২৭ আগস্ট ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:০৯

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি

হাজার হাজার শিক্ষার্র্থীর দিন কাটছে দুশ্চিন্তায়

জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৬৫ হাজার শিক্ষার্থী কোনো কলেজ পায়নি * শিক্ষা বোর্ডগুলোতে উদ্বিগ্নদের ভিড় * পছন্দক্রম ভুলের কারণে এমন ঘটেছে -ড. হারুন-অর-রশিদ * দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ শুরু ৩১ আগস্ট

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু হাজার হাজার শিক্ষার্থীর দিন কাটছে গভীর উৎকণ্ঠায়। আবেদন করেও কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চান্স পায়নি প্রায় ৬৫ হাজার শিক্ষার্থী।

আবার চান্স পেলেও পছন্দের প্রতিষ্ঠান পায়নি এমন শিক্ষার্থীও শত শত। তাদের মধ্যে অনেকেই আছে জিপিএ-৫ এবং গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী।

ফলে দুশ্চিন্তা আর হতাশায় দিন কাটছে তাদের। ছাত্রছাত্রীর অনেকেই ছুটে যাচ্ছে নিজ নিজ শিক্ষা বোর্ডে। বুধবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এমন কয়েকশ’ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবককে ভিড় জমাতে দেখা গেছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ যুগান্তরকে বলেন, প্রতি বছরই আমরা এ ধরনের সমস্যা মোকাবেলা করি।

এ ঘটনার মূল কারণ তিনটি। সেগুলো হল- শিক্ষার্থীদের মেধাক্রম, প্রতিষ্ঠান পছন্দক্রম এবং কোটা ব্যবস্থা। ছাত্রছাত্রীরা নিজের মেধা অনুযায়ী আবেদনে কলেজ পছন্দ না করলে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, সফটওয়্যারে শুধু শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে কলেজ বরাদ্দ দেয়ার নির্দেশনা আছে।

আবেদনকারীর সংখ্যা ১০ হাজার আর আসন সংখ্যা ৩০০ হলে স্বাভাবিকভাবেই বাকি ৯ হাজার ৭০০ প্রার্থী বাদ যাবে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ৩০০ জনকে সফটওয়্যার নির্বাচিত ঘোষণা করবে।


তিনি আরও জানান, বাহিনী পরিচালিত কলেজগুলোতে আবার আরও কিছু আলাদা নিয়ম আছে। ওই প্রতিষ্ঠানে বাড়তি হিসাবে থাকে ৫ শতাংশ সংরক্ষিত এবং স্পেশাল কোটা।

সে কারণে অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ সেখানে আরও প্রতিযোগিতাপূর্ণ।

রাজধানীর স্বায়ত্তশাসিত একটি প্রতিষ্ঠানের এক পরিচালক জানান, তার ছেলে মিরপুর কমার্স কলেজে আবেদন করেছিল।

এসএসসিতে সে জিপিএ-৪ দশমিক ৯ পেয়েছে। কিন্তু সে চান্স পায়নি। অথচ তার ছেলের বন্ধু ৪ দশমিক ১৯ পেয়েও চান্স পেয়েছে।

ভিকারুননিসা স্কুল ও কলেজের জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ‘আ’ আদ্যক্ষরের ছাত্রী কোনো প্রতিষ্ঠানেই চান্স পায়নি।

বুধবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, একই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পাস করা কয়েকজন শিক্ষার্থী চান্স পায়নি।

এ ক্ষেত্রে দুটি ঘটনা ঘটেছে বলে জানান কর্মকর্তারা। একটি হল- কেউ বিজ্ঞানে এসএসসি পাস করে একাদশে বিজনেস স্টাডিজে আবেদন করলে ‘নিজ প্রতিষ্ঠান’ কোটার জন্য বিবেচিত হবে না।

এছাড়া কেউ শুধু আবেদন ফি জমা দিয়েছে। কিন্তু অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণই করেনি। এ কারণেও তারা চান্স পায়নি। ভিকারুননিসার উল্লিখিত ছাত্রীর ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেছে বলে জানান ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক।

শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, যারা কলেজ পায়নি তাদের ওয়েবসাইটে ঢুকে ফি ছাড়াই পছন্দ বাড়ানোর সুযোগ আছে।

প্রথম পর্যায়ে চান্স পাওয়া শিক্ষার্থীদের বুধবার ভর্তি নিশ্চায়ন শুরু হয়েছে। চলবে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত। নিশ্চায়ন না করলে আবেদন বাতিল হয়ে যাবে।

এদিকে দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রথম মাইগ্রেশন ও দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ হবে ৪ সেপ্টেম্বর।

তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ চলবে ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর। তাদের ফল প্রকাশ হবে ১০ সেপ্টেম্বর। কলেজভিত্তিক চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে ১৩ সেপ্টেম্বর। এরপর ওইদিন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তি হতে হবে।

মঙ্গলবার রাতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদনের ফলপ্রকাশ করা হয়। প্রথম পর্যায়ে সাধারণ নয়টি শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা বোর্ডের অধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি আবেদন করেছিল ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৭১৩ জন।

তাদের মধ্যে ১২ লাখ ৭৭ হাজার ৭২১ জন পছন্দের কলেজ পেয়েছে। ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৮১০ জন আবেদন করেনি। এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন শিক্ষার্থী।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/338720