৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার, ১২:৪৮

আবারো বেড়েছে ডেঙ্গু

নতুন করে আক্রান্ত ২৮২৩, মৃত্যু ১২

আবারো বেড়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ৩ দিন থেকে বাড়ছে। গতকাল সকাল পর্যন্ত দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৮২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর আক্রান্ত হয়েছিল ২ হাজার ৩৫২ জন এবং গত রোববার আক্রান্ত হয়েছিল ২ হাজার ৬০৮ জন। গত শনিবার থেকে গতকাল বেড়েছে ৪৭১ জন। সেপ্টেম্বরের গত ৪ দিনে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৯ হাজার ৩১৭ জন। অন্য দিকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত এর পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এই জ্বরে মারা গেছে ১২ জন। অবশ্য গত আগস্টের প্রথম ৪ দিনের সাথে তুলনা করলে সেপ্টেম্বরের ৪ দিনে ৩২৪ জন কম আক্রান্ত হয়েছে।

গতকাল দেশে যে ২ হাজার ৮২৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এর মধ্যে ঢাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৫ জন এবং ঢাকার বাইরে আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ৮১৮ জন। যে ১২ জন গতকাল মারা গেছে তাদের মধ্যে ঢাকায় ছিল ৪ জন এবং ঢাকার বাইরে ৮ জন। এ দিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর গত ২৭ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক সপ্তাহের একটি পরিসংখ্যানে দেখিয়েছে যে, ওই সপ্তাহে দেশে ১৫ হাজার ৫১০ জন আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৬০ শতাংশ ছিল পুরুষ। অন্য দিকে ওই সপ্তাহে দেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছে ৮১ জন। তাদের মধ্যে ৬৪ শতাংশ অথবা ৫২ জন নারী এবং ৩৬ শতাংশ অর্থাৎ ২৯ জন পুরুষ। দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তে পুরুষের সংখ্যা বেশি হলেও পুরুষদের মধ্যে মৃত্যু কম, নারীরা বেশি মারা যাচ্ছেন। এর মধ্যে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে মারা গেছে ৫০ জন অর্থাৎ ৬২ শতাংশ। অন্য দিকে ডেঙ্গু হেমোরেজিকে মারা গেছে ৮ জন অর্থাৎ ১০ শতাংশ, ডেঙ্গু জ্বরে ভোগার আগে অন্য অসুখ ছিল মৃত্যুর সংখ্যা। ওই সপ্তাহে ছিল ৫ জন অর্থাৎ ৬ শতাংশ এবং ডেঙ্গুতে ভোগার পর অন্যান্য প্রয়োজনীয় অকার্যকর হয়ে মারা গেছে মোট মৃত্যুর ২২ শতাংশ অর্থাৎ ১৮ জন।

আগস্টের মতো চলতি সেপ্টেম্বর মাসটিও ডেঙ্গুর মৌসুম। এককভাবে রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত বেশি হলেও ধীরে ধীরে ঢাকার বাইরের অন্যান্য স্থানে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসকরা এটাকে উদ্বেগজনক বলছেন। কারণ ঢাকায় ডেঙ্গু সংক্রমণ বেশি থাকলেও এখানে চিকিৎসা আছে। কারণ ঢাকায় দেশের বড় বড় সরকারি হাসপাতালসহ বেসরকারি অনেক হাসপাতাল রয়েছে। কিন্তু গ্রামের দিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও সেখানকার চিকিৎসা খুবই অপ্রতুল। কারণ সেখানে কাগজে-কলমে প্রচুর চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া থাকলেও তারা সেখানে সব সময় অবস্থান করেন না। একটা নির্দিষ্ট সময় ডিউটি পালন করে তারা ঢাকায় অথবা অন্য বড় শহরগুলোতে চলে যান। ফলে উপজেলা শহরের মানুষ যথাযথ চিকিৎসা পায় না। ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে অবস্থা একটু খারাপ হলেই মানুষ ছুটে আসে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অথবা ঢাকায়। এসব কারণে মানুষের ভোগান্তি বাড়ে এবং একই সাথে খরচও বেড়ে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক এম মোজাহেরুল হক বলছেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে শক্তিশালী করতে পারলে সেখানেই সব ধরনের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হতো। ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা দেয়া খুব কঠিন কিছু না। কিন্তু সেখানে সব সময় চিকিৎসা থাকে না বলে রোগীরা চলে আসে ঢাকায়। ফলে ঢাকার টার্শিয়ারি হাসপাতালগুলো বিশেষায়িত রোগীর দিকে কম মনোযোগ দিতে পারে।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/774932