৯ এপ্রিল ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৩:৫১

ঢাকায় পাঁচ শতাধিক বাড়ি লকডাউন

বিশ্বজুড়ে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ রোগের বিস্তার ঠেকাতে রাজধানী ঢাকায় লকডাউন করা ভবনের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। বুধবার পর্যন্ত লকডাউন করার বাড়ির সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বিধি মানতে জনগণকে বাধ্য করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতাও বেড়েছে। পুলিশ বলছে, যে ভবনে করোনা রাগী পাওয়া যাচ্ছে ঐ ভবন লকডাউন করা হচ্ছে।

নিরাপত্তার স্বার্থে কোথাও পুরো এলাকা লকডাউন করা হচ্ছে। আইইডিসিআরের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী বুধবার পর্যন্ত সারা দেশে ২১৮ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১৯ জনই রাজধানী ঢাকার। এদের বেশিরভাগই রাজধানীর হাজারীবাগ, উর্দু রোড, বুয়েট এলাকা, লালবাগ, ইসলামপুর, লক্ষ্মীবাজার, নারিন্দা, সোয়ারীঘাট, ওয়ারী, কোতোয়ালি, বংশাল, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, আদাবর, মোহাম্মদপুর, বসিলা, ধানমণ্ডি, জিগাতলা, সেন্ট্রাল রোড, গ্রিনরোড, শাহবাগ, পুরানা পল্টন, ইস্কাটন, বেইলি রোড, মগবাজার, বাসাবো, রামপুরা, বাড্ডা, ভাটারা, নিকুঞ্জ, আশকোনা, উত্তরা, গুলশান, মহাখালী, কাজীপাড়া, মিরপুর-১০ নম্বর, মিরপুর-১১ নম্বর, মিরপুর-১৩ নম্বর, মিরপুর-১ নম্বর, শাহ আলীবাগ, টোলারবাগ, উত্তর টোলারবাগ, পিরেরবাগ এলাকার বাসিন্দা। এ ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায় যুগান্তরকে বলেন, আইইডিসিআর যেসব ভবনের করোনা রোগী শনাক্ত করেছেন, আমরা সেসব ভবন লকডাউন করছি। ক্ষেত্রবিশেষে কোনো কোনো লেন বা এলাকাও লকডাউনের আওতায় আনা হচ্ছে। তবে কতগুলো ভবন লকডাউন করা হয়েছে এর সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।

ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের ডিসি মাসুদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, করোনা রোগী শনাক্ত হলেই ওই বাড়ি লকডাউনের আওতায় আনা হচ্ছে। তবে কতগুলো বাড়ি লকডাউন আছে তা নিশ্চিত করে বলতে পারব না। পুলিশের অপর একটি সূত্র বলছে, নগরীর ৫০টির বেশি এলাকায় অন্তত ৫ শতাধিক বাড়ি লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে মিরপুরের টোলারবাগে ভবনের সংখ্যাই ১৫০টির বেশি। এছাড়া চকবাজারের খাজেদেওয়ান-১ ও ২ নং লেনে ২ শতাধিক বাড়ি লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার প্রতিনিয়ত এই ভবনের সংখ্যা বাড়ছে। মঙ্গলবারও মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকার পাঁচটি সড়ক লকডাউন করা হয়েছে।

লকডাউন করা এলাকায় কাউকে প্রবেশ কিংবা বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত লকডাউনের আওতায়ই থাকতে হবে এলাকার বাসিন্দাদের। তবে জরুরি কাজে এলাকার বাসিন্দারা বের হতে পারছেন। এদিকে সচেতনতার অংশ হিসেবে রাজধানীর অনেক স্থানে স্থানীয়রাও নিজ উদ্যোগে ভবন লকডাউন করে দিয়েছে। অপরিচিত, গৃহকর্মী, এমনকি স্বজন-পরিজন কাউকেই ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না আবাসিক ভবনে।

তবে করোনার বিস্তার ঠেকাতে বাড়ি লকডাউন করা ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা ও সশস্ত্র বাহিনী সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে কাজ করছে। র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত রাজধানীতে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মানুষকে জরিমানা করেছে। রাজধানীর কাঁচাবাজার ও সুপারশপগুলো সন্ধ্যা ৭টার পর বন্ধ থাকছে, বিভিন্ন পাড়া ও মহল্লার নিত্যপণ্যের দোকানগুলো সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা থাকছে। সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে সব ইউনিটকে এটি বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। তবে নিরাপত্তার ফাঁক গলিয়ে মহল্লার কিছু দোকান খোলা থাকছে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/296887