৪ জুন ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৮:২৭

বাজেটে কার্যকর সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের আহ্বান জামায়াতের

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে কার্যকর সুশাসন, স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং সব স্তরে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান। বাজেট প্রণয়নের প্রাক্কালে গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।

জামায়াতের আমির বলেন, এবারের বাজেট মূলত অর্থনীতিকে টেনে তোলার একটি প্রক্রিয়া। বাজেটে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, পাসপোর্ট, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার এবং বৃহৎ প্রকল্পগুলোকে দুর্নীতিমুক্ত করার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সব ধরনের জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার করা যাতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, দীর্ঘসূত্রতা এবং দুর্নীতি যেন অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধক না হতে পারে। জামায়াতের আমির খাতভিত্তিক অগ্রাধিকার দেয়ার পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, সেবা খাত বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি নির্ভর খাতগুলোকে ক্রমান্বয়ে ভ্যাটের আওতামুক্ত করার সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে হবে। জনগণের সামর্থ্য এবং বাস্তবতার আলোকে কর নির্ধারণ করা, বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অযৌক্তিক ব্যয় থেকে সম্পূর্ণ বের হয়ে আসা, তামাকজাত দ্রব্য, বিলাস দ্রব্য এবং প্রশাধনীর ওপর উচ্চমাত্রায় করারোপ করা এবং এসবের আমদানি ও ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে হবে। ওয়াকফ্ সম্পত্তির সংরক্ষণ ও ব্যবহারে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে।

ডা: শফিক বলেন, কুইকরেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের মূল্য কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে ফুয়েলের মূল্য কমায় বিদ্যুতের মূল্য কমিয়ে জনগণের ওপর থেকে বাড়তি আর্থিক চাপ কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে। নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সোলার পদ্ধতিকে বিকশিত করতে হবে।

বর্তমানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুবই ভঙ্গুর মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকা একান্তই জরুরি। জরুরি তহবিল গঠন করে আপদকালীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদ- অনুযায়ী জনশক্তির বিন্যাস সাধন করতে হবে। সব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবীমা চালু করার উদ্যোগ নিতে হবে।

সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সবার জন্য খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য লাভ মুক্ত ঋণ বরাদ্দ দিতে হবে। দরিদ্রদের রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট তালিকা দ্রুত পরিবর্তন করে স্বচ্ছ, সঠিক এবং ন্যায্য তালিকা নিশ্চিত করতে হবে।

কৃষিতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতা বলেন, মধ্যস্বত্বভুগীদের হাত থেকে কৃষক ও কৃষিপণ্যকে নিরাপদ রাখতে হবে। কৃষক ও কৃষিখাতকে রক্ষার জন্য কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ও কৃষিজাতপণ্য ক্রয় করতে হবে।

পরিবেশ দূষণ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী প্রকল্প বন্ধ করা, ব্যাপক বনায়নের দিকে নজর দেয়া, আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত ২৬টি জেলার রাস্তা-ব্রিজ- কালভার্ট বিশেষ করে বেড়িবাঁধ নির্মাণে বাজেটে বরাদ্দ দেয়া, প্রবাসী কর্মীদের যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের পরিবারের ও কর্মহারা শ্রমিকদের পুনর্বাসনের জন্য বাজেটে যথাযথ বরাদ্দ রাখার পরামর্শ দেন জামায়াতের শীর্ষ নেতা।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/506026