১২ অক্টোবর ২০২০, সোমবার, ১১:২২

যানজটে নগরবাসীর ভোগান্তি চরমে

সিগন্যালে চতুর্মুখী যানজট যাত্রী ও পথচারীদের বিড়ম্বনা ট্রাফিক সদস্যরা অসহায়

গুমোট গরম তার সঙ্গে যুক্ত হলো তীব্র যানজট। এই যানজটে নগরবাসীকে আবারও নাকাল হতে হয়েছে। গতকাল অফিসমুখী কিংবা ঘরমুখী সব সময়েই যাত্রীদের পড়তে হয়েছে মহাভোগান্তিতে। দুর্বিষহ যানজটে স্থবির হয়ে পড়ে রাজধানীর জনজীবন। সকাল থেকে ঢাকার প্রায় সব রাস্তায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। মতিঝিল, পল্টন, প্রেসক্লাব, বাংলা মটর, কাওরান বাজার, ফার্মগেট, মিরপুর রোড, এয়ারপোর্ট রোড, সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়িসহ রাজধানীর প্রায় সব সড়কে ছিল তীব্র যানজট। এসব রাস্তায় যাত্রীরা ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়িতে বসে অসহ্য গরমে কষ্ট ভোগ করেছেন।

দেশে অব্যাহত ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে গতকালও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে। এর ফলে রাজধানীতে ভয়াবহ যাজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেক ভুক্তভোগী মনে করেন। গতকাল সকাল থেকে উত্তরার বিএনএস সেন্টারের সামনে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। এতে উত্তরা থেকে এয়ারপোর্ট রোডে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ যানজট একদিকে বনানী থেকে মহাখালি তেজগাঁও, সাতরাস্তা, মগবাজর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। অন্য দিকে টঙ্গি ছাড়িয়ে গাজীপুর এবং ওইদিকে সভার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে ১১টার পরে মতিঝিল আইডিয়ালের শিক্ষার্থীরা শাপলা চত্বরের রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করে। এর ফলে মতিঝিল, টিকাটুলি, সায়দাবাদ-যাত্রাবাড়ি এবং অন্যদিকে দৈনিক বাংলা, গুলিস্তান, পল্টন, প্রেসক্লাব ওইসব এলাকায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বিজয় সরণি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সড়কে যানবাহনগুলোকে প্রায় স্থবির অবস্থা ছিল। ফার্ম গেট থেকেমতিঝিল আসতে প্রায় দুই ঘন্টা সময় লেছে। তীব্র যানজটে অবস্থা নাজুক দেখে অনেকে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পল্টন মোড় থেকে আশপাশের প্রতিটি সড়কে ছিল যানজটের ভয়াবহ চিত্র। সাতরাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত সড়কে যানবাহনগুলো চলেছে ধীরে ধীরে। সিগন্যালগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খেতে হয়। অনেক সিগন্যালে চতুর্মুখী যানজট লেগে যাওয়ায় ট্রাফিক সদস্যদের অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায়।

পল্টন এলাকায় দেখা গেছে বিপুলসংখ্যক মানুষ যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছেন। তবে যেসব গণপরিবহন সেখানে পৌঁছায়, তার সবই যাত্রীতে ঠাসা। আর গাড়িগুলো যেন এগোচ্ছিলই না। এর মধ্য দিয়েই অনেকে বাসে ওঠেন। তবে নারীদের পড়তে হয় ভয়াবহ বিড়ম্বনায়।

মৎসভবনের সামনে যানজটে আটকা সিএনজি চালক ইদ্রিসআলী জানান, বনানী থেকে যাত্রী নিয়ে দেড় ঘন্টা আগে সচিবালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন, এখনো পৌঁছাতে পারেননি। যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে আরও আধি ঘন্টা সময় লাগবে। এ অবস্থা থাকলে সারাদিনে জমার টাকাই উঠাতে পারবো না। করোনার কারণে এমনিতে যাত্রী আগের তুলনায় কম। এরমধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে পরে থাকলে গাড়ীর জমাই উঠবে না। সংসারের লোকজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।

https://www.dailyinqilab.com/article/328212