১২ অক্টোবর ২০২০, সোমবার, ১১:১৭

পরীক্ষা ও চাকরির বয়স

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ লাখ শিক্ষার্থী অনিশ্চয়তায়

করোনার কারণে আটকে আছে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের (জাবি) বিভিন্ন পর্যায়ের পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের চাকরির বয়সসীমাও পেরিয়ে যাচ্ছে। ফলে পরীক্ষা ও চাকরির বয়স নিয়ে অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন জাবির প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থী। শুধু শিক্ষার্থীরা নয় উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তাদের অভিভাবকরাও। বর্তমানে জাবির অধীনে বিভিন্ন বিভাগ ও কোর্সে ২৯ লাখ ১০ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। করোনার এই সময়ে পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি ও বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের চাকরির বয়স নিয়েও শঙ্কিত। এ কারণে বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতিতে শিক্ষাজীবন এগিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারীজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা কোনো ধরনের লেখাপড়া করতে পারছেন না। সময় কাটছে বিভিন্নভাবে। যারা পরীক্ষার প্রস্তুতি শেষ করেছেন তারাও পরীক্ষা দিতে পারছেন না। ফলে অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। এ দিকে বয়সও পেরিয়ে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে তারা চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এ জন্য বিকল্প মূল্যায়নের মাধ্যমে পরবর্তী স্তরে উত্তীর্ণ করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

জাবি সূত্র জানায়, এখানকার চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা গত মার্চেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চলতি বছরের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। বেশির ভাগ বিষয়ের পরীক্ষা শেষ হলেও করোনা মহামারীর কারণে দুই থেকে পাঁচটি বিষয়ের পরীক্ষা আটকে যায়। তখন থেকেই শিক্ষার্থীরা অপেক্ষায় রয়েছেন কবে তাদের এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এ দিকে করোনা শুরুর পর কেটে গেছে ৯ থেকে ১০ মাস। এই অবস্থায় অনেকের মধ্যেই উৎকণ্ঠা আর হতাশা দানা বাঁধছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, চতুর্থ বর্ষ শেষ না হলে সনদ দেয়া হবে না। আর সনদ না মিললে চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণও করা হবে না।

এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক ড. মো: নাসির উদ্দীন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার এক দুই সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষা নেয়া যাবে। আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে অন্য কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া হলে সেটা ভিন্ন কথা। এই স্তরের শিক্ষায় স্বয়ংক্রিয় পাস দেয়া ঠিক হবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এ দিকে স্বয়ংক্রিয় পাসের দাবিতে সম্প্রতি গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে অটোপাস দিতে বিভিন্ন কলেজের বিএ (সম্মান) ও চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার্থীরা এই দাবি জানান। জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পাস কোর্স, দ্বিতীয় বর্ষ ও তৃতীয় বর্ষ, মাস্টার্স ফাইনাল এপ্রিলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে এসব পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়। ডিগ্রি পাস কোর্সে প্রতিটি বর্ষে ৩৪টি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/534642