১৫ জানুয়ারি ২০২০, বুধবার, ২:১৫

হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত নগরজীবন

দুপুর অবধি কুয়াশা

মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। ঢাকাসহ দেশের অনেক জায়গায় ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে হিমেল হাড় কনকনে হাওয়া বইছে। কয়েকদিন ধরে আকাশ পথে ফ্লাইট বিলম্বিত হচ্ছে। বিমানযাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকাসহ প্রায় সারাদেশে তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। তবে মাঝরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়ছে। এ কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছয়টি ফ্লাইট কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘুরে দীর্ঘ প্রায় চার থেকে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে গন্তব্যে আসে।

তাছাড়া সারাদেশে সড়ক-মহাসড়ক, রেল ও নৌপথে যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে কুয়াশার বাধার কারণে। এতে ঝুঁকিও বেড়ে গেছে। নৌপথে পণ্য আনা নেয়া ব্যাহত হচ্ছে। কুয়াশার কারণে দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের আয় রোজগার বিঘিœত হচ্ছে। স্কুল-মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরমে।

গতকাল দুপুর পর্যন্ত দেশের অনেক জায়গায় সূর্যের দেখা মিলেনি। টানা কুয়াশাপাতের কারণে রোগব্যাধি বেড়ে গেছে। তবে সার্বিক তাপমাত্রা ছিলো সহনীয় পর্যায়ে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা উত্তরের জনপদ তেঁতুলিয়ায় ৭.২ এবং সর্বোচ্চ টেকনাফে ২৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৪ এবং সর্বনিম্ন ১২.৭, চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ২৪ এবং সর্বনিম্ন ১৪.২ ডিগ্রি সে.। দশ ডিগ্রির নীচে অর্থাৎ শৈতপ্রবাহের পর্যায়ে গতকাল তাপমাত্রা ছিলো- রাজশাহী, ঈশ্বরদী, বদলগাছী, দিনাজপুর, সৈয়দপুর, ডিমলা, রাজারহাট, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায়।

তবে ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ স্থানে দিনের তাপমাত্রা ২৪ থেকে ২৬ ডিগ্রি সে. থাকায় সূর্যের তেজ ছিলো স্বস্তিদায়ক। অনেক জায়গায় কুয়াশার কারণে সূর্য মাটিতে উষ্ণতা ছড়াতে পারেনি।

আজ বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ রাজশাহী, রংপুর বিভাগের উপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তবে তা কিছু এলাকায় কমে গিয়ে কিছু এলাকায় অব্যাহত থাকতে পারে।

সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। তবে এরপরের ৫দিনে রাতের তাপামাত্রা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। ঢাকায় উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে হিমেল হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।

হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নগরবাসীর স্বাভাবিক জীবন। মাঘ মাসের প্রথম দিনেই তীব্র শীত নেমেছে রাজধানী ঢাকায়, সঙ্গে ঘন কুয়াশা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে উত্তরের হিমেল হাওয়া। তাই প্রচÐ শীতে চরম বিপাকে পড়েছে কর্মজীবী মানুষ।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, পৌষের শেষ কয়েকদিন থেকেই পাল্লা দিয়ে কমছিল তাপমাত্রা। রাত এবং দিনের তাপমাত্রায়ও ব্যবধান কমছে দ্রæত। এছাড়াও দেশের অনেক জায়গার মতো ঢাকাতেও কুয়াশার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থা চলবে আরও কয়েকদিন।

আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, গতরাতে তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেলেও অনুভ‚তিতে কোনো তারতম্য হয়নি। একইভাবে গতকালের তুলনায় আজ দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। যদিও ঠাÐা অনুভূত হবে একই রকম। বিকেল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা থাকবে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।

উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

https://www.dailyinqilab.com/article/260984/