১৭ জানুয়ারি ২০২০, শুক্রবার, ৬:১৪

সেচের প্রশিক্ষণে ২৪ জন বিদেশে

প্রয়োজন হোক না হোক বিদেশে প্রশিক্ষণ উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে থাকতেই হবে। বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ না থাকার কারণে অনেক প্রকল্প সামনে এগোতে পারে না। এই ধারায় নদীমাতৃক দেশে সেচ প্রকল্পের জন্য বিদেশে প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছেন ২৪ জন কর্মকর্তা। তাদের জন্য মাথাপিছু ব্যয় হবে ৭ লাখ টাকা। আর ২৫৭ কোটি টাকার এই প্রকল্পের বাধ্যতামূলক সম্ভাব্যতা যাচাই নিয়েও সন্দিহান খোদ পরিকল্পনা কমিশন। সম্প্রতি প্রকল্প প্রস্তাবনা পর্যালোচনা থেকে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে মুজিবনগর সেচ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। ওই প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে, ২৫৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পটি দেশের তিন জেলার ১৩টি উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হবে। বৃহত্তর কুষ্টিয়া এলাকায় শুষ্ক মৌসুমে সেচকাজের ব্যবহার কাক্সিক্ষত মাত্রায় পৌঁছেনি, যার কারণে আবাদযোগ্য অনেক জমি পতিত রয়েছে। এখানে ২.৭২ হেক্টর আবাদযোগ্য জমি আছে। যার মধ্যে ২.০৭ হেক্টর জমি সেচের আওতায় এসেছে। কিন্তু প্রায় শূন্য দশমিক ৬৫ হেক্টর জমি এখনো সেচবহির্ভূত। খাল পুনঃখনন ও প্রয়োজনীয় সেচ অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে ২৭ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে ভূ-উপরিস্থ পানিনির্ভর সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ করা। এতে করে ৬৫ হাজার ৬২০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য ও শাকসবজি উৎপাদন এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ত্বরান্বিত করা যাবে। কৃষকদের আধুনিক সেচ প্রযুক্তি প্রয়োগ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করাই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এর আগেও বৃহত্তর খুলনা-যশোর-কুষ্টিয়া সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন (১ম পর্যায়) ২৪ কোটি ৩০ লাখ টাকায় বাস্তবায়ন হয়েছে। এ ছাড়া ১২৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মুজিবনগর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন শীর্ষক একটি প্রকল্পও বাস্তবায়ন হয়েছে।

এই প্রকল্পের আওতায় ২২০ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন করা, ১০৫টি বিদ্যুৎচালিত লো-লিফট পাম্প স্থাপন, সৌরশক্তিচালিত ২৫টি এলএলপি স্থাপন, ১২০টি সেচনালা নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ, ৪৮টি পুরাতন গভীর নলকূপের জন্য ভূগর্ভস্থ সেচনালা নির্মাণ, ২২৫টি পুরনো গভীর নলকূপের জন্য ভূগর্ভস্থ সেচনালা বর্ধিত করা, ১৬০টি সৌরশক্তিচালিত পাতকূয়া নির্মাণ, ৯০টি পাম্পহাউজ নির্মাণ, ৫০টি প্রি-পেইড মিটার কেনা, ২৩৫টি বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ এবং দু’টি অফিস নির্মাণ করা হবে।

ব্যয় পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রতি ব্যাচে ৮ জন করে তিন ব্যাচে ২৪ জন কর্মকর্তা বিদেশে যাবেন। এটাকে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বা শিক্ষা সফর বলা হয়েছে। যার জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এখানে মাথাপিছু ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ লাখ টাকা। আর প্রকল্পে সিল ও স্ট্যাম্প খাতে ব্যয় হবে ৩৫ লাখ টাকা। ২০ জন শ্রমিকের মজুরি ধরা হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। জনপ্রতি ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। ৪০ জন থেকে নিরাপত্তা সেবা নিতে ব্যয় হবে ৪ কোটি ৮৮ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এখানে মাথাপিছু ব্যয় ১২ লাখ ২১ হাজার ৮০০ টাকা।

সেচ অনুবিভাগের যুগ্ম-প্রধান আবদুল আজিম চৌধুরী কার্যপত্র প্রতিবেদনে প্রকল্প সম্পর্কে বলেছেন, পিপিআর যথাযথভাবে অনুসরণপূর্বক প্রকল্পের ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। ক্রয় কার্যক্রম যথাসম্ভব ওটিএমে দেখানো প্রয়োজন। এমনকি প্রকল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যয়ের পরিমাণ যৌক্তিক পর্যায়ে নেই। এসব যৌক্তিক পর্যায়ে করার জন্য বলা হয়েছে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/472832/