১ মে ২০২০, শুক্রবার, ৪:৪৯

দৌলতদিয়া শিমুলিয়া ও পাটুরিয়া ঘাটে মানুষের ঢল

করোনাভাইরাসের ভীতি উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবারও রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন কর্মস্থলে ফেরা শ্রমজীবী হাজারও মানুষের ঢল নামে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের শিমুলিয়া, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় ঘাটে। এসব শ্রমজীবী মানুষ গণপরিবহন সংকটে হেঁটে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে নিজ নিজ কর্মস্থলে ছুটছেন। এ ছাড়া জনস্রোত ঠেকাতে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়েছে ভোলায়। ফলে ফেরিঘাটে গার্মেন্টকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। যুগান্তর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) : বৃহস্পতিবার সকালে শিমুলিয়া ঘাটে শ্রমজীবী এসব মানুষের এমন ঢল দেখা গেছে। তবে শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকায় যেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এসব মানুষকে। এ ছাড়া অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন পাল্টে কর্মস্থলে ছুটছেন তারা। মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম জানান, ভোররাত ৪টা থেকে রাজধানীগামী এসব মানুষ ফেরিতে ভিড় জমিয়ে পারাপার হচ্ছে। সকাল থেকেই তিনটি ফেরিতে মানুষের চাপ বেশি ছিল প্রায় ৬ হাজার শ্রমজীবী মানুষ নদী পার হয়ে কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

মানিকগঞ্জ : বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের পোশাক কারখানায় যোগ দিতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার হাজারও কর্মজীবী পাটুরিয়া ঘাটে জমায়েত হন। তাদের এইটাই টার্গেট যে কোনোভাবেই হোক যার যার কর্মস্থলে ফিরতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে গাদাগাদি করে ফিরছেন কর্মস্থলে। কর্মস্থলফেরত মানুষের উপচে পড়া ভিড়ের পোয়াবারো ঘাট ইজারাদারদের। তারা নির্ধারিত টোলের চাইতে দ্বিগুণ টোল আদায় করছেন। আগত যাত্রীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পাটুরিয়া ঘাটে লুস যাত্রী ইজারাদারে ম্যানেজার লিটন দেবনাথ জানালেন বিষয়টি তাদের জানা নেই।

রাজবাড়ী : রাজবাড়ী জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু হঠাৎ করে রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে পোশাক শ্রমিকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। জরুরি কাজে পারাপারের জন্য এ ঘাটে বর্তমান বড় দুটি ও ছোট তিনটি ফেরি চলাচল করছে। সরেজমিন বৃহস্পতিবার ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ছোট-বড় ট্রাকের সঙ্গে প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসের পাশাপাশি মানুষের ভিড়ও। মাগুরা থেকে আসা যাত্রী মামুন বলেন, বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর পথে ১০ স্থানে বাধার সম্মখীন হয়েছি। তারপর আজ কারখানায় যেতে না পারলে আমার চাকরি থাকবে না।

ভোলা : ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে বৃহস্পতিবারও পঞ্চম দিনের মতো ঢাকা-চট্টগ্রামগামী গার্মেন্টকর্মীরা অবস্থান করেন। কয়েক হাজার কর্মীর এমন অবস্থানে ওই এলাকায় স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যারিকেটে এরা ফেরিতে যেতে পারছে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসন ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও এসব কর্মী জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কেউ হেঁটে, কেউ রিকশায় ফেরিঘাটে এসে জড়ো হন। কেউ কেউ রাতের অন্ধকারে ট্রলারে উত্তাল মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলার মজুচৌধুরী ঘাটে যাওয়ার চেষ্টা করে। এমনটাই দেখা যায় গত ৫ দিন। গার্মেন্টকর্মী বিলকিস বেগম জানান, ২ মে কাজে যোগদান না করলে চাকরি থাকবে না।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/303230/