১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, শনিবার

মূল্যস্ফীতিতে নাভিশ্বাস

দীর্ঘদিন থেকে মূল্যস্ফীতির জাঁতাকলে মানুষের প্রকৃত আয় কমছেই। অনেকে ধারদেনা করে চলছে, খাচ্ছে কম। সাধারণত মজুরি বাড়ার হার মূল্যস্ফীতির কিছুটা বেশি থাকে। তবে প্রায় তিন বছর ধরে সেই চিরায়ত প্রবণতায় টান পড়েছে; উল্টো পথে হাঁটছে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই দুই সূচক। এতে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষ। বিবিএসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নভেম্বর মাসে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। বস্তুত গত এক বছর ধরেই ১০ শতাংশের ওপরে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার। মানুষ পরিমাণমতো পণ্য কিনতে ব্যর্থ হচ্ছে। জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে আপস করতে হচ্ছে। আপস করতে গিয়ে অতি প্রয়োজনীয়টা গ্রহণ করে অন্যটিকে ছাড় দিচ্ছে। ফলস্বরূপ পরিবারকে পুষ্টিহীনতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যা আগামীতে স্বাস্থ্যখাতে মানুষের ব্যয় বাড়িয়ে দেবে। মানুষের ভবিষ্যৎকে কিছুটা হলেও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেবে। বিশেষ করে নারী, শিশু ও শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব বেশি পড়বে। ছাত্র-জনতার বিপ্লবে স্বৈরাচার হাসিনার ভারতে পলায়নের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ছিল মূল্যস্ফীতি কমবে, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি আবার স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদও দায়িত্ব নিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে এখনো তার প্রতিফলন নেই। যদিও অর্থ উপদেষ্টা সম্প্রতি বলেছেন, আগের সরকারের ভুল নীতির কারণে মূল্যস্ফীতি কমছে না। অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে অন্তত এক বছর সময় লাগবে। এদিকে নীতি সুদহার বাড়ানোয় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যাংক ঋণের সুদহারও। এতে নতুন বিনিয়োগ নিয়ে উদ্বেগে ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, অতিরিক্ত সুদের চাপে কমতে পারে বিনিয়োগ, কমবে কর্মসংস্থানও। চলমান অস্থিরতায়, বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের বিক্রিতেও ধস নেমেছে। এমন পরিস্থিতিতে, সুদ হার বাড়ানো ঠিক হয়নি বলে মত অর্থনীতিবিদদের। মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি থেকে শিল্পে নতুন বিনিয়োগের ধারণা পাওয়া যায়। জুলাই-সেপ্টেম্বরে, গেল বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৫ শতাংশ কমে গেছে এই আমদানি। বিনিয়োগ কমার পেছনে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আর শ্রমিক অসন্তোষে উৎপাদন ব্যাহত হওয়াকে কারণ বলেছেন অনেক উদ্যেক্তা। এখন নীতি সুদহার বেড়ে ১০ শতাংশ হওয়ায়, আরো উদ্বেগে ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বাড়তি সুদের চাপে নতুন বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, উচ্চ সুদহারে কেউ বিনিয়োগে যাবে না; বরং বর্তমান যে বিনিয়োগ আমাদের আছে সেটিই এখন হুমকির মুখে পড়ে গেছে। সুদহার ক্রমাগত যেহেতু বেড়েই যাচ্ছে তখন সেটি মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে আসছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, শিল্প ঋণের ব্যয় প্রায় ১৭ শতাংশ বেড়েছে। বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ কমে গেলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও নতুন কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়বে। বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ইতোমধ্যে অনেকগুলো শিল্পপ্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপিতে পরিণত হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে, আরো বন্ধ হবে, বন্ধ হয়ে গেলে কর্মসংস্থান হারাবে। অনেকে বেকার হয়ে পড়বে।

সূত্র মতে, দেশে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে খাদ্যে যে মূল্যস্ফীতি ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ ছিল, তা গত নভেম্বরে হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির, যার বড় প্রভাবক ছিল আমিষ পণ্য, মসলা ও রান্নায় ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় পণ্য। পাশাপাশি চাল, গম ও সবজির দামে ঊর্ধ্বমুখিতারও ব্যাপক প্রভাব দেখা গেছে।

জিনিসপত্রের বাড়ন্ত দাম খেয়ে ফেলছে বাড়তি আয়ের টাকা। দেশে মূল্যস্ফীতি যে হারে বাড়ছে, মজুরি বাড়ছে তার তুলনায় অনেক কম হারে। এভাবেই মূল্যস্ফীতির বাড়তি চাপ মানুষের খরচ করার সামর্থ্য কমাচ্ছে। অর্থাৎ বাড়তি মজুরি পেয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে দেশে সার্বিক মূল্যম্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আর মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ; মজুরি বেড়েছিল ৬ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ।

এরপর থেকে মূল্যস্ফীতির তুলনায় মজুরি বৃদ্ধির হার কম হওয়ার তথ্য দিচ্ছে বিবিএস। সবশেষ নভেম্বর মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আর জাতীয় মজুরি হার ছিল ৮ দশমিক ১০ শতাংশ। এর মানে মূল্যস্ফীতি যে হারে বেড়েছে, মজুরি সেই হারে বাড়েনি। গ্রাম-শহর নির্বিশেষে ১৪৫টি নিম্ন দক্ষতার পেশার মজুরির ওপর হিসাব করে এই তথ্য দিয়েছে পরিসংখ্যান ব্যুরো।
বিষয়টি সহজভাবে ব্যাখ্যা করলে এমনভাবে বলা যায়, গত নভেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এর মানে হলোÑ ২০২৩ সালের নভেম্বরে চাল, ডাল, তেল, নুন, পোশাক-আশাক, বাসাভাড়া, যাতায়াত, শিক্ষা খরচসহ আপনার জীবনযাপনের খরচ চালাতে যদি ১০০ টাকা খরচ হতো, তাহলে এ বছরের নভেম্বরে একইভাবে জীবনযাপন করতে আপনার খরচ হয়েছে ১১১ টাকা ৩৮ পয়সা। খরচ বৃদ্ধির হার ১১ দশমিক ৩৮। এই বাড়তি খরচের ভার সামাল দিতে আয় কতটা বাড়ল। এ নিয়ে বিবিএস বলছে, জাতীয় মজুরি বেড়েছে এবং বৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ১০ শতাংশ। এর মানে দাঁড়ায়, ২০২৩ সালের নভেম্বরে যদি কারো আয় ১০০ টাকা হয়, তাহলে এ বছরের নভেম্বরে আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৮ টাকা ১০ পয়সা। সুতরাং আয় খানিকটা বাড়লেও তাকে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় একই পণ্য ও সেবার জন্য বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। ফলে খরচের ফর্দ কাটছাঁট করতে হচ্ছে। আয় বাড়লেও খরচ যখন তার তুলনায় বেশি বাড়ে, তখন আসলে প্রকৃত আয় কমে যায়। বাংলাদেশে এখন ঠিক তা-ই ঘটছে। দেশের ৮০ শতাংশের বেশি কর্মসংস্থান হয় অনানুষ্ঠানিক খাতে। এগুলোর প্রায় শতভাগই মজুরিভিত্তিক কর্মসংস্থান।

তবে শুধু গত নভেম্বরে নয়, তিন বছর ধরেই এ অবস্থা চলছে। মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার কম। বাংলাদেশে এর আগে কখনোই দীর্ঘ সময় ধরে এমন চিত্র দেখা যায়নি। এর আগে দেখা গেছে, এক-দুই মাসে মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরির হার বৃদ্ধি কম থাকলেও পরে আবার মজুরির হার বেড়ে গেছে।

এ বিষয়ে অর্থনীতির গবেষক সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, প্রথমত এ অস্থীর সময়ে মজুরি হার বৃদ্ধির কোনো কারণ আমি খুঁজে পাই না। সাধারণত যখন দেশে অর্থনীতি চাঙা থাকে, বিনিয়োগ বাড়ে, কর্মসংস্থান হয়, তখন শ্রমিকের চাহিদা বাড়ে, সরবরাহ কম থাকে, তখন মজুরি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এই অনিশ্চয়তার মধ্যে শ্রমিকের চাহিদা কমার কথা। অনানুষ্ঠানিক খাতে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। তাহলে মজুরি বাড়ল কোন ভিত্তিতে?

তারপরও বিবিএসের বর্তমান মূল্যস্ফীতি ও মজুরি সুচকের তথ্য নিয়েই যদি আমরা বিশ্লেষণ করি, তাহলেও কিন্তু আমরা উদ্বেগজনক একটি তথ্য দেখতে পাচ্ছি। আর সেটি হচ্ছে মূল্যস্ফীতি প্রকৃত মজুরির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে। অর্থাৎ বাস্তবে আয় বাড়লেও মূল্যস্ফীতি তা খেয়ে ফেলছে।

বাজারের খরচের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মজুরি বাড়ছে না। দীর্ঘ সময় ধরে মজুরি বৃদ্ধির হারের চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি। গরিব মানুষ এক বছর আগে ১০০ টাকা দিয়ে যে পণ্য কিনতে পারত, এখন তার ৬০ শতাংশ পণ্যও কিনতে পারে না। মানুষের প্রকৃত আয় ভয়ানকভাবে কমে যাচ্ছে। খরচ করার সামর্থ্য কমছে। অনেকে সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। অনেকের তো সঞ্চয়ও নেই। বিবিএস একটি গড় জাতীয় মূল্যস্ফীতির হিসাব দেয়। কিন্তু প্রকৃত অর্থে গরিব মানুষের ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ আরো বেশি বলে উল্লেখ করেন সেলিম রায়হান।

পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রতি মাসে মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি কৃষিশ্রমিক, পরিবহনকর্মী, বিড়িশ্রমিক, জেলে, দিনমজুর, নির্মাণশ্রমিকসহ ৪৪ ধরনের পেশাজীবীর মজুরির তথ্য সংগ্রহ করে মজুরি হার সুচক তৈরি করে। এসব পেশাজীবীর মজুরি খুব কম এবং দক্ষতাও কম। শুধু দৈনিক ভিত্তিতে মজুরি পান তার ভিত্তিতে কোন মাসে মজুরি হার কত বাড়ল, তা প্রকাশ করে বিবিএস।
পরিসংখ্যান ব্যুরো যে ৪৪ ধরনের পেশাজীবীর মজুরির তথ্য নেয়, তার মধ্যে ২২টি শিল্প খাতের এবং ১১টি করে কৃষি ও সেবা খাতের

পেশা। বেতনভোগী কিংবা উচ্চ আয়ের পেশাজীবীদের বিবিএসের মজুরি সুচকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না।
ব্যুরোর ২০১৬-১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের কর্মসংস্থানের বড় অংশই হচ্ছে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। মোট শ্রমশক্তির ৮৫ দশমিক ১ শতাংশই এ খাতে নিয়োজিত। আর ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। অন্যদিকে কৃষিক্ষেত্রে নিয়োজিত মোট শ্রমশক্তির ৯৫ দশমিক ৪ শতাংশই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত। শিল্প খাতের ৮৯ দশমিক ৯ শতাংশ, সেবা খাতের ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ শ্রমিক অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত।

মিলছে না মজুরি বৃদ্ধির সুফল
সাধারণত প্রতি মাসে যত মূল্যস্ফীতি হয়, এর বেশি হারে জাতীয় মজুরি বৃদ্ধি হয়। কিন্তু প্রায় তিন বছর ধরে এর বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মজুরি বৃদ্ধির হারকে টপকে যায় মূল্যস্ফীতি। বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, ওই মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ। আর মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ।

এরপর আর কোনো মাসেই মূল্যস্ফীতিকে ছাপিয়ে যেতে পারেনি মজুরি। তবে এ সময়ে মজুরি ও মূল্যস্ফীতি দুটিই বেড়েছে। তবে মূল্যস্ফীতির গতি বেশি। রূপক অর্থে বলা যায়, মজুরি হার বেড়েছে টেস্ট ব্যাটসম্যানের মতো। এ ক্ষেত্রে রান, অর্থাৎ আয় বেড়েছে ধীরে ধীরে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতির গতি ছিল টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যানের মতো। দ্রুতগতিতে চার-ছক্কা উঠেছে।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে মজুরি বৃদ্ধি ৭ শতাংশের ঘর ছোঁয়। অন্যদিকে মার্চের পর থেকে ওই বছরের ৯ মাসে মূল্যস্ফীতি ৭ থেকে ৮ শতাংশের ঘর পেরিয়ে সাড়ে ৯ শতাংশের ওপরে উঠে যায়। বিবিএসের প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতির হার এখন ১১ দশমিক ৩৮।

গড় মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ২২ শতাংশ
৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ গড় মূল্যস্ফীতি নিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষ করেছে বাংলাদেশ। নভেম্বর শেষে (২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর) গড় মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ২২ শতাংশ। এত দীর্ঘ সময় ধরে মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার কম থাকা বিশাল একটি জনগোষ্ঠীর প্রকৃত আয় কমে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, আয় কমে যাওয়ায় গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষ খাবার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে খরচ কাটছাঁট করছে। ফলে নারী, শিশু, তরুণ প্রজন্ম এবং শিক্ষার্থীদের পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তারা শিক্ষায় পিছিয়ে যেতে পারে। এতে সার্বিক অর্থনীতির উৎপাদনশীলতা কমার শঙ্কা আছে। অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম ইনকিলাবকে বলেন, মূল্যস্ফীতির প্রভাব নারী ও শিশুদের ওপর বেশি পড়াটাই স্বাভাবিক। আমরা সবাই জানি, আমাদের সমাজে বেশির ভাগ নারীই অভাবের সময় নিজের খাবারটাও পরিবারের জন্য রেখে দেন। এটি আমাদের কাছে স্বাভাবিক চিত্র। তবে যদি দীর্ঘদিন এটি চলতে থাকে অস্বাভাবিক পর্যায়ে চলে যাবে।

https://dailyinqilab.com/national/article/711657