৩ এপ্রিল ২০২০, শুক্রবার, ১:৪২

শ্বাসকষ্ট নিয়ে খুলনা মেডিক্যালে চিকিৎসা পাননি ইবি ছাত্রী

শ^াসকষ্ট নিয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে চিকিৎসা পাননি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবিকুন নাহার নামে এক ছাত্রী। এতে দুঃখ প্রকাশ করে নিজের অনুভূতির কথা ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাসে লিখেছেন তিনি। চিকিৎসাবঞ্চিত সাবিকুন নাহার ইবির আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী।

জানা যায়, সাবিকুন নাহার গত কয়েক দিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। গত বুধবার শ্বাসকষ্টের মাত্রা বেড়ে গেলে তিনি খুমেকে যান। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শ্বাসকষ্টের রোগী শুনে তার চিকিৎসা না দিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেয়। পরে সেখান থেকে ফিরে স্থানীয় এক ডাক্তারের চিকিৎসা নেন সাবিকুন।

সাবিকুন নাহারের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি করোনার কারণে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন না। আগে থেকেই তার এ সমস্যা রয়েছে। তিন-চার মাস আগেও একবার শ্বাসকষ্ট বেড়েছিল। তখন চিকিৎসা নিয়ে তিনি স্বাভাবিক হন। বংশগতভাবে তার এই সমস্যাটি আছে বলে জানান তিনি। তার নানীরও শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল।

তবে খুমেকের ডাক্তারদের আচরণে মনে আঘাত পেয়ে তিনি ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন। তিনি বলেন, শুধু আমি নই। হয়তো আমার মতো আরো অনেক মানুষই সমস্যা নিয়ে হাসপাতলে গিয়ে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এতে সঙ্কটকালীন রোগীদের আরো বেশি সঙ্কটে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।

খুমেক থেকে ফিরে হাসপাতালের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন ওই ছাত্রী। এতে চিকিৎসকদের অবহেলার চিত্র ফুটে উঠেছে। পাঠকের জন্য তার লেখাটি তুলে ধরা হলো- ‘আমার বাংলাদেশÑ

গত ৩ দিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছি। আজ আর না পেরে খুলনা মেডিক্যালে গিয়েছিলাম, কিন্তু কপাল খারাপ। যখন শুনলো শ্বাসকষ্ট, তখন বলে তারা রোগী দেখে না। আমি উত্তরে বললাম, তাহলে আমাদের মতো লোক কোথায় যাবে?
উত্তর আসলো ৩/৪ টা

এক. প্রাইভেট ক্লিনিকে যান। দুই. সদর হাসপাতালে যেতে পারেন। আমরা স্যরি। তবে তিন নম্বরটা ছিল মজার উত্তর। ঠিক তখন ৪ জন পুলিশ ২টা মধ্যবয়সী লোক নিয়ে আসে। তখন হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে ৩ নং উত্তর আসে ঠিক এভাবেÑ ‘আমরা এসব রোগী যাই হোক দেখবো, কিন্তু আপনাকে না।’

আমি তাদের ২ নং কথার উত্তর হিসেবে বলছি আপনারাই যদি রোগী না দেখেন, সদরের ওরা কিভাবে কী করবে?
ওরা চুপ।

আমি বললাম, কোনো ডাক্তার নেই আমাকে দেখার মতো? আমি তো দম নিতে পারছি না। তারা বলে, আজ হবে না, কাল আসেন। তখন আমি বললাম, আমার অবস্থা খারাপ হচ্ছে। তারা বলে, সারা দিন কী করছেন? আমি বললাম, আর সহ্য করতে না পেরে এখন আসলাম। তারা তখনো বলে, হবে না।

আর আমার আপনার প্রশাসনের পুলিশ ভাইয়ারা তখন (আমার ও ডাক্তারদের কথোপকথন) দেখল পুরোটা। কিন্তু কোনো রেসপন্স নাই। ওখান থেকে চলে আসি আর গ্রাম্য ডাক্তার দেখাই। এখন একটু কম কষ্ট হচ্ছে।

আজকের প্রশাসন তাদের চেতনা নিয়ে জেগেও ঘুমিয়ে ছিল। বাহ! বাহ! বড় লেকচার ছাড়েন অথচ আপনারা রোগী দেখেন না। আর শ্বাসকষ্টে কেউ মারা গেলে করোনা সন্দেহ তাই না? শেষে জানাজা মিলে না। আমার জন্য দোয়া করবেন। ধন্যবাদ বাংলাদেশ।’

https://www.dailynayadiganta.com/city/493040/