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, রিজার্ভের ডলার জ্বালানি, সার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ আমদানিকৃত পণ্যের এলসি পরিশোধে ব্যবহৃত হয়। রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোকে সহায়তা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এলসি খোলার সক্ষমতা বাড়ায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই- সেপ্টেম্বর সময়ের মধ্যে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা থেকে ১৬.১৪ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের ওপর পেমেন্টের অনেক চাপ রয়েছে।

আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাচ্ছি না। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদের সহায়তা করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার এসোসিয়েশন (বাফেদা) ঘোষিত ডলার রেট অনুসরণ করার কারণেও আমরা রেমিট্যান্স কম পাচ্ছি।

বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির জন্য ডলারপ্রতি দর রাখছে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা করে। আবার বাফেদার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ৫০ পয়সা দরে এক ডলার বিক্রি করতে পারবে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ডলারের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক না হওয়ায় সরবরাহের তুলনায় ডলারের চাহিদা অনেক বেশি। তাই রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করার পর বাজারে ডলারের ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন ডলারের হার নির্ধারণ করে দেয়, তখন রেমিট্যান্স প্রবাহ অনেক কমে যায়। সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স আয় ১.৩৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। কিন্তু জুলাই মাসে, এ ধরনের কঠোরতার না থাকায় রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার।

https://mzamin.com/news.php?news=78101