৩০ ডিসেম্বর ২০১৯, সোমবার, ১১:০৬

একদিনে দেশের ৩ স্থানে ট্রেন দুর্ঘটনা

দেশের তিন জেলা কুমিল্লা, গাইবান্ধা ও মৌলভীবাজারে গতকাল রোববার পৃথক ট্রেন দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার কারণে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় একটি আন্তঃনগর ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

কুমিল্লা রেলস্টেশনের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত আলী মজুমদার জানান, নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী ‘ঢাকা এক্সপ্রেস’ ট্রেন রাত দেড়টার দিকে ব্রাহ্মণপাড়ার শশীদল রেলস্টেশনে পৌঁছলে ইঞ্জিনসহ এক ‘লাগেজ ভ্যান’ লাইনচ্যুত হয়।

পরে কুমিল্লার লাকসাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে দু’টি উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করলে ৭ ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রেলযোগাযোগ স্বাভাবিক হয় বলে জানান তিনি।

এর আগে, বগি লাইনচ্যুতির পর কুমিল্লা রেলস্টেশনে আটকা পড়ে ঢাকাগামী ‘তূর্ণা নিশীতা’ ও ‘ঢাকা মেইল’। দীর্ঘসময় অপেক্ষমাণ থাকায় ট্রেনগুলোতে থাকা যাত্রীদের তীব্র শীতের রাতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।

এ দিকে মৌভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচালে গতকাল সকাল ১০টায় মালবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হলে সিলেটের সাথে সারা দেশের রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে বেলা আড়াইটার দিকে উদ্ধারকাজ শেষ হলে রেলযোগাযোগ স্বাভাবিক হয় বলে জানান কুলাউড়া স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে সিলেটগামী মালবাহী একটি ট্রেন বরমচাল স্টেশনে প্রবেশের আগে হঠাৎ বিকট শব্দে একটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। ট্রেনের মধ্যখানের ওই বগিসহ পেছনের প্রায় ১০-১২টি বগি টেনে হিঁচড়ে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এতে রেললাইনের ২৫০ থেকে ৩০০টি স্লিপার এবং অর্ধ সহ¯্রাধিক ক্লিপ ভেঙে যায়। এক পর্যায়ে ট্রেন চালক ইঞ্জিন বন্ধ করেন।

‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনের সহ¯্রাধিক যাত্রী গতকাল ভয়াবহ দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। গাইবান্ধা রেলস্টেশনের কর্তব্যরত মাস্টার বীরেন চন্দ্র জানান, ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে গাইবান্ধার কামারপাড়া রেলস্টেশন ছেড়ে গাইবান্ধার দিকে আসছিল ট্রেনটি। পথিমধ্যে গাইবান্ধার ভেড়ামারা ব্রিজের কাছে ট্রেনের ১২টি বগির হুক ভেঙে আলাদা হয়ে যায়। পথিমধ্যে আটকা পড়ে যাত্রীসহ ১২টি বগি।

বগিগুলো উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে বাধ্য হয়ে ট্রেনটি চারটি বগি নিয়ে গাইবান্ধা রেলস্টেশনে পৌঁছায়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানানো হয়। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ইঞ্জিনসহ ট্রেনের চারটি বগি গাইবান্ধা স্টেশন থেকে আবারো ভেড়ামারায় বগিগুলো আনার জন্য রওনা হয় এবং রাত ৮টার পর বগিগুলো স্টেশনে পৌঁছে বলে জানান তিনি।

http://www.dailynayadiganta.com/last-page/468136/