২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার

এখনো সিন্ডিকেটের কবলে নিত্যপণ্যের বাজার ॥ আলু সবজির মূল্য চড়া

রাজধানীর বাজারে শাক-সবজির দাম স্বাভাবিক থাকলেও আলু ও আদা-রসুনের দাম চড়া। গতকাল শুক্রবার তোলা ছবি -সংগ্রাম
স্টাফ রিপোর্টার: ফ্যাসিবাদ সরকারের পতনের সাড়ে তিন মাস অতিবাহিত হলেও এখনো জিনিসপত্রের দাম কমছে না। অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কবলে নিত্যপণ্যের বাজার। বৃদ্ধি পাওয়া চাল, ডাল, তেলসহ অতিপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম এখনো কমেনি। অল্প আয়ের মানুষগুলোর ত্রাহি অবস্থা। সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা কাজে আসছে না। একেক সময় একেকটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। কয়েকদিন আগে ডিমের আকাশচুম্বী দাম বাড়িয়ে অস্বাভাবিক মুনাফা হাতিয়ে নেয় ব্যবসায়ীরা। এরপর বাড়তে শুরু করে পেয়াঁজের দাম। এখন পেয়াঁজের দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। কিন্তু বাড়ছে আলু ও সবজির দাম। প্রায় সব ধরনের সবজির দামই বাড়তি। শীতের শুরুতে বাজারে সবজিতে ভরপুর তবু দাম চড়া।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, পেয়াঁজের দাম কমতে শুরু করেছে। কিছু কিছু দোকানে ১০০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে ভারতীয় পেঁয়াজ। যদিও ক্রস ও দেশি পেঁয়াজ এখনও বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার ওপরে। সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমলেও বেড়েছে আলুর দাম। বাজারে সাধারণত লাল, সাদা ও বগুড়ার আলুই পাওয়া যায়। এই তিন ধরনের আলুর দামই বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে। এছাড়া বেশকিছু সবজির দামও বেড়েছে।

বাজারে দেখা যায়, আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়। এরমধ্যে ছোট পেঁয়াজ ১২০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা করে। এছাড়া লাল আলু ৮০ টাকা, সাদা আলু ৮০ টাকা, বগুড়ার আলু ৯০ টাকা, আর নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, দেশি রসুন ২৬০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, চায়না আদা ২৪০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল সবজি বাজারে দেখা গেছে, আমদানী করা টমেটো ১৫০-১৬০ টাকা, টক টমেটো ১৬০-১৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৮০ টাকা, চায়না গাজর ১৬০ টাকা, শিম ১২০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০-৭০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০-১০০ টাকা, কালো গোল বেগুন ১০০-১১০ টাকা, শসা ৭০-১২০ টাকা, উচ্ছে ১০০ টাকা, করল্লা ১০০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, মূলা ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০-১০০ টাকা, পটল ৬০-১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ধুন্দল ১০০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৯০-১২০ টাকা, চাল কুমড়া ৮০ টাকা, ফুলকপি ৭০ টাকা, বাঁধাকপি ৭০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা করে।

গোশতের বাজারে দেখা গেছে, বাজারে গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। খাসির গোশত বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে। ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৮০-২০৩ টাকা, কক মুরগি ২৮৫-২৯৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১৪৪ থেকে ১৫০ টাকা, সাদা ডিম ১৪০-১৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে দেখা গেছে, আকার ও ওজন অনুযায়ী ইলিশ মাছ ১০০০-১৮০০ টাকা, রুই মাছ ৪০০-৫৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩৮০-৫০০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০-৫৫০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১৪০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪০০ টাকা, কৈ মাছ ২০০-৬০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৮০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা ৬০০-১২০০ টাকা, বেলে মাছ ১০০০-১২০০ টাকা, বোয়াল ৯০০-১১০০ টাকা, কাজলী মাছ ১০০০-১৩০০ টাকা, শোল ৯০০-১১০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০-৭০০ টাকা, চিতল ৬০০ টাকা, সরপুঁটি ২৫০-৪০০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকানের পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে খোলা সয়াবিন ও খোলা সরিষার তেলের দাম বেড়েছে। ছোট মুসরের ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মুসরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেশারি ডাল ১১০ টাকা, বুটের ডাল ১৪৫ টাকা, মাশকালাইয়ের ডাল ১৯০ টাকা, ডাবলি ৭৫ টাকা, ছোলা ১৩০ টাকা, প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫০ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ১১০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৩০ টাকা, খোলা চিনি ১২৬ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

https://dailysangram.info/post/573756