২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, রবিবার, ১২:২৮

কালো টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে নিষিদ্ধ বিটকয়েনে

২০১৬ সালে মার্কিন বাংলাদেশ ব্যাংকের রক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া ৮১০ কোটি ডলার ফিলিপাইনে যায়। সেখানকার রিজাল ব্যাংক থেকে তা চলে যায় ক্যাসিনোতে। সেখান থেকে বিটকয়েনের মাধ্যমে তা বিভিন্ন দেশে পাচার হয়ে যায়। ফিলিপাইনের বিভিন্ন ক্যাসিনোতে বিটকয়েনসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মুদ্রা ও কয়েন অবাধে লেনদেন হয়। এক দেশের ক্যাসিনোর সঙ্গে অন্য দেশের ক্যাসিনোর একটি যোগসূত্র থাকে। যে কারণে এসব ডিজিটাল মুদ্রা বা কয়েন অবাধে এক দেশ থেকে অন্য দেশে অনলাইনে স্থানান্তর করা যায়। দেশে বিটকয়েন কেনাবেচাকে ঘিরে সক্রিয় একাধিক চক্র। এসব চক্র অবৈধ এই বিট কয়েন কেনাবেচা করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এর মাধ্যমে যেমন টাকা পাচার হচ্ছে, তেমনি চোরাচালানের দেনা শোধ করা হচ্ছে। এভাবে ক্রিপ্টো কারেন্সি বিটকয়েনের মাধ্যমে দেশ থেকে পাচার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। বিদেশে অর্থ পাচারের জন্য এক শ্রেণির কালো টাকার মালিকরা বিটকয়েনকে বেছে নিয়েছেন।

জানা গেছে, বিট কয়েনের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই, নেই লেনদেনের কোনো গ্যারান্টি, নিয়ন্ত্রণের জন্য নেই কোনো কর্তৃপক্ষ, মুদ্রা খোয়া গেলে বা দরপতন ঘটলে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এরপরও ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েনের চাহিদা এখন তুঙ্গে। হু-হু করে বাড়ছে বিটকয়েনের দাম। ২০০৯ সালে মুদ্রাটির যাত্রার শুরুতে প্রতি বিটকয়েনের দাম ছিল এক ডলার বা ৭৯ টাকার নিচে। এখন তা বেড়ে ৫৭ হাজার ৩৫২ ডলার বা ৪৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। শুধু এর দাম বেড়েছে তা নয়, ওঠানামাও করেছে ব্যাপক হারে। তবে দাম কমার চেয়ে বেড়েছে বহুগুণ বেশি। যে কারণে বিটকয়েনে বড় ঝুঁকি নিয়ে যারা বিনিয়োগ করেছেন তাদের অনেকে রাতারাতি ধনীও হয়েছেন।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশে বিটকয়েন কেনাবেচা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তারপরও থেমে নেই এর লেনদেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এর ব্যবসা বে আইনিভাবে বাংলাদেশেও প্রসারিত হচ্ছে। আবার প্রতারণার ঘটনাও ঘটছে। বিদেশে কেনা পণ্যের দাম যেমন বিটকয়েনের মাধ্যমে পরিশোধ করা হচ্ছে, তেমনি এতে বিনিয়োগ করাও হচ্ছে। আবার আন্তর্জাতিক লেনদেনেও এর ব্যবহার বাড়ছে। তবে বাংলাদেশে বিটকয়েন ব্যবহার অবৈধ হওয়ায় ঠিক কতো জন বিটকয়েন কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন, সে সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক কোন তথ্য পাওয়া যায় না।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে বিটকয়েন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারপরও যদি কেউ এর লেনদেনের সঙ্গে জড়িত থাকেন এবং সেটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরে আসে সে ক্ষেত্রে অবৈধ মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নজর রাখছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশে বিটকয়েনের লেনদেন শুরু হয় ২০১২ সালের দিকে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরে এলে কিছু তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে। এর ভিত্তিতে ২০১৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্য কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনবহির্ভূত এসব লেনদেন বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৪৭ এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ১০১২-এর আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে। এরপর ২০১৬ সালে ঘটে রিজার্ভ চুরির ঘটনা। এ ঘটনার পর ২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আরও একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে বাংলাদেশে বিটকয়েন নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে এর কোনো লেনদেন করা যাবে না বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে বিটকয়েনের মাধ্যমে অর্থ পাচারের দিকে ঝুঁকছে অসাধু ব্যক্তিরা। অবৈধভাবে আয়কৃত অর্থ নিরাপদে বিদেশে পাচার করার জন্য বিটকয়েন কেনাবেচার সিন্ডিকেটও গড়ে উঠেছে। দেশ থেকে অনেকেই বিটকয়েন কিনে ইউরোপের অনেক দেশে ভার্চুয়াল এই কয়েন অর্থে রূপান্তরিত করছে। কেউ কেউ কালো টাকা সাদা করার জন্য বিটকয়েন কেনার পর বিদেশে তা ভাঙিয়ে স্বজনদের মাধ্যমে দেশে বৈধ অর্থ হিসেবে দেশে আনছে। বিটকয়েন কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের সদস্যরা নির্দিষ্ট পরিমাণের কমিশনের বিনিময়ে অবৈধ অর্থ উপার্জনকারীদের অর্থ পাচার ও কালো টাকা সাদা করতে সহায়তা করে থাকে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে অবৈধভাবে বিটকয়েন কেনাবেচা বেড়েছে। তারা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি গ্রুপকে সনাক্ত করেছেন। গত শুক্রবার রাজধানী ঢাকা থেকে মাহমুদুর রহমান জুয়েল নামে বিটকয়েন চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। সম্প্রতি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (তেজগাঁও বিভাগ) গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, বিটকয়েন বাংলাদেশে অবৈধ। কিন্তু অনলাইনে বিটকয়েনে কেনাবেচার মাধ্যমে দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে। আমরা এরকম বেশ কয়েকটি গ্রুপকে শনাক্ত করেছি। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, গ্রেফতার হওয়া জুয়েলের এক স্বজন ফ্রান্সে থাকেন। তার মাধ্যমে জুয়েল ৭ হাজার ডলার দিয়ে এক বিটকয়েন কিনেছিল। সম্প্রতি সে বিটকয়েনটি ২১ হাজার ডলারে বিক্রি করে। যদিও সম্প্রতি এক বিটকয়েনের মূল্য ৫৮ হাজার ডলার পর্যন্ত উঠেছিল। বর্তমানে তা আবার কমেও এসেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল স্বীকার করেছে, মালয়েশিয়া থাকার সময় সে বিটকয়েন বেচাকেনায় জড়িত হয়। ২০১৬ সালে দেশে ফিরে এসে সে একই ব্যবসা করে আসছিল।

গত ১৩ জানুয়ারি গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানাধীন সফিপুর দক্ষিণপাড়া থেকে রায়হান নামে এক বিটকয়েন প্রতারককে গ্রেফতার করেছিল র‌্যাব-১। গ্রেফতারের পর রায়হানের অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে এক মাসে ৩৫ হাজার ডলার লেনদেনের তথ্য পায়। বিটকয়েন চক্রের মাস্টারমাইন্ড রায়হান প্রতারণা করার পাশাপাশি অর্থ পাচারের সঙ্গেও জড়িত ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, বিটকয়েন কেনাবেচা শেয়ার বাজারের মতো। বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে এই কেনাবেচায় অংশগ্রহণ করা যায়। সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় অর্থ স্থানান্তরের মাধ্যমে বিটকয়েন কেনাবেচা করতে পারেন। অধিক লাভের প্রলোভনে বিটকয়েন কেনার পর অনেকেই ফতুরও হয়ে গেছেন।
গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা জানিয়েছেন, অর্থপাচারের নতুন মাধ্যম হচ্ছে বিট কয়েন। এছাড়া যেকোনো ধরনের কালো টাকা এক দেশ থেকে অন্যদেশে স্থানান্তরের বা অবৈধ মাদক ব্যবসা, অস্ত্র, অবৈধ যন্ত্রপাতি কেনা-বেচার ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরে দেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে বিপুল অঙ্কের টাকা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) বিট কয়েনের সঙ্গে জড়িত কয়েকটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে। এসব চক্রের ১০ জন সদস্যকে বিগত কিছুদিনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে মাস্টারমাইন্ডরা রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর এই হোতারা দিয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাদের মতে, দেশের অন্তত শতাধিক ব্যবসায়ী এই বিট কয়েনের সঙ্গে জড়িত।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিট কয়েনে লোকসানের কোনো রেকর্ড থাকে না। এটি নিয়ে বিভিন্ন ফেরামে আলোচনা চলছে। জি-২০ এর সম্মেলনেও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করে বিদেশে যে অর্থ পাচার করা হচ্ছে তার বেশিরভাগই কালো টাকা। দেশের অন্তত শতাধিক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এরসঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তাদের একটি তালিকা নিয়ে কাজ করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশে বিটকয়েনের কোন অনুমোদন নেই। যেহেতু অনুমোদন নেই, সুতরাং এই জাতীয় লেনদেন বৈধ নয়। যদি আমাদের নোটিশে এই জাতীয় লেনদেনের খবর আসে, তাহলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। এ ধরনের লেনদেনের মাধ্যমে আর্থিক এবং আইনগত ঝুঁকি রয়েছে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অর্থনীতিবিদ নাজনীন আহমেদ জানান, ‘ক্রিপ্টোকারেন্সির’ ভেতরে বেশ জটিল কিছু বিষয় রয়েছে। যেমন এটার ব্যবসা এখন যেভাবে হচ্ছে, কেউ কিনে রেখে দিচ্ছেন, দাম বাড়লে আবার বিক্রি করছেন। কিন্তু আমাদের দেশে পুঁজিবাজারে যেমনটা হয়েছে, ভালোভাবে না বোঝার কারণে এখানেও কিন্তু প্রতারণার একটা সুযোগ রয়েছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের জ্যেষ্ঠ গবেষক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলছেন, বাংলাদেশ এখনো এটার জন্য প্রস্তুত নয়। কারণ আমাদের মূল ধারার মুদ্রা ব্যবস্থাপনার বাইরে এটা হচ্ছে। শুধু জাতীয় নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও এটার ব্যবস্থাপনার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক যে নীতি দরকার, সেটার অভাব রয়েছে। এটার ভেতর এখনো অনেক ধরণের ফটকাবাজি চলছে। এটা নিয়ে আসলে কোন ধরণের প্রাতিষ্ঠানিক, আইনি প্রস্তুতি নেই, তথ্যের অস্বচ্ছতাও আছে।

সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে কোনো এক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এই মুদ্রার প্রচলন করেন। ওই ব্যক্তির বা প্রতিষ্ঠানের এখন পর্যন্ত কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। কিন্তু মুদ্রার লেনদেন হচ্ছে। এবং বাজারে ক্রমেই এটি শক্তিশালী হয়ে উঠছে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রায় আড়াই কোটির বেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য কিনে বিটকয়েন দিয়ে মূল্য পরিশোধ করা যায়। এছাড়া হুন্ডি, মুদ্রা পাচার, চোরাচালানের দেনা পরিশোধ, জুয়ার আসরে বিটকয়েন ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশ, কানাডা, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়াসহ কমপক্ষে ৬৫টি দেশে বিটকয়েনের ব্যবসা চলছে। ভারতেও এর ব্যবসার পরিধি বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ অনেক দেশে এ মুদ্রার মাধ্যমে যাতে কোনো প্রতারণার ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষ সতর্ক রয়েছে। চীনও তাদের দেশে ব্যক্তিগত কারেন্সি হিসাবে বিকল্প ভার্চুয়াল মুদ্রা বাজারে ছেড়েছে। বিটকয়েনের সঙ্গে পাল্লা দিতে অনেক দেশ ডিজিটাল মুদ্রার প্রচলন করেছে। এর মধ্যে চীন বেশি এগিয়েছে। তারা ডিজিটাল মুদ্রায় দেশের ভেতরে লেনদেন করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও লেনদেন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তবে বিশ্বের অনেক দেশেই এখন বিটকয়েনের আইনি স্বীকৃতি থাকলেও বাংলাদেশ, মিসর, আলজেরিয়া, মরক্কো, নেপাল, ইকুইয়েডর, বলিভিয়া প্রভৃতি দেশে বিটকয়েন এখনো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

তথ্য বলছে, ২০০৯ সাল থেকে বিটকয়েন লেনদেন শুরুর পর এর দামে ব্যাপক ওঠানামা করেছে। তবে গড়ে এর দাম বেড়ে আকাশচুম্বী হয়েছে। ২০১৩ সালে প্রতিটি বিটকয়েনের দাম ছিল ৯৯ ডলার, ২০১৪ সালে তা বেড়ে ৯৫১ ডলারে দাঁড়ায়। ২০১৫ সালে এর দাম কমে ২৫০ ডলারে নেমে যায়। ওই বছরে কয়েকজন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকাররা কয়েন চুরি করলে এর দরপতন ঘটে। এরপর ২০১৬ সাল থেকে এর দাম আবার বাড়তে থাকে। ওই বছরে প্রতিটির দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৪০২ ডলার। ২০১৭ সালে আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৯১৮ ডলারে। ২০১৮ সালে এর দাম লাফিয়ে বেড়ে ১০ হাজার ৭৬০ ডলারে দাঁড়ায়। ২০১৯ সালে আবার বড় ধরনের দরপতনের মুখে পড়ে মুদ্রাটি। ওই বছরে এক লাফে কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৫৩৬ ডলারে। ২০২০ সালে আবার বেড়ে ওঠে ৮ হাজার ৯০০ ডলারে। চলতি বছরের শুরুতে এর দাম আবার আকাশচুম্বী হয়। এ বছরের শুরুতে দাম বেড়ে ৩৩ হাজার ডলারে দাঁড়ায়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি তা আরও বেড়ে ৪৭ হাজার ৮৩২ ডলারে ওঠে। ২০ ফেব্রুয়ারি এর দাম আরও এক ধাপ বেড়ে ৫৭ হাজার ৩৫২ ডলারে ওঠে।

এ বিষয়ে সরকারের ই-গভর্মেন্ট কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমের (সার্ট) প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ জানান, বিটকয়েন বাংলাদেশে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যে কারণে দেশে থেকে এটি লেনদেন করা যায় না। তবে বিদেশে যাদের অ্যাকাউন্ট আছে বা আত্মীয়স্বজন রয়েছে তাদের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই মুদ্রা কেনাবেচা করছে। যেহেতু অনেক দেশে এটি লেনদেন করতে কোনো বাধা নেই, সে কারণে বিদেশের অ্যাকাউন্টে লেনদেন করলে কিছু করার থাকে না। তবে যেহেতু মুদ্রাটির কোনো বৈধ কর্তৃপক্ষ নেই। সে কারণেই সরকার এটি নিষিদ্ধ করেছে। ফলে আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এর লেনদেন থেকে বিরত থাকবেন।

https://dailysangram.com/post/445179