১৬ জানুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ১:৫৭

টাকায় কেনা দুর্ভোগ

টেলিযোগাযোগে মানহীন সেবা

থ্রিজি-ফোরজির পর এখন ফাইভজি যুগে প্রবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। তথ্য-প্রযুক্তির মহাসড়ক গড়ে তোলা এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এগিয়ে যেতে চাইছে সরকার। অগ্রসরমান বিশ্ব প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে অবকাঠামো গঠন, জনসম্পদ তৈরি, ডিজিটাল প্রযুক্তির উদ্ভাবন, প্রযুক্তির আধুনিক সংস্করণের সাথে জনগণের সেতুবন্ধন সৃষ্টির লক্ষ্যে নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ ও সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু যাদের জন্য এই আয়োজন সেই গ্রাহকরাই সব সময় বঞ্চিত হচ্ছেন কাক্সিক্ষত সেবা থেকে। টাকা দিয়ে ফোরজি সেবা কিনে অভিজ্ঞতা পাচ্ছেন টুজি-থ্রিজির। মোবাইল ফোন অপারেটর এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের (আইএসপি) নিম্নমানের সেবার কারণে প্রতিদিনই শত শত অভিযোগ জমা পড়ছে বিটিআরসিতে। হাজারো অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ফেইসবুক পেজে। অথচ ফোরজির লাইসেন্স দেয়ার সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার অপারেটরদের মানসম্মত সেবা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মানুষ তাদের কষ্টার্জিত অর্থের বিনিময়ে নিরবচ্ছিন্ন সেবা চায়। গুণগত মানহীন সেবা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। মোবাইলে কথা বলার সময় কল কেটে যাওয়াসহ নানা বিড়ম্বনার সমালোচনা করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, গ্রাহকের তুলনায় অপর্যাপ্ত নেটওয়ার্কের কারণে এ সংকট।

একের পর এক প্রজন্মের প্রযুক্তিতে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ কিন্তু টেলিযোগাযোগ সেবার মান নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে গ্রাহকদের। ফোরজি’র কথা বলে টুজি ইন্টারনেট সেবা, কথা বলতে গেলেই কলড্রপ, মিউট (সংযোগ সচল থাকে কথা শোনা যায় না) কলের বিরক্তিকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছেন প্রায় সব মোবাইল ফোন গ্রাহকই। টাকা ব্যয় করে নিম্নমানের সেবা পাওয়ায় জাতীয় সংসদেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপি। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি গ্রাহকদের। আগের মতোই ধীরগতির ইন্টারনেট, পাঁচ মিনিট কথা বললে কলড্রপ ও মিউট কলের শিকার হওয়ার অভিযোগ করছেন তারা। মাঝে মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে। বিটিআরসির জরিপেই ওঠে এসেছে, ফোরজি সেবায় মানসম্মত যে গতিসীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে তিন অপারেটর (গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক)। কোন অপারেটরেই গতিসীমা নেই বেঞ্চমার্কের ধারের কাছে। কল সেটআপেও ব্যর্থতার বৃত্তে তিনটি অপারেটর (গ্রামীণফোন, বাংলালিংক ও টেলিটক)। আর কলড্রপে বেঞ্চমার্কে নেই গ্রামীণফোন। বিটিআরসির সর্বশেষ ‘কোয়ালিটি অব সার্ভিস (কিউওএস) ড্রাইভ টেস্টের’ প্রতিবেদনে জানা যায়, কলড্রপে সর্বোচ্চ হার ২ শতাংশ, পরীক্ষায় অন্য তিন অপারেটর উত্তীর্ণ হলেও গ্রামীণফোন ব্যর্থ হয়েছে। গ্রামীণফোনের কলড্রপের হার ৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ। যেকোন কল করার ক্ষেত্রে ৭ সেকেন্ডের মধ্যে সেই কল সংশ্লিষ্ট নম্বরে পৌঁছে যাওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু রবি ছাড়া বাকি তিন অপারেটরই বেশি সময় নিচ্ছে। থ্রিজি ইন্টারনেটে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক বেঞ্চমার্ক স্পিড দিতে পারলেও ব্যর্থ হয়েছে টেলিটক। আর এই পরীক্ষায় টেলিটকের ফোরজি পরীক্ষা না হলেও অন্য তিন অপারেটরই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। কোয়ালিটি অব সার্ভিসের বেঞ্চমার্ক অনুযায়ি, থ্রিজিতে ডাউনলোডের সর্বনিম্ন গতি ২ মেগাবাইট প্রতি সেকেন্ড (এমবিপিএস) আর ফোরজিতে ডাউনলোডের সর্বনিম্ন গতি হওয়ার কথা ৭ মেগাবাইট প্রতি সেকেন্ডে (এমবিপিএস)। থ্রিজিতে টেলিটক ছাড়া অন্য তিন অপারেটরের গতি ৩ এমবিপিএসের ওপরে হলেও টেলিটকের গতি ১ দশমিক ৬৩ এমবিপিএস। অন্যদিকে ফোরজিতে কোন অপারেটরই নির্ধারিত এই মান পূরণ করতে পারেনি।

প্রযুক্তিতে অগ্রসরমান দেশগুলোর তথ্য থেকে জানা যায়, সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়াতে গ্রাহকরা ফোরজির ডাউনলোড স্পিড পাচ্ছেন ৪০এমবিপিএস। পার্শ¦বর্তী দেশ শ্রীলংকায় ফোরজি স্পিড ১৩ দশমিক ৯৫ এমবিপিএস, পাকিস্তানে ১৩ দশমিক ৫৬, মিয়ানমারে ১৫ দশমিক ৫৬ এবং ভারতে ৬ এমবিপিএস। বাংলাদেশে ফোরজি লাইসেন্স দেয়ার সময় অপারেটরদেরকে ২০ এমবিপিএস সেবা দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। পরবর্তীতে সেটি সর্বনিম্ন ৭ থেকে ১০ এমবিপিএস স্পিড নির্ধারণ করে দেয়া হয়। কিন্তু সেই সর্বনিম্ন ইন্টারনেটের গতিও পাচ্ছেন না দেশের গ্রাহকরা। ১৮ জেলায় বিটিআরসি পরিচালিত সর্বশেষ টেস্ট ড্রাইভে দেখা যায়- বরিশালে গ্রামীণফোনের স্পিড ৫ দশমিক ১ এমবিপিএস, রবির ৪ দশমিক ৮৯, বাংলালিংকের ৩ দশমিক ৫৬ এমবিপিএস। রংপুরে গ্রামীণফোনের ৬ দশমিক ৮৮ এমবিপি, রবির ৬ দশমিক ৫১, বাংলালিংকের ৪ দশমিক ৬৮ এমবিপিএস। রাজশাহীতে গ্রামীণফোনের ৬ দশমিক ৬৯ এমবিপিএস, রবির ৬ দশমিক ৭৫, বাংলালিংকের ৫ দশমিক ১ এমবিপিএস। খুলনায় গ্রামীণফোনের ৪ দশমিক ৬৩ এমবিপিএস, রবির ৫ দশমিক ৩৯ এবং বাংলালিংকের ৪ দশমিক ৯৬ এমবিপিএস।

মুঠোফোন গ্রাহকদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহীউদ্দিন আহমেদ বলেন, টেলিযোগাযোগ সেবার কোয়ালিটি অব সার্ভিস সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। এর অন্যতম কারণ অপারেটরদের গ্রাহক অনুপাতে তরঙ্গ কম থাকা। ফলে গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনা, কলড্রপ, ডাটা ব্যবহারে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, গ্রামীণফোনের ৩৭ মেগাহার্টজ তরঙ্গ দিয়ে সেবা দিচ্ছে ৭ কোটি ২৫ লাখ গ্রাহককে। প্রায় ২০ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে ১ মেগাহার্টজ তরঙ্গ। রবির ৩৬ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গের বিপরীতে গ্রাহক প্রায় ৪ কোটি ৮০ লাখ। প্রায় ১৪ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে ১ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বাংলালিংকে ৩ কোটি ৮০ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে তরঙ্গ আছে ৩০ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ তরঙ্গ। প্রায় ১৩ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে ১ মেগাহার্টজ তরঙ্গ। টেলিটকের ৩৮ লাখ ৮৩ হাজার গ্রাহকের বিপরীতে তরঙ্গ আছে ২৫ দশমিক ২ মেগাহার্টজ। প্রায় ৪০ হাজার গ্রাহকের বিপরীতে ব্যবহৃত হচ্ছে ১ মেগাহার্টজ তরঙ্গ। অথচ ১ মেগাহার্টজ তরঙ্গের বিপরীতে গ্রাহক শ্রীলঙ্কায় ২ লাখ ৭০ হাজার, পাকিস্তানে ১ লাখ ৪০ হাজার, আফগানিস্তানে ২ লাখ ৯০ হাজার, নেপালে ৫ লাখ ২২ হাজার, মালয়েশিয়ায় ২ লাখ, অস্ট্রেলিয়ায় ১ লাখ ২০ হাজার, জার্মানিতে ৩ লাখ ৯৯ হাজার। অন্যদিকে দেশের খুবই কম তরঙ্গ ব্যবহার করে গ্রাহক সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

যদিও ফোরজি চালুর আগে বলা হয়েছিল চতুর্থ প্রজন্মের (ফোর–জি) প্রযুক্তি চালু হলে দেশে টেলিযোগাযোগ সেবার মান বাড়বে। গ্রাহকেরা আগের চেয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পাবেন। পাশাপাশি উঁচু ভবনে, ঘরের কোনায়, পার্কিংয়ের মতো জায়গায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ভালোভাবে পাওয়া যাবে। কারণ, যেকোনো বেতার তরঙ্গ দিয়ে মোবাইল ফোন অপারেটররা এখন ফোরজি ও অন্যান্য টেলিযোগাযোগ সেবা দিতে পারবে। একাধিক তরঙ্গ ব্যবহার করে ফোরজি সেবা দেওয়া হবে, যা ভবনের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু ফোরজি সেবা চালুর পর থেকে গ্রাহক অভিযোগ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সেবার মান নিয়ে গতবছর বিটিআরসি আয়োজিত গণশুনানিতেও অপারেটরগুলোর বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ছিল গ্রাহকদের।

গ্রাহক অভিযোগ দ্বিগুণ: মোবাইল সংযোগ, নেটওয়ার্ক সমস্যা, মানসম্পন্ন সেবা, ট্যারিফ ইস্যু এবং মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলি (এমএনপি) বিষয়ে গতবছরে বিটিআরসিতেই অভিযোগ জমা পড়েছে ১৪ হাজার। যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এর মধ্যে মাত্র ৩৭ শতাংশ অভিযোগের সমাধান করা হয়েছে। বাকী গ্রাহকরা অভিযোগ করেও তাদের দুর্ভোগের বিষয়ে কোন সমাধান পাননি। মোট অভিযোগের প্রায় ৪০ শতাংশই বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর রবির বিরুদ্ধে। গ্রাহক সংখ্যায় দ্বিতীয় এই অপারেটরের বিরুদ্ধে বিটিআরসিতে অভিযোগ করেছেন ৫ হাজার ৬৪৬ জন গ্রাহক। যার মধ্যে ২ হাজার ৫৪১টির সমাধান করেছে কমিশন। একইভাবে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ৩ হাজার ৬৩০টি, সমাধান হয়েছে মাত্র ৯৮৬টির, বাংলালিংকের বিরুদ্ধে ১ হাজার ৪৮৮টি এবং সমাধান হয়েছে ৭৭২টি, টেলিটকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ১ হাজার ৩৬৩টি এবং সমাধান ১৩৮টির, বিটিসিএলের বিরুদ্ধে ৫৯টি অভিযোগ থাকলেও একটিরও সমাধান হয়নি, আইএসপির বিরুদ্ধে ১৭০টি অভিযোগের সমাধান হয়েছে ৪টি এবং অন্যান্য অভিযোগ ১ হাজার ৬৮১টি যার মধ্যে সমাধান হয়েছে ৭৮১টির।
মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ- উচ্চমূল্য পরিশোধ করেও নর্ধারিত সেবা পাচ্ছেন না তারা। প্রতিনিয়তই গ্রাহকরা কথা বলতে গিয়ে কলড্রপ, মিউট কল, কল সেটআপে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা এবং ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে ধীরগতি, অব্যবহৃত ডাটা পরবর্তীতে যোগ না হওয়া, টাকা কেটে নিয়ে ডাটা না দেয়া, ফোরজি’র দামে ডাটা কিনে টুজি ও থ্রিজিতে ব্যবহারের অভিজ্ঞতা পাচ্ছেন। এমন নিম্নমানের সেবার বিরুদ্ধে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি, গ্রামীণফোন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জমেছে অভিযোগের পাহাড়। এমনকি জাতীয় সংসদেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী-এমপিরা।

বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, গ্রাহকের সর্বাধিক অভিযোগ কলড্রপ নিয়ে। তারা বলছেন, কাউকে কল দেওয়ার পর ঠিকমতো কথা বলা যায় না কিংবা এক প্রান্তের গ্রাহক কথা শুনলেও অন্যপ্রান্তের গ্রাহক শুনতে পান না। ফলে পুনরায় কল করতে হয় এবং গচ্ছা যায় অতিরিক্ত অর্থ। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন আরেক বিড়ম্বনা মিউট কল। এই কলে সচল থাকে নেটওয়ার্ক, হ্যান্ডসেটের পর্দায় এয়ারটাইম মিনিট গতিশীল থাকে, কিন্তু শোনা যায় না কথা তবে পরিশোধ করতে হয় বিল। এ ছাড়া ইন্টারনেটের গতি নিয়ে প্রতারণা, ইন্টারনেট ঠিকমতো কাজ না করলেও বিল কেটে রাখা, বিভিন্ন প্যাকেজ একবার চালু হওয়ার পর আর বন্ধ না হওয়া, এসএমএসের যন্ত্রণা, নেটওয়ার্কের আসা-যাওয়া, স্থানে-স্থানে কভারেজ না থাকা, বিভিন্ন ট্যারিফ/প্যাকেজ বিল নিয়ে প্রতারণা সংক্রান্ত আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা যেন নেই।

আইএসপি সেবায় হ য ব র ল অবস্থা: বিটিআরসির তথ্য অনুয়ায়ি সারাদেশে এখন ইন্টারনেট সেবা প্রদান করছে লাইসেন্সধারী এক হাজার ৭০০ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি)। অভিযোগ রয়েছে বাজারের সক্ষমতা যাচাই না করেই একের পর এক আইএসপি লাইসেন্স প্রদান করা হচ্ছে। যা এখনো অব্যাহত। যেখানে পুরনো ও বৈধ লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানগুলোই টিকে থাকার লড়াই করছে সেখানে একের পর এক লাইসেন্স প্রদান এবং অবৈধ আইএসপিদের কারণে কোনঠাসা আইএসপি ব্যবসায়ীরা। মহল্লায় মহল্লায় ক্ষমতাসীন দলের পরিচয় দিয়ে অবৈধ আইএসপি ব্যবসায়ীরা বৈধ ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় পার্টনারশিপ দাবি, মাসিক চাঁদা নির্ধারণসহ হয়রানি ও হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আইএসপি ব্যবসায়ীদের সংগঠন ইন্টানেট সার্ভিস প্রোভাইডার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক বলেন, লাইসেন্স যাদের আছে, বিটিআরসির নীতিমালা অনুয়ায়ী তারাই ব্যবসা করবে। নতুন যারা ব্যবসা করতে চায় তারা লাইন্সে নিয়ে, সরকারের আইনকানুন মেনে ব্যবসায় আসতে পারে। কিন্তু পেশী শক্তি দিয়ে বা ক্ষমতা আছে, শক্তি আছে এটি দেখিয়ে আমি থাকবো, অন্য কাউকে ব্যবসা করতে দিব না, বের করে দেবো এটা যেনো না হয়।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, মোবাইলের সেবার মান যে নেমেছে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে সেটি যে অসহনীয় সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। দুটি বড় অপারেটর স্পেকট্রাম বা নেটওয়ার্ক স¤প্রসারণে কোন উদ্যোগই গ্রহণ করেনি। তারা তাদের মুনাফা বাড়াচ্ছে অথচ তাদের যে পরিমাণ স্পেকট্রাম ও বিটিএস দরকার তা মোটেই নেই। যেহেতু অন্য দুটি অপারেটর বাজার দখল, নেটওয়ার্ক বা সেবার মানে বড় দুটির চাইতে শক্তিশালী নয়, সেহেতু আমরা যে কারণে এমএনপি নীতি করেছিলাম এবং মোবাইলের একটি একক মূল্য নির্ধারণ করেছিলাম, তা তেমনভাবে কাজে লাগেনি। বরং সেটি বড় দুই অপারেটরের পক্ষেই গেছে। এসবের অন্যতম সমাধান হচ্ছে টেলিটকসহ দুর্বল অপারেটরদের সক্ষমতা বাড়ানো। আমরা টেলিটককে শক্তিশালী করার জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছি। আশা করি টেলিটক শক্তিশালী হলে মোবাইল বাজারের একচেটিয়া দাপট থাকবে না। আমার বিশ্বাস মোবাইল অপারেটর বিষয়ক এসব জটিলতা ২০২০ সালে সমাপ্তির শেষ রেখায় পৌঁছবে।

https://www.dailyinqilab.com/article/261219/