২৭ জুন ২০২০, শনিবার, ১:২২

হজ বাতিলে ৯৪৬ কোটি টাকা হারাবে বিমান

এবার হজ বাতিল করায় শুধু হজ ফ্লাইট থেকে ৯৪৬ কোটি টাকারও বেশি আয় হারাবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশ বিমান বছরে যে আয় করে তার বেশির ভাগই আসে হজ ফ্লাইট থেকে। কারণ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি এয়ারলাইন্স একচেটিয়াভাবে দেশের সব হজযাত্রী বহন করে। ২০২০ সালে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯১ জনের হজে যাওয়ার কথা ছিল। যার ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৬৮ হাজার ৫৯৫ জনকে বহন করক বিমান।

সেই হিসাবে প্রতি টিকিট এক লাখ ৩৮ হাজার টাকা হলে শুধু হজযাত্রী বহন করে ৯৪৬ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার টাকা আয় হতো বিমানের। হজ ফ্লাইট পরিচালনা করতে না পারায় এ আয় হারাবে রাষ্ট্রায়ত্ত এই বিমান সংস্থাটি। ফলে সামনে বিমান মহাসঙ্কটে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা। বলেন, গত তিন মাস ধরে ‘দৈন্যদশা’য় চলতে থাকা বিমান ইতোমধ্যে সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে এক হাজার কোটি টাকা। হজ সীমিত করার সিদ্ধান্তে এ সঙ্কট আরো প্রকট হবে।

সৌদি সরকারের আদেশ অনুসারে এ বছর শুধু সৌদি আরবে বসবাসরতরাই হজে অংশ নিতে পারবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের মুসলিম যারা বর্তমানে সৌদি আরবে বসবাস করছেন, তারাও হজে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন। অর্থাৎ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো এবার বাংলাদেশের কেউ সেখানে হজ করতে যেতে পারছেন না।

অবশ্য সম্প্রতি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই- ডিসেম্বর) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স করপূর্ব নিট লাভ করেছে ৪২৩ কোটি টাকা।

বিমানবন্দর সূত্র মতে, ২০১৮ সালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৭২ লাখ যাত্রী ভ্রমণে যান। অর্থাৎ, প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার যাত্রী বাংলাদেশ থেকে বিদেশ ভ্রমণে গেছেন। গত বছর এই সংখ্যা বাড়লেও করোনাভাইরাসের প্রভাবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে তা আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন,এই পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বিমান ও বেসরকারি এয়ারলাইন্সকে বড় ধরনের মাশুল গুনতে হবে। অপর দিকে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের সচিব সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানান, করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স ২৭০ কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছে। ফ্লাইট কাটছাঁট এবং ওমরা না করতে পারায় বিমানকে এই ক্ষতি গুনতে হবে। এই ক্ষতি দিন দিন বাড়ছে। তিনি আরো বলেন, বিমানের পাশাাপাশি ক্ষতি গুনছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষও। আগে সিভিল অ্যাভিয়েশনের মাসে আয় ছিল ১২০ কোটি টাকা। সেই আই ৬০ কোটির নিচে নেমে গেছে।

বিমানের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার মতে, হজ ফ্লাইট বাতিলে বিরাট অঙ্কের এ আর্থিক ক্ষতি মানিয়ে নিয়ে চলতে হবে। করোনার কারণে সব উড়োজাহাজ প্রতিষ্ঠানই লোকসানের মুখে টিকে আছে। বিমানও এই সময়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে।

অন্য দিকে হজ ‘সীমিত’ করার ঘোষণায় চোখে অন্ধকার দেখছে টিকিটিং এজেন্সি, হজ ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলোও। হাবের মতে, হজকেন্দ্রিক তাদের প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার লেনদেন হতো, যা এবার না হওয়াতে অনেক এজেন্সির টিকে থাকাও কষ্ট হয়ে যাবে। অন্য দিকে প্রতিটি টিকিটিং এজেন্সি টিকেটপ্রতি ৭ শতাংশ হারে কমিশন পেত। এবার তারাও তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/511277