১৪ নভেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১০:৫০

এমপিও ঘোষণার ২০ দিনের মাথায় নীতিমালা সংশোধনে কমিটি

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ২০ দিন যেতে না যেতেই, এর নীতিমালা সংশোধনে কমিটি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটিতে যারা এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন, তাদের নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই নীতিমালাটিকেও এখন স্থগিত করেছে মন্ত্রণালয়। ফলে, আলোচিত ওই নীতিমালাটি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে এবং তারই ভিত্তিতে ১০ বছর পর যে এমপিওভুক্তি হয়েছে, সেগুলো নিয়েও নানা কথা শুরু হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বঞ্চিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বলছেন, পুরো প্রক্রিয়াটিই একটি গোঁজামিলের মধ্যে হয়েছে। নীতিমালা করা হয়েছিল, যাতে খুব বেশি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হওয়ার যোগ্য না হয়। কিন্তু সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার থাকায় ১০ বছর পর দুই হাজার ৭৩০ প্রতিষ্ঠান এমপিওর আওতায় আনার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

এ দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে,নীতিমালা সংশোধনের পর চলতি অর্থবছরেই আবার আরো কিছু প্রতিষ্ঠানকে এমপিও দেয়া হতে পারে। সে লক্ষ্য নিয়েই নীতিমালাটির সংশোধনী আনা হচ্ছে। তবে, এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। জানা গেছে, নীতিমালা সংশোধনী কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলাও হয়েছে। নীতিমালা সংশোধনীগুলো অনুমোদন পেলে, আগামী জানুয়ারি/ফেব্রুয়ারিতে আবার আবেদন গ্রহণ করা হতে পারে। তার ভিত্তিতে এবারের বঞ্চিতরা সুযোগ পেতে পারেন।

গত ১২ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক শাখা ৩ থেকে উপসচিব কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বেসরকারি স্কুল ও কলেজের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো সংশোধনে কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে। বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার অতিরিক্ত সচিবকে কমিটির প্রধান করে কমিটিতে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, এনটিআরসিএ, ঢাকা বোর্ডের কর্মকর্তাদের সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। বেসরকারি মাধ্যমিক শাখা উপ-সচিবকে কমিটির সদস্যসচিব করা হয়েছে। ১০ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটিতে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশন সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার এবং সাধারণ সম্পাদক ড. বিনয় ভূষণ রায়কে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। কমিটি প্রয়োজনে সদস্য কো-অপট করতে পারবে। কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংস্কারের সুপারিশ করতে বলা হয়েছে।

এমপিও নীতিমালা-২০১৮ সংস্কারের কমিটি গঠন সম্পর্কে এমপিওর দাবিতে আন্দোলনকারী এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, নীতিমালাটি আসলেই ত্রুটিপূর্ণ ছিল। এ কথা শুরু থেকেই বলে আসছিলাম আমরা। কিন্তু আমাদের কথা কানেই নেয়নি মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন শীর্ষস্থানীয়রা। নতুন শিক্ষামন্ত্রীকে বিষয়টি বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, নীতিমালায় ত্রুটি থাকলে সংশোধনেরও সুযোগ আছে, যা ঘোষণা করা হয়েছে তা আগামীতে যোগ্যদের বিবেচনা করা হবে। তিনি বলেন, সংশোধন কমিটি করাই একটি ভালো উদ্যোগ।

http://www.dailynayadiganta.com/last-page/455976