২৪ অক্টোবর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১০:২৫

২২ জনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা ক্যাসিনো কাণ্ডে সম্পৃক্ততা

ক্যাসিনো ব্যবসায় সম্পৃক্তদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও সামশুল হক চৌধুরীসহ ২২ জনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ইমিগ্রেশনে পাঠানো চিঠিতে তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। অনুসন্ধান দলের প্রধান ও সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন এই চিঠি পাঠিয়েছেন। দুদক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

চিঠিতে বলা হয়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধানে বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। বিশ্বস্ত সূত্রে দুদক জেনেছে, অভিযোগসংশ্লিষ্টরা দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই তারা যাতে দেশ ছেড়ে যেতে না পারেন সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। যাদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী ছাড়াও রয়েছেন গ্রেফতার হওয়া কথিত যুবলীগ নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম, মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভূইয়া, মোহামেডান ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ মো: লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, তার সহযোগী এনামুল হক আরমান, কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুল আলম (ফিরোজ), অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান (মিজান)।

এ ছাড়াও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক এনু ও তার ভাই গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রূপন ভূইয়া, কেন্দ্রীয় যুবলীগের বহিষ্কৃত দফতর সম্পাদক কাজী আনিছুর রহমান ও তার স্ত্রী সুমি রহমান, লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার স্ত্রী নাবিলা লোকমান, গণপূর্ত অধিদফতরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো: আব্দুল হাই, ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের বিদেশ যাত্রায়।

নিষেধাজ্ঞা পাওয়াদের মধ্যে আরো রয়েছেন এনামুল হকের সহযোগী ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ (আজাদ রহমান), রাজধানীর কাকরাইলের জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো: জাকির হোসেন ও সেগুনবাগিচার শফিক এন্টারপ্রাইজের মালিক মো: শফিকুল ইসলাম।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, অনুসন্ধানে যাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যাবে তাদের সবারই বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে। আগামী কয়েক দিনে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবেন আরো অনেকে।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনো কাণ্ডে জড়িতদের সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এজন্য পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। পরে আরো দুইজনকে দলে যুক্ত করা হয়। অনুসন্ধান দলের সদস্যরা গণমাধ্যমে আসা বিভিন্ন ব্যক্তির নাম যাচাই-বাছাই করে একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করে। সংস্থার গোয়েন্দা শাখার পক্ষ থেকে এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। পাশাপাশি র্যাব ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধানেরা দুদক চেয়ারম্যানের সাথে বৈঠক করে বিস্তর গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেন।

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/450682/