১০ মার্চ ২০১৭, শুক্রবার, ১১:৩৭

মাদকের রমরমা বাণিজ্য

রাজধানীসহ সারা দেশে চলছে মাদকের রমরমা বাণিজ্য। নগর-মহানগর থেকে জেলা-উপজেলা শহর সর্বত্র মাদকের ছড়াছড়ি। কোন ধরনের রাখঢাক নেই, প্রকাশ্যেই মুড়ি-মুড়কির মতো খোলা বাজারে কেনা-বেচা হচ্ছে। মাদকের সহজলভ্যতার কারণে এখন কিশোর ও তরুণ-তরুণীরা আশঙ্কাজনক হারে মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ছে। মাদক ব্যবসায়ী চক্রও দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠছে। এদের দমন করতে পারছে না আইনশৃংখলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা।

মাদক সেবী সন্তানের হাতে খুন হচ্ছেন পিতা-মাতা, স্বামীর হাতে খুন হচ্ছেন স্ত্রী, পিতার হাতে সন্তান, বন্ধুর হাতে বন্ধু, ভাইয়ের হাতে ভাই ও বোন খুন হচ্ছেন। মাদকবিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে সরকারী কর্মকর্তারাও মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হামলার শিকার হচ্ছেন। অভিযানের সময় গতকাল মাদক ব্যবসায়ীরা কুপিয়ে হত্যা করেছে একজন আনসার সদস্যকে। এঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেটসহ আহত হয়েছেন তিনজন। এধরনের হামলার ঘটনা আরো ঘটছে। তারপরেও মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করতে কঠোর কোন পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। বরং দিন দিন মাদক ব্যবসার বিস্তার ঘটছে।

র‌্যাব-পুলিশের অভিযানে গত দুই মাসে রাজধানীসহ সারা দেশ থেকে প্রায় ৫ কোটি পিস ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে। তারপরেও বন্ধ হয়নি ইয়াবা ব্যবসা। অবাধে সীমান্তের ওপার থেকে আসছে ইয়াবা, ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক। সংসদ সদস্য (এমপি) থেকে রাজনৈতিক দলের নামীদামী নেতারা পর্যন্ত মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদের প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষ মদদের কারণেই বন্ধ হচ্ছে না মাদক ব্যবসা। এমনটি জানিয়েছেন র‌্যাব-পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা। অন্যদিকে মাদক সেবনকারীদের চিকিৎসার নামে গড়েওঠা কিছু মাদক নিরাময় কেন্দ্রেও চলছে মাদকের রমরমা বাণিজ্য।
ফেনীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলায় নওশের আলী (৪০) নামে এক আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন। বুধবার মধ্যরাতে ফুলগাজী উপজেলার বদরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানাসহ তিনজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সুমন মিয়া নামে পুলিশের এক সোর্স নিখোঁজ রয়েছেন।

ফুলগাজী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম মোর্শেদ জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার মধ্যরাতে উপজেলার সীমান্তবর্তী বদরপুর গ্রামে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর হামলা চালায়। তাদের হামলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানাসহ তিনজন আহত এবং আনসার সদস্য নওশের আলী ও পুলিশের সোর্স সুমন মিয়া নিখোঁজ হন। পরে মাদক ব্যবসায়ীরা আনসার সদস্য নওশের আলীকে সীমান্তের ওপারে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরে বিএসএফ তার লাশ উদ্ধার করে। তবে এখনো সুমনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এর আগে রাজধানীর পুরান ঢাকায় বংশাল রোডে মাদকবিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলার শিকার হয়েছিলেন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তাসহ একজন আনসার সদস্য।

বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতার দরকার। শুধু পুলিশ দিয়ে মাদক ব্যবসা বন্ধ করা সম্ভব নয়। জঙ্গিবাদ এবং মাদক সমাজের বড় সমস্যা। বাংলাদেশ পুলিশ জঙ্গিবাদ দমন এবং মাদকের বিস্তার রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। তিনি মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য সমাজের সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষের প্রতি আহŸান জানান। আইজিপি বলেন, মাদক ব্যবসায়ীরা সমাজের শুত্রæ, এদের শনাক্ত করে সামাজিকভাবে বয়কট করা উচিত। আইজিপি বলেন, সারা দেশেই মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

রাজধানীর কাওরানবাজারে গড়েওঠা খোলামেলা মাদক হাটটি বন্ধ হচ্ছে না কোনোভাবেই। অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর শীর্ষ পর্যায়ের পাঁচ মাদক সম্রাজ্ঞী সাহিদা, মাহমুদা, নীলা, জরিনা, মিনা ও কুট্টি কাওরানবাজারে মাদক আড়তদারি খুলে বসেছে। গত ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের খোলামেলা মাদক আড়তের রমরমা বাণিজ্য চললেও বাধা দেওয়ার যেন কেউ নেই। থানা পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগ, স্থানীয় মাস্তান, নেতা থেকে শুরু করে মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের বিভিন্ন স্তরে নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়েই বহাল থাকছে তাদের আস্তানা। সেখানে একাধারে খুচরা ও পাইকারিভাবে হরদম মাদক কেনাবেচা চলে। ইয়াবা, ফেন্সিডিল, গাঁজা, হেরোইন কী নেই সেখানে? আছে বাংলা মদেরও ছড়াছড়ি। প্রতিদিন কাওরানবাজার রেললাইন ও ঘেঁষা বস্তির আস্তানা থেকে কমবেশি ১০ লক্ষাধিক টাকার মাদক কেনাবেচা চলে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানী ঢাকা মহানগরীতে সহস্রাধিক মাদক কেনা বেচার স্পট রয়েছে। শুধু পুরুষ নয়, এখন মাদক বাণিজ্যে এগিয়ে আছেন নারীরাও। দাপুটে মাদক সম্রাজ্ঞীরাই চালাচ্ছেন রাজধানীর ৫ শতাধিক মাদক স্পট। তাদের নিয়ন্ত্রণে অন্তত দুই হাজার মহিলা এখন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছেন। পুরান ঢাকা মাদক ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে নিরাপদ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। লালবাগের আলোচিত মাদকসম্রাজ্ঞী মনোয়ারা আর ইসলামবাগের ছাফি’র মাদক সাম্রাজ্য বল্গাহীন। এ ছাড়া মুন্নি, টগর, তামান্না ও ময়ূরীর মাদক নেটওয়ার্কে কয়েকশ’ নারী-পুরুষ মাদক কেনাবেচার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। রাজধানীর প্রধান মাদক স্পটগুলোর মধ্যে আনন্দবাজার বস্তি অন্যতম। এখানে রয়েছে মাদক সম্রাজ্ঞী বানুর মাদক স্পট। এর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে নিমতলী বস্তির সাবিনা ও পারুলের। পাইন্যা সর্দারের বস্তির রেণু, গণকটুলীর মনোয়ারা, নাছিমা, শ্যামপুরের ফজিলা, রানী বেগম এবং পারুলী। শাহীনবাগের পারভীন, তেজকুনিপাড়ার সনি, হিরা, রাজেদা। হাজারীবাগের স্বপ্না, কলাবাগানের ফারহানা ইসলাম তুলি, চানখাঁরপুলের পারুল, বাড্ডার সুমি, রামপুরের সীমা, শাহজাহানপুরের মুক্তা ড্রাগ কুইন হিসেবে চিহ্নিত। মহাখালীর আলোচিত মাদকসম্রাজ্ঞী হলো জাকিয়া ওরফে ইভা ও রওশন আরা বানু। বনানীর শীর্ষ মাদকসম্রাজ্ঞী আইরিন। কড়াইল বস্তিতে প্রধান মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে চিহ্নিত রিনা, জোসনা, বিউটি। গুলশানের অতি পরিচিত মাদকসম্রাজ্ঞী মৌ, বারিধারার নাদিয়া, উত্তরার গুলবাহার ও মুক্তি। অন্যদিকে বারিধারা, গুলশান ও ডিওএইচএস-এর মতো অভিজাত এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা হলো-জ্যোৎস্না, জবা, লিপি, রূপা, তানিয়া, শোভা, জয়া, মলি, বিউটি, রিতা, ন্যান্সি-কুমকুম, মনি ওরফে হাসি। মাদকসম্রাজ্ঞী সাহিদা, মাহমুদা, নীলা, জরিনা, মিনা ও কুট্টি মিলেমিশে কাওরানবাজারে মাদকের আড়ত খুলে বসেছে। এদের সাথে পুলিশের সোর্স নামধারী চাঁদাবাজরাও জড়িত। স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশের সহযোগিতা নিয়েই এরা রমরমা মাদক বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহযোগিতা নিয়েও মাদক ব্যবসার বিস্তার ঘটছে। কিছু অসাধু পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতায় মহানগরীর শ্যামপুরের ফজিলা, রানী বেগম ও পারুলী, শাহীনবাগের পারভীন, তেজকুনিপাড়ার সনি, হিরা, নাছিমা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এদের মাদক বাণিজ্য বন্ধের সাধ্য যেন কারও নেই।

সূত্রাপুর এলাকায় মাদক ব্যবসা করছে আনসারী বেগম, রহিমা বেগম, কালামের বউ, আঙ্গুরী। সায়েদাবাদ ব্রিজ এলাকায় ফেনসিডিল ও হেরোইন বাণিজ্য চালায় শাহজাদী। বধূয়া কমিউনিটি সেন্টার, করাতিটোলা রিকশার গ্যারেজ, গোলাপবাগ পাম্পের পেছনে, ধলপুর নারিকেল বাগান, সেবাপট্টি, মাজারওয়ালার বাড়ির পাশে ও মানিকনগর স্পটে তাদের মাদক বিকিকিনি চলছে। সায়েদাবাদ সিটি পল্লী সবচেয়ে বড় হেরোইনের বাজার। এখানকার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে হোসনে আরা ও শাহনাজ। গোপীবাগের রমরমা গোবেনপুর মাদকস্পট নিয়ন্ত্রণ করছে দুই বোন আয়শা ও ম্যাগী। ডেমরা এলাকায় মাদক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছে কয়েকটি সিন্ডিকেট। এর মধ্যে অন্যতম হলো পারুল, খোদেজা, রাজিয়া, পারভীন, ফারজানা, মর্জিনা, রহিমা, সারুলিয়া এলাকার পুষ্প ও রুপা। তেজগাঁও এলাকার মাদকের গডমাদার হিসেবে চিহ্নিত মাকসুদা, মাহফুজা, সালমা, নাছিমা ও সখিনা। মিরপুর এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা হচ্ছে নাসিমা, হাওয়া খাতুন, শাহানুর, লালমাঠ বস্তির মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে বানু, মনি, মুন্নী, আমেনা ও মনু। পল্লবী এলাকায় মাদক ব্যবসা করছে ময়না, সালমা, রহিমা, হাছিনা ও হাজেরা।

এদিকে মাদকাসক্ত নিরাময়ের নামে একটি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। অথচ ওইসব কেন্দ্রের অধিকাংশের নেই বৈধ কোনো অনুমোদন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরঞ্জাম। এসব স্থান থেকে চিকিৎসাসেবা নিয়ে সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে পারছে না কেউ। সেবামূলক প্রতিষ্ঠান আখ্যায়িত করে কেউ কেউ সমাজসেবা অধিদফতর, ঢাকা সিটি করপোরেশন বা মানবাধিকার সংগঠনগুলো থেকে অনুমোদন নিয়েই প্রতারণার ফাঁদ পেতে বসেছে। এসব কেন্দ্রে অবাধে কেনা বেচা হচ্ছে মাদক।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান বলেন, মাদকের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। সেই সাথে চাহিদাও বাড়ছে। এটা নিয়ন্ত্রণে আনতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমাদের সীমান্ত এলাকায় আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, র‌্যাব পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িতদের প্রায়ই গ্রেফতার করছেন। তারপরেও এদের দমন করা যাচ্ছে না। ক্ষমতাধর ব্যক্তির মদদে অনেক স্থানে মাদক ব্যবসা চলছে। এ কারণে অনেক সময় মাদক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করা যায় না বলে দাবি করেন তিনি।

এদিকে মতিঝিলের ক্লাবগুলোতে জুয়ার পাশাপাশি এখন মাদকের আখড়া বসছে। সেগুনবাগিচায় ফরিদপুর ম্যানসনের উপরে এক নেতার মাদকের আসর চলছে। গুলশানে সি-সেল বারের ওপর মিনিবার চলছে অপর এক ছাত্র নেতার মাধ্যমে। মোহাম্মদপুরে ইয়াবার ডিলার জিপু গড়ে তুলেছেন ইয়াবার শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। কাঁঠালবাগানের বাসিন্দা সবুজের কাছে আসে ইয়াবার বড় বড় চালান। পল্লবীর গডফাদার বাচ্চু পুরো এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন। কেরানীগঞ্জের জিঞ্জিরার বাসিন্দা ও আনন্দবাজার বস্তি এলাকার কোটিপতি হোরোইন বিক্রেতা সৈয়দ আলীও নিজের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে স¤প্রতি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়েছেন। খিলগাঁও এলাকার একটি বড় অংশজুড়ে ইয়াবার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের এক নেতা।

এদিকে গত কয়েক মাস আগে রাজধানীতে মাদক ব্যবসা বন্ধে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ সদর দফতর (ডিএমপি)। মাদক স্পটগুলো উচ্ছেদ ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে বিশেষ অভিযান চালাতেও বলা হয়েছে। কিন্তু ডিএমপির এই নির্দেশনার কার্যত প্রতিফলন ঘটেনি। রাজধানীর মাদক স্পটে আগের মতোই দিন-রাত সমানতালে চলছে মাদক ব্যবসা। মাদক স্পটগুলো থেকে মোটা অঙ্কের মাসোয়ারা পাওয়ায় পুলিশ অভিযান চালাতে আগ্রহ দেখায় না বলে অভিযোগ আছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ সদর দফতরের এক তালিকায় দেখা যায়, ডিএমপির বিভাগ অনুযায়ী রমনায় ৫৩টি, লালবাগে ৫৭টি, ওয়ারীতে ৭৭টি, মিরপুরে ৫৬টি, গুলশানে ২৫টি, উত্তরায় ৪০টি, মতিঝিলে ২২টি, তেজগাঁওতে ২৫টি চিহ্নিত মাদক স্পট রয়েছে। তবে থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের মাদক স্পটের তালিকার মধ্যেও বিস্তর ব্যবধান রয়েছে। থানা পুলিশ অনেক স্পটের তথ্যই এড়িয়ে গেছে। অন্যদিকে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকা অনুযায়ী মাদক স্পটের সংখ্যা মাত্র ৫ শত। হালনাগাদ তালিকা অনুযায়ী রমনা জোনের রমনা মডেল থানা এলাকার মাদক স্পটগুলো হচ্ছেথ দিলু রোডের পশ্চিম মাথা, মগবাজার রেলক্রসিং-সংলগ্ন কাঁচাবাজার, আমবাগান চল্লিশঘর বস্তি, মধুবাগ ঝিলপাড়, মালিবাগ রেলক্রসিং থেকে মগবাজার রেলক্রসিং পর্যন্ত এলাকা। শাহবাগ থানা এলাকায় ফুলবাড়িয়া সেক্রেটারিয়েট রোডের আনন্দবাজার বস্তি, ওসমানী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বর, টিএসসি, তিন নেতার মাজার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আশপাশ এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, কাঁটাবন এলাকার ভাসমান বিক্রয় স্পট।

জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিমনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, মাদক বিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ প্রতিদিনই নগরীর কোন না কোন এলাকা থেকে মাদকসহ গ্রেফতার করছে মাদক ব্যবসায়ীদের। তিনি বলেন, অভিযান শুরু আগেই স্পট থেকে এরা পালিয়ে যায়। কারণ মোবাইলের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ীদের সোর্সরা আগেই খবর পৌঁছিয়ে দেয়।

https://www.dailyinqilab.com/article/68648