ছবি: সংগৃহীত
১৬ মার্চ ২০২০, সোমবার, ১১:৪৫

মানবতাবিরোধী অপরাধ

এটিএম আজহারের মৃত্যুদণ্ড বহালের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

দণ্ড কার্যকরে আরও দুটি ধাপ * রায়ের কপি ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড বহালের রায় প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ আপিল বিভাগের চার বিচারপতির স্বাক্ষরের পর রোববার বিকালে এ রায় প্রকাশ করা হয়।

নিয়মানুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার সুযোগ পাবেন আজহার। কাশিমপুর-২ কারাগারের কনডেম সেলে রয়েছেন তিনি।

সুপ্রিমকোর্টের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আপিল বিভাগে মৃত্যুদণ্ড বহালের রায়ের কপি বিচারিক আদালত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন না করলে সরকার জেলকোড অনুযায়ী আজহারের ফাঁসি কার্যকর করতে পারবে। আজহারের অন্যতম আইনজীবী শিশির মনির বলেন, আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা মৃত্যুদণ্ড বহালের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করব।

বিশিষ্ট ফৌজদারি বিশেষজ্ঞ সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, এটিএম আজহারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আরও দুটি ধাপ রয়েছে। সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল থাকায় এখন রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) ও রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষাই একমাত্র পথ। এখানে বিফল হলে তাকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতেই হবে।

সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের বিশেষ অধিকার রয়েছে। সেই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে কোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করার এবং যে কোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে।’

আদালত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করার পর যদি নামঞ্জুর হয়, তাহলে কারা কর্তৃপক্ষ জেলকোড অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবেন।

জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি ছিলেন এটিএম আজহারুল ইসলাম। ৩১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ আপিল আংশিক মঞ্জুর করে সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।

প্রায় পাঁচ বছর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে তিন অভিযোগে এটিএম আজহারের মৃত্যুদণ্ড এবং দুই অভিযোগে মোট ৩০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। আপিলের রায়েও রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা ও হত্যার তিন ঘটনায় তার মৃত্যুদণ্ড সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের মতের ভিত্তিতে বহাল থাকে।

অপহরণ ও আটকে রেখে নির্যাতনের আরেকটি ঘটনায় ট্রাইব্যুনালের দেয়া পাঁচ বছরের সাজাও সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের মতের ভিত্তিতে বহাল রাখা হয়।

আর বহু নারীকে রংপুর টাউন হলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতন কেন্দ্রে ধর্ষণের জন্য তুলে দেয়ার ঘটনায় ট্রাইব্যুনালের রায়ে আজহারের ২৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হলেও এ অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর আপিলে আসা এটি অষ্টম মামলা, যার ওপর চূড়ান্ত রায় হয়েছে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/289488/