৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ৭:০৯

শ্রীলঙ্কার ঘুরে দাঁড়ানো থেকে যা শিক্ষণীয়

ড. মো: মিজানুর রহমান

দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে অগ্রসর অর্থনীতির দেশ ছিল শ্রীলঙ্কা, যেখানে মাথাপিছু জিডিপি হয়েছিল চার হাজার ডলারের বেশি। দেশটির ৯৫ শতাংশ মানুষ শিক্ষিত, তাদের শিক্ষাব্যবস্থা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে গণমুখী। তাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থাও দক্ষিণ এশিয়ার সেরা। শ্রীলঙ্কান তামিল টাইগারদের ওপর সরকারি বাহিনীর বিজয়ের মাধ্যমে ১৯৮৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত চলা গৃহযুদ্ধের সমাপ্তির পর বিশ্বের কাছে একুশ শতকের সফল অর্থনৈতিক উন্নয়নের মডেল হয়ে ওঠার সম্ভাবনা ছিল দেশটির। ওই গৃহযুদ্ধে একতরফা বিজয় অর্জনে প্রায় ৪০ হাজার বেসামরিক তামিলকে হত্যার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং প্রতীচ্যের বেশির ভাগ দেশ শ্রীলঙ্কাকে ‘অস্পৃশ্য রাষ্ট্রের’ অবস্থানে নিয়ে যায়।

২০২১-২২ সালের দিকে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি কঠিন সঙ্কটে ক্রমেই তলিয়ে যাচ্ছিল। দেশটিতে আমদানি পণ্যের ক্রমবর্ধমান ঘাটতি জনজীবন পর্যুদস্ত করে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মজুদদারি এতই শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল যে, নিত্যপণ্যের সরবরাহ তদারকের জন্য একজন মিলিটারি জেনারেলের নেতৃত্বে ‘কন্ট্রোলার অব সিভিল সাপ্লাইজ’ নামের কঠোর নজরদারি সংস্থা গড়ে তুলেও অবস্থা সামাল দেয়া যাচ্ছিল না। খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের ভয়ঙ্কর সঙ্কট দেখা দেয়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে পৌঁছে যাওয়ায় খাদ্য আমদানির সামর্থ্য ছিল না বললেই চলে। গাড়ি, স্যানিটারি আইটেম, কিছু ইলেকট্রনিক পণ্যের আমদানি বন্ধ করে দেয়া হয়।

মুদ্রাস্ফীতির হার বেড়ে চলছিল শ্রীলঙ্কার। রুপির মান এক ডলারে ১৯০ রুপি থেকে বেড়ে ২৩০ রুপিতে পৌঁছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে যায়, অথচ ২০২২-২৩ অর্থবছরের মধ্যে শ্রীলঙ্কাকে ৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সুদাসলে পরিশোধ করতে হতো। অর্থাৎ শ্রীলঙ্কা নিজেকে ‘আর্থিক দেউলিয়া’ ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল। এক পর্যায়ে সরকার দেশে ‘অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করে। এ দেউলিয়াত্ব দেখা দেয় নানা প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের কারণে। বৈদেশিক ঋণের অর্থে যেখানে-সেখানে প্রকল্প গ্রহণের চরম মূল্য দিতে শুরু করে শ্রীলঙ্কা। দেশের কৃষিবিদ ও বিজ্ঞানীদের সাথে পরামর্শ না করেই প্রেসিডেন্ট নিজের সিদ্ধান্তে রাতারাতি কৃষি খাতে ‘অর্গানিক ফার্মিং’ চালুর সিদ্ধান্ত নেন। ফলন বিপর্যয়ে পড়ে কৃষি খাত। খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন এক বছরে এক-চতুর্থাংশে নেমে আসে। অন্যদিকে, করোনায় বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের গুরুত্বপূর্ণ খাত পর্যটনে প্রায় ধস নামে। রফতানি আয়ের প্রধান সূত্র এলাচি ও দারুচিনিও বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক আয়ে বড়সড় ধস নামে।

শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্বের অন্যতম কারণ ছিল রাজনীতিকে ‘পারিবারিক একনায়কত্বে’ পর্যবসিত করা, যা একটি সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশকেও গভীর সঙ্কটের গিরিখাদে নিক্ষেপ করে। শ্রীলঙ্কার সিংহলিরা গৃহযুদ্ধের কারণে ভারতের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল, যে কারণে দেশটি চীনের দিকে ঝুঁকে পড়েছিল। চীনও শ্রীলঙ্কাকে নিজেদের প্রভাববলয়ে টেনে নেয়। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) আওতায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, কলম্বোয় চায়নিজ সিটি নির্মাণসহ আরো কয়েকটি প্রকল্পে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করে। অথচ নির্মাণ সম্পন্ন হলে দেখা গেল, বন্দর ব্যবহারের যথেষ্ট চাহিদা নেই। বন্দরের আয় বাড়াতে চরমভাবে ব্যর্থ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা ৯৯ বছরের জন্য বন্দরটি চীনের কাছে লিজ দিতে বাধ্য হয়।

প্রকল্প মূল্যায়ন করে গৃহীত না হওয়ায় এগুলোর কোনোটিই যথেষ্ট আয়বর্ধনকারী হয়ে ওঠেনি। ফলে শ্রীলঙ্কা ‘চীনা ঋণের ফাঁদে’ আটকে গেছে। সবচেয়ে মারাত্মক হলো, ‘সভরেন বন্ড’ ছেড়ে আন্তর্জাতিক অর্থবাজার থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার পুঁজি সংগ্রহ করেছিল, যেগুলোর ম্যাচিউরিটি ২০২২ সাল থেকেই শুরু হয়েছে। কিন্তু সুদাসলে ওই বন্ডের অর্থ ফেরত দেয়ার সামর্থ্য নেই।

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুর্দশার মুখে রীতিমতো অচল হয়ে পড়েছিল শ্রীলঙ্কা। তার জেরে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের মার্চে শুরু হয় গণবিক্ষোভ। জন-অসন্তোষ চরমে ওঠে। গণরোষের মুখে পড়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট। বলতে গেলে শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক ধস পারিবারিক একনায়কত্বের ফসল। একনায়কের পতনের পর দায়িত্ব নেন রনিল বিক্রমাসিংহে।

শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা : শ্রীলঙ্কা তার অর্থনীতি সঙ্কট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। বিদেশী মুদ্রা আয়ের মূল খাত পর্যটন প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। গত বছর শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়। শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো অবশ্য বলছে, এ বছরও জিডিপি সঙ্কুুচিত হবে, তবে সঙ্কোচনের হার কমে আসবে। আর আগামী বছর প্রবৃদ্ধি হবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্তও তারা ভালোভাবে পরিপালন করতে পারছে। গত বছর জ্বালানি ও রান্নার তেলসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের যে স্বল্পতা ছিল, সেটি এখন নেই।

মাত্র দেড় বছরের মধ্যে ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশটি যে ঘুরে দাঁড়াতে পারল তার কারণ হিসেবে কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক প্রিয়াংঙ্গা দুনুসিংহে বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু নীতি পরিস্থিতির উন্নতিতে ভূমিকা রেখেছে। এর ফলে রেমিট্যান্স ও পর্যটনের মতো কিছু ক্ষেত্রে অটোমেটিক রিকভারি হয়েছে। সরকারি ব্যয় কমানো ও রাজস্ব আয় বাড়ানোর পাশাপাশি সংস্কারকার্যক্রম জোরদার করার ফলেই দ্রুত ঘুরতে শুরু করেছে অর্থনীতির চাকা। সরকার ব্যয় কমিয়ে রাজস্ব বাড়িয়েছে আর সংস্কারকার্যক্রম জোরদার করে করজাল বিস্তৃত করেছে। কারেন্সি সোয়াপ পদ্ধতির আওতায় ২০২১ সালের বাংলাদেশ থেকে নেয়া ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ শোধ করেছে শ্রীলঙ্কা।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যে কারণে গত বছর সঙ্কট হলো, সেটি আমলে নেয়া। সঙ্কটের মূল কারণ ছিল বাজেট ও বহিস্থ অর্থনীতির ঘাটতি, যে কারণে ঋণসঙ্কট তৈরি হয়। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকার যৌথ ব্যবস্থা নিয়েছে। ঋণসঙ্কট মোকাবেলায় ঋণ পুনর্গঠন করছে। এ ছাড়া সরকারের রাজস্ব আয় বাড়াতে নতুন কর আইন করাসহ করহার বাড়ানো হয়েছে এবং ব্যয় সঙ্কোচন করা হচ্ছে।

আইএমএফের শর্ত মেনে শ্রীলঙ্কার ঋণ পুনর্গঠনের চেষ্টা : শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতির একটি কারণ ছিল দেশ থেকে অর্থ বেরিয়ে যাওয়া। সেটি হতো মূলত আমদানির মাধ্যমে, যার মূল্য পরিশোধ করতে হতো ডলারে। ডলার বেরিয়ে গেলে স্থানীয় মুদ্রার বিনিময়মূল্য কমে যায়, যে কারণে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যায়। বৈদেশিক আয় বাড়াতে ২০২২ সালে দেশটির তিন লাখ ১১ হাজারের বেশি মানুষ কাজের জন্য বিদেশে গেছেন, যাদের মধ্যে অনেক উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী আছেন।

নতুন গভর্নর বসিয়ে সরকার তাকে স্বাধীনভাবে নীতি সুদহার বৃদ্ধি ও মুদ্রার একক বিনিময় হার নিশ্চিত করার সুযোগ দেয়। শ্রীলঙ্কায়ও মুদ্রাবাজারের কারসাজির কারণেও মুদ্রার বিনিময় হারে প্রভাব পড়ে, মূল্যস্ফীতি বাড়ে। তবে মুদ্রার বিনিময় হারের ওঠানামা করলেও নীতি সুদহার বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে মূল্যস্ফীতির রাশ টেনে ধরা গেছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে সঙ্কটের চূড়ান্ত সময়ে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৪৯ শতাংশের বেশি। গত এক বছরে শ্রীলঙ্কা থেকে তিন লাখ ১১ হাজারের বেশি মানুষ কাজের জন্য বিদেশে গেছেন, যাদের মধ্যে চিকিৎসক, প্যারামেডিক্যাল, তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের মতো অনেক উচ্চদক্ষতাসম্পন্ন কর্মী আছেন। এরা বিদেশ থেকে প্রবাসী আয় পাঠানোর কারণে গত এক বছরে দেশটির প্রবাসী আয় ৭৬ শতাংশ বেড়েছে।

শ্রীলঙ্কার ভুল নীতি, অব্যবস্থাপনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে তারা আইএমএফের দ্বারস্থ হয় এবং আইএমএফ স্বল্পসুদে ও স্বল্পমেয়াদে ঋণ দেয়। ফলে বিশ্ব ঋণ বাজারও শ্রীলঙ্কার প্রতি আশ্বস্ত হয় এবং এগিয়ে আসে। শ্রীলঙ্কা আইএমএফের ঋণের বেশির ভাগ শর্ত বিশেষ করে আইএমএফের পরিমাণগত কর্মক্ষমতা মানদণ্ড (কিউপিসি) পূরণে যথেষ্ট ভালো করেছে; ইতোমধ্যে রাজস্ব খাত সংহত করেছে। ভর্তুকি কমিয়ে এবং করহার ও করের জাল বাড়িয়ে আর্থিক স্থিতিশীলতা অর্জনের বেশ এগিয়েছে।

শ্রীলঙ্কার পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য শিক্ষণীয় : এ কথা সত্যি, ‘শ্রীলঙ্কার সাথে আমাদের অবস্থা পুরোপুরি তুলনীয় না হলেও, অনেকটা তুলনীয় ও শিক্ষণীয়। তারা যেভাবে বড় সমস্যা মোকাবেলা করে এখন স্থিতিশীল হচ্ছে, সেটিই শিক্ষণীয় বিষয়।’ শিক্ষণীয় হলো- বাংলাদেশেও শ্রীলঙ্কার মতো গণতন্ত্রকে একনায়কত্বে পর্যবসিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ চরমভাবে পারিবারিক রাজনীতির শৃঙ্খলে আবদ্ধ।
বাংলাদেশে এখনো বিদেশী মুদ্রার সঙ্কট রয়েছে এবং তা দিনে দিনে তীব্র হচ্ছে। আমদানি-রফতানির ছত্রছায়ায়, শেয়ারবাজার ও ব্যাংক লুট করে দুর্নীতিবাজ আমলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনীতিবিদরা বিদেশে অর্থপাচার করছে। বৈদেশিক আয় আসছে হুন্ডির মাধ্যমে। অন্যদিকে রাজস্ব আয়ে রয়েছে অব্যবস্থাপনা। সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ঝুঁকির মুখে পড়েছে সে কারণে।

শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও তাদের গভর্নর সঙ্কট মোকাবেলায় আগের নীতি থেকে সরে আসছে। অথচ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে রিজার্ভ পাচার হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে আইন অপরাধীদের রক্ষা করছে। কৃষি খাতে আগের ভুল নীতি থেকে সরে এসেছে শ্রীলঙ্কা। তবে কৃষি খাতে শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। শ্রীলঙ্কা পর্যটন খাত চাঙ্গা করা, প্রবাসী আয় বাড়ানো ও মুদ্রার বিনিময় হার বাজারের সাথে সমন্বয় করার মাধ্যমে তারা রিজার্ভ বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশের পর্যটন খাতের বৈদেশিক আয় খুবই কম। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে বিদেশী পর্যটক আসেই না বলতে গেলে। তবে শ্রীলঙ্কায় রাতারাতি নয়, ধীরে ধীরে হচ্ছে, সেটিই নিয়ম। তবে তারা ঠিক পথেই আছে।

শ্রীলঙ্কার বড় অঙ্কের ঋণের বোঝা পরিশোধ করতে অর্থনীতির চাকা আরো সচল করতে হবে। এখানেও বাংলাদেশের শিক্ষণীয় রয়েছে। পাহাড় পরিমাণ দেশী-বিদেশী ঋণে বাংলাদেশ নিমজ্জিত। বিলাসী মেগা প্রকল্পে ঋণ নিয়েছে যার উল্লেখযোগ্য অংশ তছরুপ হয়েছে। শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে ভালো দিক হলো- দেশটি তার ভুল ধরতে পেরেছে এবং এখন সবার আগে সেই ভুল শোধরানোর চেষ্টা করছে। অথচ বাংলাদেশ আজও তার ভুল বুঝতে পারেনি। কোনো ভুলই যেন সরকারের নেই; সমস্ত ব্যর্থতা যেন বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র। শ্রীলঙ্কা এই মুহূর্তে তাদের অগ্রাধিকার অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচির সাথে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে। ফলে উচ্চ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে খানিকটা সময় লাগবে। তবে তারা ঠিক পথে আছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো ভুল পথে ঘুরছে; এই ভুল স্বীকারও করছে না দেশটি। সুতরাং ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ কম। বাংলাদেশকে শুরু করতে হবে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা; এর জন্য শুরুতেই প্রয়োজন ভুল চিহ্নিত ও স্বীকার করা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা এবং জনসম্পৃক্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে আসা।
লেখক : অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট
Mizan12bd@yahoo.com

https://www.dailynayadiganta.com/post-editorial/780613