২৩ আগস্ট ২০১৭, বুধবার, ১:১০

জমলো না ‘জঙ্গি’ সাইফুল কেইস

ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী : গত ১৫ আগস্ট ‘জাতীয় শোক দিবসে’ ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের মাত্র ২০০ মিটারের মধ্যে এক ‘ভয়াবহ’ দুর্ঘটনার হাত থেকে দক্ষ পুলিশ বাহিনী আমাদের রক্ষা করেছে। সে জন্য পুলিশ বাহিনীকে আমরা সাবাসি জানাই। তাদের এই সাফল্য জাতি বহু দিন স্মরণ রাখবে। এ সংক্রান্ত খবরে বলা হয়েছে, জাতীয় শোক দিবসের সকালে রাজধানীর পান্থপথে আবাসিক হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালে পুলিশের অভিযানের সময় বিস্ফোরণে সন্দেহভাজন এক জঙ্গি সাইফুল ইসলাম নিহত হয়েছেন। তার বয়স ছিল ২১ বছর। জাতীয় শোক দিবসের র্যালিতে হামলার উদ্দেশ্যে ঐ ‘জঙ্গি’ ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে’র কাছের ঐ হোটেলে অবস্থান নিয়েছিলেন বলে পুলিশপ্রধান জানিয়েছেন। ১৫ আগস্ট সকাল সাড়ে সাতটায় শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যখন শ্রদ্ধা জানাচ্ছিলেন, তখন ঐ হোটেল ভবন ঘিরে অভিযান চালাচ্ছিলেন পুলিশ ও সোয়াট সদস্যরা। অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা জানান যে, নিহত সাইফুল নব্য জেএমবি’র সদস্য। অভিযানের সময় আত্মসমর্পণের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে ‘জঙ্গি’ সাইফুল ‘সুইসাইড ভেস্টে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মঘাতী’ হয়েছেন।

পুলিশ সাইফুল ইসলামকে আত্মঘাতী করার এই অভিযানের নাম দিয়েছিল ‘অপারেশন আগস্ট বাইট’। এসব অভিযানের জন্য পুলিশ বেশ সুন্দর সুন্দর নাম দেয়। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী নিহত যুবক সাইফুল ইসলামের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া থানার সাহস ইউনিয়নের নোয়াকাটি গ্রামে। পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সাইফুল মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর খুলনার বিএল কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। ঐ কলেজে তিনি চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। প্রশ্নের শুরু এখান থেকেই। সাইফুল যদি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে ১৯ বছর বয়সেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করে থাকেন, তবে অনার্স চতুর্থ বছরে গিয়ে তার বয়স হবার কথা কমপক্ষে ২৩। কিন্তু তার বয়সের কথা বলা হয়েছে ২১। হিসাব তো মিললো না।

পুলিশের কাছে এসব হামলার সহজ হিসাব আছে। হামলা হলেই কোনো রকম অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করেই তারা বলে দেন যে, এই হামলার সঙ্গে হয় জামায়াত-শিবির নয়তো নব্য জেএমবি জড়িত আছে। জামায়াত- শিবির হয়তো বোঝা গেল, কিন্তু নব্য জেএমবি বোঝা যায় না। সাধারণ মানুষের কাছে নব্য জেএমবি একটা গালির মতো মনে হয়। পত্রিকার রিপোর্টে বলা হলো, সাইফুলের বাবা আবুল খায়ের মোল্লা জামায়াতে ইসলামীর ইউনিয়ন শাখার কোষাধ্যক্ষ। কিন্তু তার বাড়ির চেহারা দেখলে সে রকম কিছু মনে হয় না। সাইফুল নিজেও ছাত্র শিবিরের কর্মীদের সঙ্গে চলাফেরা করতেন। সব শেষ গত শুক্রবার ১১ আগস্ট গ্রাম ছাড়েন তিনি। বলেছিলেন, সোমবার ১৪ আগস্ট বাড়ি ফিরবেন। তার আগে কোনো চাকরি-বাকরি না করার জন্য তার বাবা তাকে বকাঝকা করেন।

আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, কাউন্টার টেরোরিজমের গোয়েন্দাদের কাছে খবর ছিল, ৩২ নম্বরকে কেন্দ্র করে যেসব মিছিল আসবে, সেই মিছিলে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালাবে জঙ্গিরা। শত শত লোক মেরে ফেলার প্রস্তুতি ছিলো তাদের। এ খবরের প্রেক্ষিতে কাউন্টার টেরোরিজমের সদস্যরা পান্থপথ এলাকায় নজরদারি শুরু করেন। অবশেষে একজনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। শহীদুল জানান, পুলিশ ঐ জঙ্গিকে আত্মসমর্পণ করতে বললেও তিনি আত্মসমর্পণে রাজি হননি। বাধ্য হয়ে পুলিশ যখন অভিযান শুরু করে, তখনই তিনি বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। এত হোটেলের দরজা উড়ে যায়। আর একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর আগেই পুলিশ গুলি করে। সাইফুল এ সময় তার সঙ্গে থাকা সুইসাইড ভেস্টের বিস্ফোরণ ঘটান। তিনি বলেন, সাইফুল ছাত্র শিবির করতেন। ‘জামায়াত-শিবির না হলে জাতির জনকের মৃত্যুর দিন জাতীয় শোক দিবসে এমন পরিকল্পনা তিনি নিতে পারতেন না।’ এখানেও সমীকরণটা বেশি সহজ হয়ে গেলো। সৌভাগ্যবশত গুলশানের হলি আর্টিজান হোটেলে হামলার জন্য পুলিশ কোনো জামায়াত-শিবির কর্মীকে দায়ী করেনি।

পুলিশ সদর দফতরের কাউন্টার টেরোরিজমের ফোকাল পয়েন্ট মো. মনিরুজ্জামান জানান, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের পাঁচ-সাত কিলোমিটারের মধ্যে হামলা হতে পারে সন্দেহ করে কলাবাগান থানার পুলিশ এলাকার হোটেল ও মেসগুলোতে ব্লক রেইড করছিল। সোমবার (১৪ আগস্ট) দিবাগত রাতে তারা হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালের প্রতিটি ঘরে তল্লাশি করে। হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছিল, সোমবার রাত নয়টায় সাইফুল হোটেলে উঠেছিলেন। অথচ হোটেলে তো নতুন বোর্ডার তোলা নিষেধ ছিল। রাত দুইটার দিকে পুলিশ সাইফুল ইসলামের কক্ষে ধাক্কা দিলে তিনি দরজা খুলতে প্রথমে অস্বীকৃতি জানান। পরে দরজা খুলে বলেন, যা বলার সকালে বলবেন। এরপর পুলিশ তার কক্ষের বাইরে থেকে তালা মেরে দেয়। রাত সাড়ে তিনটার দিকে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। তারা সাইফুলকে বেরিয়ে আসার অনুরোধ করে। কিন্তু তিনি বের হননি। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে প্রধানমন্ত্রীর ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা পর্যন্ত কোনো রকম অভিযান না চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। প্রশ্ন এখানেও আছে। ততক্ষণে যদি বিপর্যয়কর কিছু ঘটে যেত!

এটা মোটামুটি নিশ্চিত যে, পুলিশের জঙ্গি সন্দেহের তালিকায় সাইফুল ইসলামই ছিলেন। কারণ ঐ রাতে হোটেল ওলিওতে আরও ১০-১২জন বোর্ডার ছিলেন। পুলিশ তাদের কাউকে সন্দেহ করেনি। তাদের সন্দেহ ছিল সাইফুলকে নিয়েই। সাইফুলকেই যদি সন্দেহ, তবে তিনি যখন দরজা খুলেছিলেন, পুলিশ তখনই তাকে আটক করে নিয়ে যেতে পারত। জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারত। বেরিয়ে আসতে পারত তার হামলা রহস্য। কিন্তু পুলিশ তা করেনি। বরং সারা রাত তাকে হোটেল কক্ষে থাকতে দিয়েছে। ‘সুইসাইড ভেস্ট’ বেঁধে তাকে আত্মহননের সুযোগ করে দিয়েছে। সাইফুল যখন দরজা খুলেছিলেন, তখনই তাকে ধরে ফেলতে পারলে তিনি ভেস্ট-টেস্ট পরার সুযোগই পেতেন না। কার্যত পুলিশ সাইফুলের কক্ষে তালা মেরে দেওয়ার আগে বা পরে কী ঘটেছিল, সে কথা এক পুলিশ ছাড়া আর কেউ জানে না। উপরন্তু পুলিশ হোটেলগুলোতে নির্দেশ জারি করেছিল যে, তারা যেন ঐ সময়ে হোটেলে নতুন কোনো বোর্ডার না তোলে। কিন্তু তারপরও সাইফুল কীভাবে ঐ হোটেলে উঠেছিল, সেটাও কম রহস্যজনক নয়। কারণ এ নিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষকে পুলিশ কোনো জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে খবর পাওয়া যায়নি।
ওলিও অনেক দিনের পুরানো মোটামুটি জীর্ণ রাস্তা বরাবর একটি সরু হোটেল। এই এলাকায় বেশ কয়েকটি উন্নত মানের হাসপাতাল রয়েছে। হোটেলও আছে অনেকগুলো। প্রধানত হাসপাতালের রোগীদের আত্মীয়-স্বজনরাই এসব হোটেলে আশ্রয় নেন। এই হোটেলটি পান্থপথের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। এর নিচে আছে দোকানপাট, বাস কাউন্টার, টায়ার-টিউবের দোকান। উল্টো পাশেও আছে রেস্তোরাঁ, শপিং মল, বাস কাউন্টার ও আবাসিক এলাকা। উত্তর পাশের একটি বাস কাউন্টারের একজন কর্মী জানান, সোমবার দিবাগত রাত দেড়টা-দুইটা থেকে এলাকায় পুলিশের আনাগোনা বেড়ে যায়। তাদের ধারণা ছিল, ১৫ আগস্ট উপলক্ষে পান্থপথ এলাকায় এমনিতেই জোরদার নিরাপত্তা থাকে। এটা তারই অংশ হতে পারে। এরপর রাত সাড়ে তিনটার পরে পান্থপথ এলাকায় আরও পুলিশ আনা হয়। তারা বাস কাউন্টারের কর্মীদের বের হতে নিষেধ করেন। অভিযানের সময় ঐ কর্মীরা কাউন্টারেই ছিলেন। ১৫ আগস্ট সরকারি ছুটি থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা ঘরেই ছিলেন। সকালে ঘর থেকে বের হয়ে তারা রাস্তায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ দেখে ভড়কে যান। অভিযানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেকে রাস্তায় ভিড় করে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৫ আগস্ট সকাল পৌনে দশটার দিকে পুলিশ হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালের দিকে গুলি ছোঁড়ে। মিনিট দুয়েকের মধ্যে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যায়। কিছুক্ষণ পর হোটেলের চারতলার দেওয়াল ধসে পড়ে। পুরো এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর মুহুর্মুহু গুলির শব্দ পাওয়া যায়। সকাল ১০টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের লোকেরা আহত এক ব্যক্তিকে পাঁজাকোলা করে স্কয়ার হাসপাতালের দিকে নিয়ে যায়। তিনি পথচারী বা কোনো ভবনের দারোয়ান হতে পারেন। মুহুর্মুহু গুলি শুরু হওয়ার আগেই সেখানে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মী এসে হাজির হন। পুলিশের একজন কর্মকর্তা তাদের ঠেলে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিলেন। বলছিলেন, এখনই বিস্ফোরণ ঘটবে সরে যান, সরে যান। আর তখনই বিস্ফোরণ ঘটলো। পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলছিলেন, বলেছিলাম না, এখনই বিস্ফোরণ ঘটবে। ঐ পুলিশ কর্মকর্তার চেনা একজন ফটোসাংবাদিক হাসতে হাসতে বললেন, আপনারা তাহলে আগে থেকেই জানতেন, কখন বিস্ফোরণ ঘটবে। পুলিশ কর্মকর্তা এর জবাব না দিয়ে সরে যান।

সকাল সোয়া দশটার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের গাড়ি ও পুলিশের মহাপরিদর্শক শহীদুল হক ঘটনাস্থলে আসেন। বেলা ১১টার দিকে পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ও অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন সাইফুল যে কক্ষে ছিলেন, সেই কক্ষে যান। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে ছানোয়ার বলেন, কক্ষটিতে একজন জঙ্গিই ছিলেন। তার কাছে বোমা ছিল। কক্ষে একটি চামড়ার ব্যাগ রয়েছে। সেখানেও বিস্ফোরক রয়েছে। বিস্ফোরকগুলি কী ধরনের তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। অভিযানের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেওয়ালের ভাঙা টুকরা, পুড়ে যাওয়া তোষক, বালিশ, লুঙ্গি, প্লাস্টিকের একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখা যায়। বেলা তিনটা পর্যন্ত বিধ্বস্ত হোটেলের বারান্দা থেকে পুড়ে যাওয়া এক জোড়া পা ঝুলে থাকতে দেখা যায়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে লাশটির ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়।

তবে সাম্প্রতিককালে জঙ্গিরা পুলিশের কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছে। তারা বহু সংখ্যক মানুষ বা পুলিশ বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করার জন্য কোনো রকম প্রচেষ্টাই চালায় না। তাদের কাছে গোলাবারুদ বিস্ফোরক সবই থাকে। এই যেমন ‘সাইফুলের কাছে যে বিস্ফোরক ছিল’ তা ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কারণ সে বিস্ফোরকে হোটেলের দেওয়াল, গ্রিল অনেক দূরে গিয়ে পড়েছে। সামনের বারান্দার দেওয়াল ভেঙে গেছে। ছাদের কার্নিশে ফাটল ধরেছে। সাইফুল নিজেও পুড়ে কালো হয়ে গেছে। কিন্তু না, এই ‘লক্ষ্মী’ জঙ্গি কারও কোনো ক্ষতি না করে নিজেকেই শেষ করে দিয়েছে। গত মাস ছয়েক ধরে কথিত জঙ্গিরা এই কাজই করছে। তারা একের পর এক ‘আত্মহত্যা’ করে যাচ্ছে। ফলে এই জঙ্গি কাহিনী এখন আর কেউ বিশ্বাস করতে পারছে না। আত্মহত্যাই যদি জঙ্গিদের লক্ষ্য হয়ে থাকে, তবে ডুমুরিয়া থেকে সাইফুলকে কেন ঢাকা আসতে হলো, তাও বোধগম্য নয়। আরও একটা বিষয় বোঝা গেল না। তা হলো, পুলিশের আইজিপি ঘটনার পরপরই বলে বসলেন যে, সাইফুল জামায়াত-শিবির না হয়েই যায় না। কিন্তু পরদিন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বললেন যে, সাইফুলের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ জন্য আরও তদন্ত প্রয়োজন। তবে তার সঙ্গে আরও সহযোগী ছিল। যদিও আজ পর্যন্ত তেমন কোনো সহযোগীর সন্ধান মেলেনি। রাজনৈতিক পরিচয় যদি নিশ্চিত হওয়া না গিয়ে থাকে, তাহলে আগেই কেনো তাকে শিবির বলে অভিহিত করা হলো? আর শিবির মানেই জঙ্গি এমন তো কোনো প্রমাণ নেই এবং শিবির কোনো নিষিদ্ধ সংগঠনও নয়।


সর্বশেষ তার বাড়ির হাল আমরা পত্রিকায় দেখেছি। সাইফুলের বাবা আবুল খায়ের মোল্লা নোয়াকাটি গ্রামের মাঠেরহাট মসজিদের ইমাম। সাইফুলের মা বাক-প্রতিবন্ধী। এক ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে সাইফুল বড়। সাইফুল বিএল কলেজে পড়ার জন্য সেখানে একটি মেসে থাকতেন। গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাড়ি এলেও সাইফুল কারও সঙ্গে খুব একটা মেলামেশা করতেন না। তার আচরণেও কেউ কোনো অস্বাভাবিকতা দেখেননি। সাইফুলের মৃত্যুর পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার বাবাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সাইফুলদের বাড়ির ছবি সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। একটা ভাঙ্গা জরাজীর্ণ টিনের ঘর। তাতে বেড়াও নেই। সামনে চালের বস্তা সেলাই করে কোনোমতে একটা আব্রু তৈরির ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়েছে। ভেতরে দুইটা চৌকি ফেলানো। সাইফুলের তো জঙ্গি হবার কথা নয়, এই সংসারকে টেনে তোলার কথা। কিন্তু তা আর হলো না।

http://www.dailysangram.com/post/297142