১১ মে ২০২০, সোমবার, ৪:৩৫

বকেয়া বেতনের দাবিতে আশুলিয়া ও রাজধানীতে শ্রমিক বিক্ষোভ

বকেয়া বেতনের দাবিতে শনিবার আশুলিয়ায় ডিইপিজেডের ইতালিয়ান সোয়েটার ফ্যাক্টরি এওয়ানের শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও অবস্থান ধর্মঘট করেছে। অন্যদিকে রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেটের বিভিন্ন দোকানের কর্মচারীরা বকেয়া বেতনের দাবিতে গতকাল মিরপুর সড়ক অবরোধ করে।

আশুলিয়া (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, আশুলিয়ার ডিইপিজেডের পশ্চিম জোনে অবস্থিত ইতালিয়ান সোয়েটার ফ্যাক্টরি এ ওয়ানের শ্রমিকরা তাদের চার মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান ধর্মঘট করেছে।

শনিবার সকাল ১০টায় নবীনগর-চন্দ্রা মহসড়কের ডিইপিজেডের সামনের মহাসড়কে এ বিক্ষোভ এবং আশুলিয়া প্রেস ক্লাবের সামনে রাত ১১টা পর্যন্ত এ অবস্থান ধর্মঘট করে শ্রমিকরা।

ভুক্তভোগী শ্রমিকরা জানায়, ডিইপিজেডের পশ্চিম জোনে অবস্থিত ইতালিয়ান ফ্যাক্টরি এ ওয়ান পোশাক কারখানার শ্রমিকরা চার মাসের বেতন পায়। শ্রমিকদের পরিবার না খেয়ে রয়েছে, বাসাভাড়ার জন্য বাড়িওয়ালারা তাদেরকে নাজেহাল করছে। নিরুপায় হয়ে বকেয়া বেতনের জন্য তারা বিক্ষোভ ও অবস্থান ধর্মঘট করে সরকারকে জানাতে চায় যে শ্রমিকরা না খেয়ে আছে।

এ ব্যাপারে ডিইপিজেডের জিএম আব্দুস সোবাহান জানান, ইতালিয়ান ফ্যাক্টরি এ ওয়ানের শ্রমিকদের বেতনের ব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা হয়েছে। এ মাসের ১৮ বা ১৯ তারিখে শ্রমিকদের একটি পেমেন্ট করা হবে। এ সিদ্ধান্ত শ্রমিক নেতাদেরকে জানানো হয়েছে। তারপরও শ্রমিকদের একটি অংশ বিক্ষোভ ও আশুলিয়া প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘট করে। পরে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ রিজাউল হক দীপু ১৯ মে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন দেয়া হবে মর্মে ঘোষণা দিলে শ্রমিকরা অবস্থান ধর্মঘট ছেড়ে চলে যায়।

গাউছিয়া মার্কেটের কর্মীদের বিক্ষোভ

ইউএনবি জানায়, ঢাকার গাউছিয়া মার্কেটের বিভিন্ন দোকানের কর্মীরা বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে রোববার এক ঘণ্টার জন্য মিরপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।

শ্রমিক কর্মচরী ইউনিয়নের সভাপতি জুয়েল মোল্লা বলেন, গাউছিয়া মার্কেটের বেশির ভাগ দোকান মালিক শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে দোকান বন্ধ করে রেখেছেন। তিনি বলেন, এই করোনাভাইরাস মহামারী চলাকালীন শ্রমিকরা কিভাবে বেঁচে থাকবে? মার্কেট মালিকদের সদস্যদের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এখন কেউই শ্রমিকদের কথা ভাবছে না।

দোকান মালিকরা বকেয়া বেতন পরিশোধ না করায় রাস্তায় নামার কথা উল্লেখ করে আন্দোলনকারী মার্কেট শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, রোববার থেকে সরকার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিলেও কিছু মার্কেট মালিক তাদের দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে দুপুর ১২টার দিকে গাউছিয়া মার্কেটের সামনে মিরপুর সড়ক অবরোধ করে এবং বেলা সোয়া ১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করে।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন ইউএনবিকে জানান, রাজধানীতে বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনা করে বেশির ভাগ শপিংমল ও মার্কেট বন্ধ থাকলেও পুরান ঢাকার ইসলামপুর মার্কেট, চকবাজার, কেরানীগঞ্জ, যাত্রাবাড়ীর আয়েশা মার্কেট, ধানমন্ডির রাপা প্লাজা, ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট এবং নগরীর এলিফ্যান্ট রোড এলাকার দোকানগুলো রোববার থেকে আবার চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

তবে ব্যস্ততম গুলিস্তান মার্কেট, বঙ্গবাজার, শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট, পুরান পল্টনের পলওয়েল মার্কেট এবং মিরপুর এলাকার মার্কেটগুলোসহ রাজধানীর বেশির ভাগ শপিংমল ও মার্কেট ঈদ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানান।

এর আগে, বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স, যমুনা ফিউচার পার্ক, ঢাকার সবচেয়ে ব্যস্ততম নিউমার্কেট, মৌচাক, আনারকলি মার্কেট কর্তৃপক্ষ তাদের মার্কেট না খোলার সিদ্ধান্ত নেয়।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) নগরবাসীকে সরকার ঘোষিত সময়সূচি ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে নিজ নিজ এলাকার দুই কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত মার্কেট থেকে তাদের ঈদের কেনাকাটা শেষ করার আহ্বান জানিয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি শপিংমলের প্রবেশপথে স্বয়ংক্রিয় জীবাণুনাশক ট্যানেল বা চেম্বার স্থাপন এবং প্রতিটি দোকানে পৃথক তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি।

এর আগে গত মঙ্গলবার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্বাস্থ্যসংক্রান্ত নির্দেশনা বজায় রেখে ১০ মে থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টার জন্য দোকান ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/501223/