২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬, বৃহস্পতিবার, ২:৫৫

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা কোনভাবেই বৈধ হতে পারে না

গত ২১শে সেপ্টেম্বরে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টে “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিষিদ্ধ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা” ও দৈনিক সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টে “ছাত্রীসংস্থার জিহাদী কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ” শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্টের প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার সভানেত্রী ডা. শিরিন আক্তার আজ ২২ সেপ্টেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা দেশের ছাত্রীসমাজের নিকট আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক এবং নিয়মতান্ত্রিক বৈধ সংগঠন। ১৯৭৮ সাল থেকে শুরু করে আজ অবধি এই সংগঠনটি ইসলামের আলোকে ছাত্রীসমাজের চরিত্র গঠন, দেশপ্রেম সৃষ্টি ও নাগরিক মূল্যবোধ তৈরীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সুদীর্ঘ এই ৩৮ বছরে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা কোন অন্যায়, অনৈতিক, আইন-শৃংখলা বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিল না ও এখনো নেই। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা কোন ভাবেই বৈধ ও যৌক্তিক হতে পারে না।

শতকরা ৯০% ভাগ মুসলমানের এই দেশে ইসলাম প্রচারের কাজ, ইসলামী আদর্শ অনুসরণ করা কখনোই অবৈধ হতে পারে না। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচী কোনটাই এদেশের সংবিধান বা রাষ্ট্রীয় কোন নীতির বিরোধী নয়। এ সংস্থার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য হলো- এ দেশের ছাত্রীসমাজকে আল্লাহর কোরআন ও রাসূলের সুন্নাহ অনুযায়ী গঠন করে তাদেরকে আদর্শ মুসলিম নারী হিসেবে গড়ে তোলা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যাতে দুনিয়ায় শান্তি ও আখিরাতে মুক্তি হাসিল করা যায়। বর্তমানে অপসংস্কৃতি ও অনৈতিকতার যে সয়লাবে ছাত্রীসমাজ ভেসে যাচ্ছে, তা থেকে এ দেশের ছাত্রীদের উদ্ধার করে সঠিক ইসলামী মূল্যবোধ শিক্ষা দেয়াই এ সংগঠনের কর্মসূচী। সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক কোন লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচী না থাকায় এই সংস্থার কাজ নিষিদ্ধ করা সম্পূর্ণ বেআইনী ও অসংবিধানিক একটি সিদ্ধান্ত।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা শুরু থেকেই ছাত্রীদের মাঝে সুষ্ঠুভাবে ইসলামের চর্চা, প্রচার ও প্রসারের কাজ করে যাচ্ছে। এমন দায়িত্বশীল একটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা মানে ছাত্রীদেরকে প্রকৃত ইসলাম সম্পর্কে জানা ও চর্চার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা। এর ফলে সঠিক ইসলামী জ্ঞানচর্চার সুযোগ না পেয়ে ছাত্রীদের মধ্যে কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতির বিস্তার ঘটবে। সরকার জংগীবাদ বিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণের নামে সাধারণ ছাত্রীদের ইসলামের ব্যাপারে বিভ্রান্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই অবস্থা নি:সন্দেহে খুবই বিপদজনক।

জনগণ ও ছাত্রসমাজের কাছে এটিও স্পষ্ট যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারী দলের ছাত্র সংগঠনই সকল প্রকার হানাহানি, খুনাখুনি, চাঁদাবাজি, মাদক সরবরাহ, অবৈধ সিট দখল সহ সকল বে-আইনী কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ছাত্র সমাজের স্বার্থেই সরকারকে তার আপন ছাত্র সংগঠনের লাগাম টেনে ধরাই এখন সময়ের দাবী।

সরকার বিগত কয়েকবছর অমূলক অভিযোগের ভিত্তিতে পর্দানশীন ছাত্রীদের হয়রানি করে আসছে এবং দেশবাসী অবগত আছেন যে, ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী সরকার বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা’র উপর ধারাবাহিকভাবে জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন ও অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। সরকার সকল ইসলামী কার্যক্রমকে জংগীবাদ হিসেবে প্রচার করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার কোন ছাত্রীর নাশকতামূলক কোন কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা সরকার প্রমাণ করতে পারেনি।তারপরও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার কার্যক্রমকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিষিদ্ধ করা কোনভাবেই বৈধ হতে পারেনা। তাই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার ব্যাপারে সকল প্রকার অপপ্রচার এবং অন্যায়,অনৈতিক, ও বেআইনি উদ্যোগ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”