৩ এপ্রিল ২০২০, শুক্রবার, ১:৪৭

ইকোনমিস্টের পূর্বাভাস

করোনার আঘাতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিতে ধসের শঙ্কা

চলতি বছর প্রবৃদ্ধি হবে সাড়ে ৩ শতাংশ

করোনাভাইরাস মহামারীর প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশেই ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। করোনার আঘাতে এ দেশের প্রবৃদ্ধিতে ধস নামতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে লন্ডনভিত্তিক সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। এ জটিল অবস্থায় চলতি বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে সাড়ে ৩ শতাংশ, যা আগে সাড়ে ৭ শতাংশ হবে বলে জানিয়েছিল সংস্থাটি। এক বিশ্লেষণে দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বলছে, বাংলাদেশ ও ভারত তাদের শক্তিশালী অথনৈতিক অবস্থানের কারণে তুলনামূলক বেশি প্রণোদনা সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। অন্যদিকে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় প্রণোদনার ধরন কিছুটা সীমিত হবে। এ অস্থির অবস্থায় চলতি বছর ভারতের প্রবৃদ্ধি হবে ২ শতাংশ, যা আগে ৬ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছিল। পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি থমকে যাবে। কোনো প্রবৃদ্ধিই হবে না দেশটিতে। শ্রীলঙ্কার প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করছে দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।

দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব কটি দেশেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সন্ধান পাওয়া গেছে। ঘনবসতি, স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে অসচেতনতা, ভারসাম্যহীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এই অঞ্চলকে করোনাভাইরাস মহামারীর সবচেয়ে খারাপ প্রভাবের ঝুঁকিতে ফেলেছে। প্রাদুর্ভাবের বিস্তার রোধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার পরও এ অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক ক্ষতি ব্যাপক হবে।

দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট আশঙ্কা করছে, করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এ অঞ্চলে চলতি বছর প্রবৃদ্ধি অনেকই কমবে। জনগণের চলাচল কমাতে সরকার কর্তৃক গৃহীত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার কারণে ভোক্তা চাহিদা কমে যাওয়ায় একটা বড় ধাক্কা লেগেছে চাহিদার দিক দিয়ে। এ কারণে দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশেরই প্রবৃদ্ধি কমে যাবে। এরপর কারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর গিয়ে পড়েছে আরেকটি ধাক্কা। পরে যা চাহিদার ওপর আরেক ধরনের ধাক্কা দেবে। বিশ্বজুড়ে একই পদক্ষেপ নেয়ায় তা রফতানি চাহিদাও সীমাবদ্ধ করে দিচ্ছে। ভোক্তার পক্ষ থেকে চাহিদা কমে যাওয়া, সেই সঙ্গে রফতানি কমে যাওয়ায় নিয়মিত ব্যবসায়িক আয় কমবে। ফলে কোম্পানিগুলো তাদের নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না এবং বিনিয়োগের যে পরিকল্পনা ছিল, তা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ও সরকার প্রধানরা মহামারীর অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটাতে বিভিন্ন পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ঘোষণা করছে। তবে এসব পদক্ষেপে অর্থনৈতিক ক্ষতি খুব বেশি মোকাবেলা করা সম্ভব হবে, তা বিশ্বাস করা কঠিন। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদের সুদহার কমিয়েছে এবং আর্থিক খাতে তারল্য নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/295211/