৩ অক্টোবর ২০২৩, মঙ্গলবার, ১০:৪৫

তৈরি পোশাক ছাড়া অন্য সব খাতে কমেছে রপ্তানি আয়

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৩১ কোটি ডলার, যা গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ১০.৩৭ শতাংশ বেশি। সবদিক থেকে পণ্য রপ্তানি আয় ইতিবাচক ধারায় থাকলেও তৈরি পোশাক ছাড়া বড় সব খাতেই রপ্তানি আয় কমে গেছে। গত জুলাই ও আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে কমেছে রপ্তানি আয়। পণ্য রপ্তানির এ হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। এদিকে একক মাস হিসেবে রপ্তানি আয় বাড়লেও সরকারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। ২০২৩ সালে সরকারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৬৩ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। আর আয় হয়েছে ৪৩১ কোটি ৩ লাখ ৩০ হাজার ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৭.০৫ শতাংশ কমেছে।

ইপিবি’র তথ্যে দেখা যায়, জুলাই ও আগস্ট মাসে পণ্য রপ্তানি হয়েছিল যথাক্রমে ৪৫৯ ও ৪৭৮ কোটি ডলারের। সেপ্টেম্বরে হয়েছে ৪৩১ কোটি ডলার। অর্থাৎ জুলাই ও আগস্ট মাসের তুলনায় সেপ্টেম্বর মাসে পণ্য রপ্তানি আয় কমেছে।

সে ক্ষেত্রে জুলাইয়ের তুলনায় কমেছে ৬.১০ শতাংশ আর গত আগস্টের তুলনায় কমেছে ৯.৮৩ শতাংশ।
ইপিবি প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ১ হাজার ৩৬৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯.৫১ শতাংশ বেশি। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে রপ্তানি আয় ছিল ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৫.২৬ শতাংশ।

তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি থাকায় চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত সামগ্রিক পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। তবে সরকার রপ্তানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু সেপ্টেম্বর নয়, তার আগের মাস আগস্টেও রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হয়নি। ফলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই মাসে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পর আগস্ট ও সেপ্টেম্বর টানা দুই মাস সরকার নির্ধারিত পোশাক পণ্য রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে হোঁচট খেলো বাংলাদেশ।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, বাইসাইকেলসহ প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি কমে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে দেশে ডলার সংকট বিদ্যমান। ডলারের অন্যতম উৎস হচ্ছে পণ্য রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয়। ডলার সংকট, প্রবাসী আয় কমে যাওয়া, রপ্তানির প্রবৃদ্ধি আয়ের ওঠানামা সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

ইপিবি’র তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে মোট পণ্য রপ্তানির ৮৫ শতাংশ। ১ হাজার ১৬২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি। তৈরি পোশাক খাতে নিট পোশাক ৬৭৬ কোটি ডলার ও ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৪৮৫ কোটি ডলারের। এ সময়ে নিট পোশাকে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯.৭০ শতাংশ। ওভেন পোশাকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪.৯৭ শতাংশ।

ইপিবি’র তথ্যমতে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্য বিশ্ববাজারে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩৬১ কোটি ৮৯ লাখ ডলার সমপরিমাণ পণ্য। যা ২০২২ সালের একই সময়ে ছিল ৩১৬ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার। অর্থাৎ ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পোশাক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৪৫ কোটি ৭২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। যা শতাংশের হিসাবে বেড়েছে ১৪.৪৬ শতাংশ। বিদায়ী মাসটিতে পোশাক পণ্য রপ্তানি আয়ে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৯০ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার ডলার সমপরিমাণের। আর আয় হয়েছে ৩৬১ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। ২৯ কোটি ডলার অর্থাৎ শতাংশের হিসেবে ৭.৩৪ শতাংশ কম রপ্তানি আয় হয়েছে।

https://mzamin.com/news.php?news=76752