শাক-সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। গতকাল শুক্রবার তোলা ছবি
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, শনিবার, ৪:৪৬

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে দিশেহারা মানুষ

একের পর এক বৃদ্ধি পাচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। অতি প্রয়োজনীয় এসব জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ দিশেহারা। পেঁয়াজের দাম বেড়ে আকাশচুম্বি হয়ে আছে। নতুন করে বেড়েছে চালের দাম। আর কাঁচা মরিচের দামও নতুন করে বেড়েছে। ৫০ টাকার কমে সবজি নেই বাজারে। অল্প আয়ের মানুষেরা দু’মুঠো ভাত খেতেই হিমশিম খাচ্ছে। অবিলম্বে বাজার মনিটরিং জোরদার করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি জানিয়েছে ভোক্তারা।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে সবধরনের চালের। কেজিতে দুই থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেশি রেখে বিক্রি করা হচ্ছে চাল। একইসঙ্গে দাম বেড়েছে খোলা ভোজ্যতেল ও চিনির। লিটারে তিন থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত দাম বেশি রাখা হচ্ছে খোলা সয়াবিনে।

রাজধানীর বাজারে দাম বেড়ে বর্তমানে খুচরায় প্রতিকেজি আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, পায়জাম চাল ৪৮ টাকা, মিনিকেট চাল ৫৮ টাকা, জিরা মিনিকেট চাল ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৫৫ টাকা ও পোলাও’র চাল (খোলা) বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিদরে।

অথচ এক সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি আটাশ চাল বিক্রি হয়েছিল ৪৬ টাকা, পায়জাম চাল ৪৩ থেকে ৪৪ টাকা, মিনিকেট চাল ৫৫ টাকা, জিরা মিনিকেট চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৫২ টাকা ও পোলাও’র চাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজিদরে।

এদিকে চালের দাম বাড়ার জন্য মিলারদের দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। আর ক্রেতারা বলছেন, বাজারে একটা পণ্যের দাম বাড়লে বিক্রেতারা অন্যটিরও দাম বাড়িয়ে দেন।

দাম বেড়েছে খোলা সয়াবিন তেল ও চিনির। লিটারে পাঁচ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে বর্তমানে প্রতিলিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০২ টাকা। কেজিতে তিন টাকা বেড়ে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা।
এদিকে পাইকারিতে দাম কমলেও নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা ও আমদানি করা এলসি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে। আর শ্যামবাজার পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৬ থেকে ৭০ টাকা ও আমদানি করা এলসি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫১ টাকা কেজিদরে।

সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচের। এসব বাজারে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে বর্তমানে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। আর ভারতীয় কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিদরে।

অপরিবর্তিত আছে সবজি ও শাকের বাজার। এসব বাজারে প্রতিকেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৭০ টাকা, উস্তা ৮০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৫০ টাকা, শসা (দেশি) ৮০ টাকা, গাজর (আমদানি) ৮০ থেকে ৯০ টাকা, মানভেদে ঝিঙা-ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙা ৫০ টাকা, কাকরোল আকারভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন আকারভেদে ৬০ থেকে ৯০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, কচুর ছড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা, আলু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, কচুর লতি ৫০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, কাঁচকলা প্রতিহালি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতিপিস ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।
বাজারে প্রতিআঁটি (মোড়া) লাল শাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা, মুলা ও কলমি শাক ১০ থেকে ১২ টাকা, পুঁই শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, ডাটা শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, লাউ ও কুমড়ার শাক বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪৯ টাকায়।
এসব বাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি ডাবলি ডাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১২০ টাকা কেজিদরে।

অপরিবর্তিত (আগের দাম) আছে মাছ, মুরগি, ডিম, গরু ও খাসির গোশতের দাম। এসব বাজারে বর্তমানে সোয়া কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশের কেজি ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ৫৫০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা। এছাড়া ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি করা হচ্ছে।

এসব বাজারে প্রতিকেজি রুই (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ৩০০ টাকা, মৃগেল ১৬০ থেকে ২৮০ টাকা, পাঙাস ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কাতল (আকারভেদে) ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কৈ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, পাবদা ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাচকি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, মলা ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, দেশি টেংরা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, নদীর টেংরা (বড়) ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং (আকারভেদে) ২৫০ থেকে ৩৮০ টাকা, দেশি শিং ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, বাইলা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্রতিডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা, সোনালি মুরগির ডিম ১৪০ টাকা, হাঁসের ডিম ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে।

প্রতিকেজি বয়লার বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ২২০ টাকা কেজিদরে। তবে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিদরে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা কেজিদরে।

আগের দামে বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির গোশত। এসব বাজারে প্রতিকেজি গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, খাসির গোশত ৭৫০ টাকা ও বকরির গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজিদরে।

https://dailysangram.com/post/428615