২৩ মে ২০২০, শনিবার, ৪:৩৭

প্রাইভেটকারের জন্য দরজা খোলা

বাধভাঙা স্রোতের মতো ছুটছে মানুষ। গণপরিবহন নেই তো কী হয়েছে? প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসগুলোই পরিণত হয়েছে গণপরিবহনে। কোথাও কোথাও সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, এমনকি সাধারণ চালিত রিকশায় করে মানুষ হাইওয়ে পার হচ্ছেন। ফেরিঘাটগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। আর যাদের নিজস্ব গাড়ি রয়েছে, তাদের তো কথাই নেই। সাঁই সাঁই করে জমিদারের মতো চলে যাচ্ছে নির্দিষ্ট গন্তব্যে। মহামারী করোনা তাদের কাছে যেন তুচ্ছ, নস্যি! এটি গতকালের চিত্র। রাজধানীজুড়ে কেবল মানুষ আর মানুষ। সকালে যখনই শোনা গেছে প্রাইভেট গাড়িতে করে বাড়ি যাওয়া যাবে, অমনি অনেকেই রাস্তায়।

গণপরিবহন বন্ধ হওয়ার পর থেকে সড়ক-মহাসড়কে যে চিত্র ছিল, গতকাল তা পুরোটাই বদলে যায়। গত কয়েক দিন রাজধানীর দরজাগুলো বন্ধ ছিল। রাজধানী থেকে হেঁটেও বের হতে বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এই সময়েও অনেকে নানা ফন্দি করে রাজধানী থেকে বের হয়েছে ঠিকই, তবে কষ্ট করতে হয়েছে। ফেরিগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। যে কারণে হাজার হাজার মানুষ ফেরিঘাটে জড়ো হলেও ফেরি বা লঞ্চে কেউ পার হতে পারেনি। সে ক্ষেত্রেও অনেকে ভিন্নভাবে নদী পার হয়েছে।

গতকাল সকালে হঠাৎ করেই পুলিশ রাজধানীর দরজাগুলো খুলে দেয়। কেউ প্রাইভেটকার নিয়ে বের হতে চাইলে তাদেরকে শহর থেকে বের হওয়ার অনুমতি দেয় পুলিশ। মুহূর্তে এই কথা ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মধ্যে। মানুষ হুড়হুড় করে শহর ছেড়ে বের হওয়া শুরু করে। প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসসহ ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে মানুষ ঢাকা ছাড়া শুরু করে। আবার যাদের টাকা আছে তারাও বিভিন্ন সার্ভিসের গাড়ি ভাড়া নিয়ে তা নিজস্ব বলে চালিয়ে দেয়। তাদের অবশ্য সেসব গাড়ি ভাড়া করতে গুনতে হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা।

দুপুরের দিকে দেখা যায় রাস্তায় শতশত প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস। আবার এই সুযোগে কিছু মানুষ সিএনজি অটোরিকশা, ট্যাক্সিক্যাব, ব্যাটারিচালিত রিকশা এমনকি প্যাডেলের রিকশা নিয়েও হাইওয়েতে উঠে যায়। অনেক মানুষকে হেঁটেও যেতে দেখা গেছে।

রাজধানীর দরজা খোলার সাথে সাথে ফেরিঘাটও সচল হয়ে যায়। চালু করা হয় ফেরিগুলো। ফেরিতে যতসংখ্যক যানবাহন যাচ্ছে তার চেয়ে এমনি মানুষ যাচ্ছে কয়েকগুণ। গতকাল দুপুরের দিকে শিমুলিয়া ঘাট থেকে সিদ্দিকুর রহমান নামে একজন জানান, ঘাটে হাজার হাজার মানুষ অপেক্ষা করছে। তারা পার হওয়ার জন্য গাদাগাদি করে ফেরিতে উঠছে।

ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-মাওয়া, ঢাকা-চিটাগাং, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-ময়মনসিংহসহ সবগুলো রাস্তায় এখন প্রাইভেট কার আর মাইক্রোবাসের ভিড় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। পোস্তাগোলা ব্রিজের ওপর দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য দুপুরের দিকে বলেন, তাদের যেভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেভাবেই দায়িত্ব পালন করছেন। প্রাইভেটকার চলার অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে ওই পুলিশ সদস্য বলেন।

এ দিকে গতকাল বিকেলের দিকে রাজধানীতে কিছু দূরপাল্লার বাসও প্রবেশ করতে দেখা গেছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, রাতে এই গাড়িগুলো যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাবে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/503706/