অভয়নগরে স্লুইচ গেট ভেঙে এভাবে ধানক্ষেতে পানি প্রবেশ করায় কাটাধান পানিতে ভাসছে
২৫ এপ্রিল ২০১৭, মঙ্গলবার, ১০:১৮

অভয়নগরে স্লুইজ গেট ভেঙ্গে ধানক্ষেতে লোনা পানি ॥ শত শত বিঘা জমির ধান নষ্ট

যশোরের অভয়নগর উপজেলার ৮নং সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নে নাউলী আমতলা স্লুইজগেট ভেঙ্গে ব্যাপক ভাবে লোনা পানি বিলের মধ্য প্রবেশ করেছে। একটানা ৫ দিন লোনা পানি প্রবেশের কারণে শ’ শ’ বিঘা জমির ধান নষ্টের উপক্রম হয়েছে। দীর্ঘ দিন সংস্কার না করার কারণে হঠাৎ করে ভেঙ্গে গেছে গেটের দু’টি কপাট। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিতে শেষ পর্যন্ত মাথায় হাত উঠেছে কয়েক হাজার কৃষকের। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে কৃষকের কোটি টাকার উপরে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানা গেছে।
সরে জমিনে দেখা যায়, ইউনিয়নের নাউলী পূর্ব বিল, সিদ্ধিপাশা পূর্ব ও পশ্চিম বিল, গোপিনাথপুরের বিল, ধূলগ্রামের চাঁদের বিলসহ প্রায় ২০টি বিলের পানি অপসারণের জন্য একটি মাত্র মেইন গেট সেটি হলো সিদ্ধিপাশা জয়রাবাদ স্লুইজগেট। হঠাৎ করে একটানা বৃষ্টির কারণে পানির চাপ বেড়ে যাওয়াতে স্লইজ গেটের উত্তর ও দক্ষিণ পার্শ্বের কপাট ভেঙ্গে গেলে শুরু হয় পানি প্রবেশ। একটানা ৫ দিন পানি ঢুকতে থাকায় ২০টারও বেশি বিলে শুরু হয়েছে জলাবদ্ধতা। পানির উপর ভাসছে শতশত বিঘার কাটা ধান। ইতিমধ্য গজাতে শুরু করেছে ধান। পচন শুরু হয়েছে ধানের জালি। যে ধানগুলো এখনও কাটা হয়নি তার অর্ধেকের সমান পানি। কৃষকের কান্নায় ভারি হতে শুরু করেছে সিদ্ধিপাশার আকাশ বাতাস। এলাকায় যেন কৃষকের শোকের মাতম শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসিনতায় ঘটে যাওয়া এ ভয়াবাহ দুর্ঘটনার খোঁজ খবর নিতে এখনও আসেনি কেউ। স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ হাফিজুর রহমান জানান, অতিদ্রুত স্লইজগেটটি সংস্কার না করলে কৃষকের ধান ঘরে উঠার কোন সম্ভবনা নেই। ঘটনাস্থল জয়রাবাদ পূর্ব বিলে গেলে দেখা যায় মাঠের পর মাঠ শত শত বিঘা জমির ধান লোনা পানির উপর ভাসছে।
কৃষক রেজাউল সরদার কাঁদতে কাঁদতে জানালেন, তার সব ধান শেষ হয়ে গেছে। পানির উপর ভাসছে কাটা ধান, অনেক ধার-দেনা করে ধানচাষ করেছিলেন বলে জানালেন তিনি।
মোজিদ শেখের ছেলে হৈজুন শেখ ও ইউনুস মুন্সী জানালেন এভাবে আর দু’তিনদিন চলতে থাকলে কৃষকের মাঠে গিয়ে কোন লাভ হবে না।
খোঁজ নিয়ে আরো জানাগেলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে জয়রাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অর্ধ কিলো মিটারের মত নদীর পাড় বাধার কারণে স্রোতের চাপ বেশী হওয়াতে স্লুইজগেটের কপাট ভেঙ্গে গেছে।
এ বিষয়ে সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খান এ কামাল হাসান জানান, দীর্ঘদিন ধরে অকেজো থাকা এ স্লুইজ গেটটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে পানির চাপ থাকায় নদীর পানি প্রবেশ করে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

http://www.dailysangram.com/post/281249-