১২ অক্টোবর ২০১৯, শনিবার, ২:২১

পেঁয়াজের অস্থিরতা কাটেনি বেড়েছে সবজির দামও

পেঁয়াজের দাম নিয়ে সৃষ্ট অস্থিরতা এখনো কাটেনি। নানামুখী তৎপরতার ফলে প্রথম পাইকারি পর্যায়ে এবং পরে খুচরায় দাম কিছুটা কমে এসেছে। কিন্তু সরবরাহ কম অজুহাতে নতুন করে পাইকারি বাজারে দাম বাড়তে থাকায় অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে নতুন করে। অন্য দিকে কিছু সবজির দাম সামান্য কমলেও নতুন করে বেড়েছে অধিকাংশ সবজির দাম। বিক্রেতারা আশা করছেন চলতি মাসের মধ্যেই শীতের সবজির সরবরাহ বাড়বে এবং দাম ধীরে ধীরে সহনীয় হয়ে আসবে।

গতকাল রাজধানী ঢাকার কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি। আর আমদানি করা মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে। কাগজে-কলমে আমদানি বন্ধ থাকলেও বাজারে ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা দুই দিন আগে ৫৫ টাকায় নেমেছিল। আর হাইব্রিড জাতের দেশী পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৭২ টাকা বিক্রি করতে দেখা যায়। এই দরও কয়েক দিন আগের তুলনায় কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেশি। একই হারে বেড়ে মিয়ানমারের পেঁয়াজ গতকাল পাইকারিতে বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৬২ টাকায়। ব্যবসায়ীদের দাবি, গত সপ্তাহের তুলনায় বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কম। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে। এ ছাড়া বন্দরে দীর্ঘদিন আটক থাকায় ভারত থেকে আমদানি করা অনেক পেঁয়াজ পচে গেছে। যার প্রভাব পড়েছে বাজারে।

এ দিকে বাজারে শীতের আগাম সবজি শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও মুলার পাশাপাশি বাজারে বেগুন, পটোল, ঢেঁড়স, ঝিঙা, করলার পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও সব ধরনের সবজির দাম বেশ চড়া। ফলে সরবরাহ বাড়লেও সবজির দামে ক্রেতাদের স্বস্তি মিলছে না। বিক্রেতারা জানান, সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় শীতের আগাম সবজি শিমের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। তবে কপির দাম কিছুটা কমেছে। ছোট আকারের একেকটি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা করে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া বাঁধাকপির দাম কমে গতকাল বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। দাম কমার এ তালিকায় আছে মুলাও। শীতের আগাম এ সবজিটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

কয়েক মাস ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া পাকা টমেটো ও গাজরের দাম এখনো চড়া-ই রয়েছে। পাকা টমেটো আগের সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। গাজর বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে লাউ, করলা, ঝিঙে, বরবটি, বেগুন, পটোল, ঢেঁড়স, ধুন্দলসহ সব ধরনের সবজি। ছোট আকারের একেকটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বরবটি। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। চিচিঙ্গা, ঝিঙে, ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখ যায়, রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, কাচকি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, ট্যাংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরু ও মহিষের গোশত বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা, খাসি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, লাল লেয়ার ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং পাকিস্তানি কক ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১১০ থেকে ১২০ টাকা।

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/447470/-