১২ জানুয়ারি ২০২০, রবিবার, ১১:০৫

শেষ বেলায় পৌষের শীত

দেশের বিভিন্ন স্থানে দু-একদিনে শৈত্যপ্রবাহ

পৌষের বিদায়লগ্নে আবার জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত। মৌসুমের শুরুর দিকে দফায় দফায় বয়ে যায় শৈত্যপ্রবাহ। এরপর কিছু দিনের বিরতি ছিল। এখন আবার শুরু হয়েছে শীতের প্রকোপ। এটা দু-একদিনে শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিতে পারে। যা মাঘের শুরুতে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহে পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ (বিএমডি)।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, শীতের অনুভূতি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বেশি ভূমিকা রাখছে শীতল বায়ুর প্রবাহ। শনিবার সারা দিন ঢাকায় সূর্যের মুখ দেখা যায়নি ঘন কুয়াশার কারণে। দেশের আরও বেশকিছু এলাকায় শীতের একই পরিস্থিতি ছিল। অপরদিকে উচ্চবলয় পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলাদেশের তৎসংলগ্ন পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এসব কারণে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা হ্রাস পেয়েছে। এটা আরও অব্যাহত থাকতে পারে।

শনিবার সকাল ৯টায় দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ঈশ্বরদীতে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। আর তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে মাঝারি ও ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গেলে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। সেই হিসাবে দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ নেই। তবে দু-একদিনের মধ্যেই দেশে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে যেতে পারে।

বিএমডির আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া উচ্চচাপ বলয়ের বিস্তার বাংলাদেশেও বিস্তার লাভ করেছে। শীতল বাতাসের প্রবাহ অব্যাহত আছে। ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। এসব কারণে ধরণী কিছুটা শীতল আছে। আগামী ৩-৪ দিন এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। এতে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে।

ডায়রিয়াসহ শ্বাসকষ্টের রোগীর ভিড় হাসপাতালে : শেরপুর প্রতিনিধি জানান, রাতে ও দিনে কনকনে হাওয়া, মাঝারি- ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে শেরপুরের জনজীবনের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। ঠাণ্ডার কারণে বাড়ছে রোগ-বালাই। শীত ও ঠাণ্ডার কারণে শিশু ও বৃদ্ধরাই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। রোগে আক্রান্তরা ছুটছেন হাসপাতালে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৪ জন শিশু ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ১৬ জন বয়স্ক ও শিশু ভর্তি হয়েছে। এখন শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৭১ জন। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় ৫৫ জন এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ১৬ জন। এছাড়া হাসপাতালের আউটডোরে আরও অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। ভর্তিকৃতদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু।

জেলা সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, পর্যাপ্ত সংখ্যক শয্যা না থাকায় অনেকেই মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হঠাৎ করে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগী বেড়ে যাওয়ায় ডাক্তার ও নার্সদের তা সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। এদিকে গত এক সপ্তাহে ভর্তি ছাড়াও আউটডোরে অনেক ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য ঠাণ্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন।

শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. খায়রুল কবির সুমন জানান, শীতের কারণে শিশুদের ডায়রিয়া ও বড়দের অ্যাজমা রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। ডায়রিয়ায় শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। শিশু ও বড়সহ শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভর্তি রয়েছে ১৬ জন। শীত এবং শৈত্যপ্রবাহের কারণে হাসপাতালের আউটডোরেও রোগী বেড়ে যাচ্ছে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/news/265950/