৫ জুলাই ২০২০, রবিবার, ৩:৪৫

গাড়ির ঝাঁকিতে ফাটল বাড়ছে

বুড়িগঙ্গা সেতু

উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর (প্রথম বুড়িগঙ্গা সেতু) ফাটল দিন দিন বাড়ছেই। দ্রুতগতির যান চলাচলের কারণে বাড়তে থাকা ফাটলের সংস্কারকাজ শুরু করতে আরো দুই দিন লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ দুই দিন পর্যবেক্ষণ করে সেতু সংস্কারের পদ্ধতিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তারা জানান। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সেতুটি সংস্কার করতে ১৫ দিন সময় লাগবে।
গত সোমবার বুড়িগঙ্গা নদীতে চাঁদপুরগামী ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় মনিং বার্ড নামের একটি ছোট লঞ্চ ডুবে মারা গেছে ৩৪ জন। মর্নিং বার্ড উদ্ধার করতে যাওয়ার সময় জাহাজ প্রত্যয় বুড়িগঙ্গা সেতুতে সজোড়ে ধাক্কা খায়। এতে সেতুর মাঝবরাবর ফাটল দেখা দেয়।

এ ফাটলের কারণে গত মঙ্গলবার সেতু দিয়ে কোনো যান চলাচল না করায় ভোগান্তিতে পড়েন কেরানীগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের মানুষ। একই সাথে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে চলাচলকারী দূরপাল্লার বাসের যাত্রীরাও বিপাকে পড়েন। বর্তমানে ওই সেতু দিয়ে শুধু হালকা যান চলাচল করছে। ভারী যান চলাচল করতে না পারায় বুড়িগঙ্গার দক্ষিণাংশের শিল্প-কারখানার কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্য আনা-নেওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা কয়েক দফা সেতু পরিদর্শন করলেও সংস্কারের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে পারেননি। গত শুক্রবারও একটি বিশেষজ্ঞদল ক্ষতিগ্রস্ত সেতু পরিদর্শন করেছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, আগের চেয়ে সেতুতে ফাটলের আকার বেড়েছে। দ্রুতগতিতে যানবাহন চলায় কম্পন থেকে ফাটল বেড়েছে বলে তাদের ধারণা।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা অঞ্চল) সবুজ উদ্দিন খান বলেন, রাতে সেতুর ওপর দিয়ে দ্রুতগতিতে গাড়ি চলার কারণে ফাটল বেড়েছে। আমরা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, গাড়ির ভাইব্রেশন থেকে ফাটল বেড়েছে। গতি নিয়ন্ত্রণ করে আমরা দু-এক দিন পর্যবেক্ষণ করব। আর এই সময়ের মধ্যে ফাটল সংস্কারের ধরনও ঠিক করা হবে। এ কর্মকর্তা জানান, সংস্কারের পদ্ধতি নির্ধারণে বিশেষজ্ঞদল কাজ করছে। সেতু সংস্কারে অন্তত ১৫ দিন সময় লাগতে পারে। সংস্কারকালে যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে কি না, পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চার লেনের সেতুটির দুই মাথায় সব লেন উন্মুক্ত থাকলেও ফাটল বরাবর জায়গায় দুই লেন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ব্যারিকেড দিয়ে সেখানে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসিয়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হচ্ছে। ভারী যানবাহন না চলায় মালামাল পরিবহনে সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে মালবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলাচল করতে না পারায় গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন কলকারখানার জন্য অসুবিধা হচ্ছে। বিকল্প পথে চলতে গিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। একই সাথে সেতু দিয়ে স্বাভাবিক যানবাহন না চলায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন টোলের ইজারাদারও।

https://www.dailyinqilab.com/article/305104