৩ এপ্রিল ২০২০, শুক্রবার, ১:৪০

না খেয়েই মারা গেলেন বৃদ্ধ

লাশ দাফন করল পুলিশ

প্রায় ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে বৃদ্ধ লোকটি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছিলেন। শরীরে তেমন বল ছিল না। অনেকটা কষ্ট করেই এই পাড়া থেকে ওই পাড়া, রাস্তা থেকে রাস্তায় ঘুরছিলেন তিনি। কিন্তু কেউ জানে না লোকটি কে? কি তার পরিচয়? কারো মায়া হলে কিছু খাবার কিনে দিচ্ছে, কেউবা দুই-চার টাকা সাহায্য করছে। কিন্তু লোকটির পরিচয় বা তার বিষয়ে কেউ খোঁজ নিয়ে তার ঠিকানায় পৌঁছে দেয়ার চিন্তা মাথায় নেয়নি। এভাবে খেয়ে না খেয়েই কাটছিল তার জীবনের শেষ দিন কয়টি। অবশেষে বড় উঠান এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারের পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। অজ্ঞাত পরিচয়েই দাফন করা হয় স্থানীয় কবরস্থানে।

ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায়। স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, বুধবার সকাল থেকে প্রায় ৭০ বছর বয়সের এই বৃদ্ধ লোকের মৃত দেহ পড়েছিল। ভয়ে এলাকার কেউ ধারে কাছেও ঘেঁষছিল না। শুধু পুলিশকে টেলিফোনে একটি লাশ পড়ে থাকার খবর দিয়েই সবাই চুপচাপ। খবর পেয়ে পুলিশ বৃদ্ধ ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। পরে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে লোকটি স্থানীয় কেউ নয়। তাকে কেউ চেনে না। লোকটি বেশ কয়েক দিন হলো এই এলাকার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছিল।

পরে শাহ মীরপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপুলিশ পরিদর্শক নাছির উদ্দিন ও উপপুলিশ পরিদর্শক নাজমুলসহ পুলিশ সদস্যরা লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় মানুষদের দিয়ে তার গোসল করিয়ে বুধবার মাগরিবের পর জানাজার নামাজ শেষে উঠান ঈদগাহ্ এলাকার কবরস্থানে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেন।

নাছির উদ্দিন বলেন, পুলিশ পরিদর্শকের নির্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউপি সদস্য ও এলাকাবাসীর সহায়তায় লাশ দাফন হয়েছে। লোকটি বেশ কিছু দিন ধরেই ওখানে ছিল। পুলিশের ধারণা খেতে না পেয়ে তার মৃত্যু হয়। তিনি জানান, পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে আসে তখনই কেবল দুই একজন করে মানুষ আসতে থাকে। এর আগে কেউ ওই লাশের ধারেকাছে আসেনি। লাশের গোসল থেকে দাফন করা পর্যন্ত সব খরচ স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউনুস ও সাইদ বহন করেন।

কর্ণফুলী থানার পুলিশ পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নোমান হোসেনকে ঘটনা জানানো হয়। তার নির্দেশে মৃত ব্যক্তির সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ দাফন করা হয়।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/493099