৭ জানুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার, ১২:৪২

উত্তরাঞ্চলে হাড় কাঁপানো শীত : জনজীবন বিপর্যস্ত

শৈত্যপ্রবাহে দেশের উত্তরাঞ্চলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে রাজশাহী, পাবনা, কুড়িগ্রাম, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী কয়েক দিন এই শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। শীতের তীব্রতা ও নতুন নতুন এলাকায় শৈত্যপ্রবাহের বিস্তৃতি ঘটতে পারে বলেও আবহাওয়া অফিস আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) সংবাদদাতা জানান, তেঁতুলিয়ায় হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবনে দুর্ভোগ বেড়েছে। এবার মৌসুম শুরু থেকে তেঁতুলিয়ার প্রকৃতি যেন জানান দিচ্ছে তীব্র শীতের আবির্ভাব। তেঁতুলিয়ায় পৌষের শুরু থেকে ৫ থেকে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। গত শুক্রবার কিছু সময়ের জন্য সূর্যের আলোর দেখা মিললেও পরক্ষণে তা কালো মেঘে ঢেকে যায় এবং কোথাও কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়। গতকাল সোমবার সারাদিন তেঁতুলিয়ার আকাশে কোথাও সূর্যের আলো দেখা যায়নি। দিনভর ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের সাথে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ায় শীতের তীব্রতা আরো বেড়েছে। এতে মহান্দা নদীর প্রায় ৩০ হাজার পাথরশ্রমিকের জীবন-জীবিকা থমকে গেছে। এ ছাড়া জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত হয়েছে। এদিকে শীতের প্রকৌপ বৃদ্ধিতে রবিশস্য, বোরো-ইরি ধানের বীজতলা ক্ষতি হয়েছে। শীতজনিত রোগ সর্দিকাশি, জ্বর ও শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে।

তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: রহিদুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ৯ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে তাপমাত্রা ৩-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ বছর ভারী কোনো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আকাশে ঘন কুয়াশা আর ধুলাবালি জমে থাকার কারণে সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌঁছাতে পারছে না। ফলে ঠাণ্ডার প্রকৌপও কমছে না। গত বছর শীত ঋতুতে তেঁতুলিয়ায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে দেশে সর্বোচ্চ শীত অঞ্চলের রেকর্ড গড়ে।

নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, কয়েক দিন বিরতির পর রোববার থেকে নীলফামারীতে আবারো কনকনে ঠাণ্ডা ও হিমেল বাতাস বইছে। গত দুই দিন ধরে চলা দ্বিতীয় দফা হাড় কাঁপানো শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে এ জেলার খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষজন। অনেকে পেটের তাগিদে তীব্র শীত উপেক্ষা করে কাজে বের হলেও অনেকে আবার দিনভর বাড়িতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস সূত্র মতে গতকাল সোমবার নীলফামারীর সর্বনি¤œœ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শিবচর (মাদারীপুর) সংবাদদাতা জানান, ঘন কুয়াশার কারণে সারারাত বন্ধ থাকার পর গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। দীর্ঘ সময় ফেরি বন্ধ থাকায় মাঝ পদ্মায় ও ঘাট এলাকায় আটকে পড়ে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা ভোগান্তি পোহান।

http://www.dailynayadiganta.com/last-page/470239/