১০ অক্টোবর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১১:৫৩

’৭৩-এর অধ্যাদেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি

দেশ জাতি রাষ্ট্র

ড. আবদুল লতিফ মাসুম: প্রফেসর মুস্তাফা নুরুল ইসলাম এক সেমিনারে বলেছিলেন, ’৭৩-এর অধ্যাদেশ প্রণয়নের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদেরকে বলেছিলেন, ‘আমি তো দিলাম, তোরা এর মর্যাদা রক্ষা করতে পারবি তো?’ অধ্যাদেশটি প্রণয়নের পটভূমি যারা জানেন তারা ভালো করেই জানেন, পাকিস্তানের ‘অভ্যন্তরীণ উপনিবেশ’ আমলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হতো ব্রিটিশ আইন ও ঐতিহ্য অনুযায়ী। পাকিস্তানের শাসক এলিটরা দেশের সংবিধান রচনায় ‘মাত্র’ ৯ বছর সময় নিয়েছিলেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুনর্গঠনের সময় পাবেন কিভাবে? ব্রিটিশ ধারা অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সরকারের ‘একান্ত অনুগত ভৃত্য’ হিসেবেই বিবেচিত হতেন। রাজনীতি দূরের কথা, তারা বিবেকের স্বাধীনতা থেকেও ছিলেন বঞ্চিত। এমন অনেক উদাহরণ আছে, ছাত্রজীবনে সরকারবিরোধী বা বাম ধারার রাজনীতি করার কারণে অনেক মেধাবী ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারেননি। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য একটি নতুন প্রশাসনিক কাঠামো প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে; যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষকেরা ‘জাতি গঠন প্রক্রিয়ায়’ অংশগ্রহণ করতে পারেন। তাই ১৯৭৩ সালে প্রণীত অধ্যাদেশ ছিল কাক্সিক্ষত ও প্রয়োজনীয়। বঙ্গবন্ধু যথার্থ কাজটিই করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর আশঙ্কার যে আঁচ আমরা পেয়েছিলাম, স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশত বছর পর আজ তা অবশ্যই পরীক্ষণ ও পর্যালোচনার অবকাশ রাখে। একটি জাতির স্বাধীনতার পূর্বক্ষণে যে জাতীয় ঐক্য অর্জিত হয়, একটি ‘আমব্রেলা পার্টি’ এবং একক নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জনের পরে স্বাভাবিকভাবেই তার প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়। নতুন জাতির জন্য নতুন আশা-আকাক্সক্ষা ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। আমাদের অর্জিত স্বাধীনতার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, প্রাথমিক শাসক এলিটরা জাতির গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক আকাক্সক্ষাকে অগ্রাহ্য করেছিলেন। মওলানা ভাসানীসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ স্বাধীনতার পরপরই যে ‘জাতীয় সরকার’ গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন, তা একক কর্তৃত্বপ্রবণ আওয়ামী লীগ মেনে নিতে অস্বীকার করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনী ফলাফলকে আওয়ামী লীগ নিজেদের জন্য ম্যান্ডেট হিসেবে গ্রহণ করেছে।

সব ধরনের ভিন্নমত ও পথকে অবরুদ্ধ করা হয় তখন। বাম ঘরানার ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টি বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে বেশ প্রাধান্যশীল ছিল। ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি ভিয়েতনামবিরোধী মিছিলে গুলি বর্ষণের মধ্য দিয়ে মস্কোমুখী বামের প্রতি আওয়ামী লীগের বিরোধিতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই বামরা সম্ভবত মস্কোর নির্দেশনায় ‘অধীনতামূলক মিত্রতা’ গ্রহণ করেছিলেন। বাকশাল গঠনের মধ্য দিয়ে মস্কোপন্থীদের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জিত হলো। অপর দিকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ তীব্র সরকারবিরোধী ভূমিকা গ্রহণের কারণে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তবে পরবর্তীকালে জানা যায়, জাসদ ছিল ভারতেরই সৃষ্ট বিকল্প শক্তি। জাসদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু নিজে ‘লাল ঘোড়া দাবড়িয়ে দেয়ার’ কথা বলেছেন। ওই দুই বিপরীত ধারার রাজনীতি এবং ‘এক নেতা এক দেশ’ ভাবধারার কারণে স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে বুদ্ধিজীবীদের রাজনৈতিক ভূমিকা এক রকম শূন্যের কোঠায় পৌঁছে যায়। সুতরাং ’৭৩-এর অধ্যাদেশ ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সময়কালে শিক্ষকদের রাজনীতি করার অনুমতি দিলেও তা অর্থবহ বিরোধিতা সৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়। ১৯৭৫-পরবর্তী সময়কালে যেহেতু সামরিক সরকার বিদ্যমান ছিল। সুতরাং বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা সীমিত হয়ে আসে।

১৯৯০ সালে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বুদ্ধিজীবী তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আশা করা গিয়েছিল, এই গণতান্ত্রিক সময়কালে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষক তথা বুদ্ধিজীবীরা যথার্থ, প্রতিবাদী ও মানবিক আচরণ করবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, এসব বুদ্ধিজীবী সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য ভূমিকার লক্ষ্যে কাজ না করে বরং দলীয় রাজনীতিতে অংশীজন হয়ে ওঠে এবং তা এখন জনমত যাচাইয়ে তা নিকৃষ্টতর পর্যায়ে পৌঁছেছে। রাজনীতির যে নোংরা ও পাশবিক চেহারা আমরা দেখছি, বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে তা নাগরিক সাধারণকে রীতিমতো বিচলিত করে তোলে। সাধারণভাবে আশা করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রাজনৈতিক ডামাডোল, সন্ত্রাস সহিংসতা থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রথম থেকে এ পর্যন্ত রাজনীতি দ্বারা আকীর্ণ থেকেছে। ব্রিটিশ বা পাকিস্তান আমলে অধীনতামূলক মুক্তির কারণে রাজনীতির যৌক্তিকতা বোঝা যেত, কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী সময় এই যুক্তি আর ধোপে টেকে না। যারা চতুর রাজনীতিবিদ, তারা ক্রমাগতভাবে ছাত্রদেরকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। আর আদর্শের বুলি আওড়ানো আরেক দল রাজনীতিবিদ কথিত সমাজ বদলের নামে ছাত্রদের মগজ ধোলাই করে চলেছেন। এর অর্থ এটা নয় যে, দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিকেরা দায়িত্বের অনুশীলন করবে না অথবা আদর্শের দীক্ষা নেবে না। আমার বক্তব্য অত্যন্ত পরিষ্কারÑ তারা সীমা লঙ্ঘন করবে না। কিন্তু এখন তারা সীমা লঙ্ঘন করে চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তারা রাজনীতির আখড়া বানিয়ে ফেলেছে। লেখাপড়া গোল্লায় গেছে; আছে শুধু রাজনীতি। সকাল-সন্ধ্যা ছাত্ররা রাজনৈতিক ক্রিয়াকর্ম নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে। একদল শিক্ষার্থী রাজনীতিকেই তাদের নেশা ও পেশা বানিয়ে ফেলেছে। বছরের পর বছর নানা অজুহাতে তারা ছাত্রত্ব বজায় রেখেছে। গত ডাকসু নির্বাচনে এর প্রকৃষ্ট নমুনা মিলেছে। আর এখন তো ছাত্র রাজনীতি করার জন্য ছাত্রত্বেরও দরকার হয় না। ‘বাবা-চাচা’রা এখন বড় বড় দলের অনেক বড় ছাত্রনেতা। সে এক অদ্ভূত কালচার। আমার মূল বক্তব্য হচ্ছে, শিক্ষাঙ্গনকে রাজনীতিমুক্ত করা নয়, বরং একটি নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে সংযম ও সহিষ্ণুতার রাজনীতি এবং আদর্শের সীমারেখা নির্ধারণ করা। আর এ জন্য ’৭৩-এর অধ্যাদেশের প্রাসঙ্গিকতা।

১৯৭৩-এর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ নিয়ে কম আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়নি। সবাই অনুভব করেন, বঙ্গবন্ধুর উপরিউক্ত আশঙ্কা বাস্তবে পরিণত হয়েছে। আমাদের মতো দেশে স্বাধীনতার তাৎপর্য ও সীমারেখা বুঝে তার চর্চা করা বড় কঠিন বিষয়। এ দেশে স্বাধীনতার অর্থ হচ্ছে ‘লেইসেজ ফেয়ার’ বা অবাধ স্বাধীনতা। স্বাধীনতা স্বেচ্ছাচারিতায় পরিণত হচ্ছে। স্বাধীনতার অর্থ যে, ‘স্ব-অধীনতা’ তা এসব লোক বুঝতে অক্ষম। রুশোর সেই বিখ্যাত উক্তিটি সবাই জানেন, ‘ম্যান ইজ বর্ন ফ্রি, বাট এভরি হয়ার হি ইজ ইন চেইনস’; কিন্তু মানেন না কেউই। পৃথিবীর সর্বত্র সব সময় মানুষ কিছু আইন-কানুন, নিয়মনীতি, রীতি-রেওয়াজ, ভদ্রতা-সভ্যতা এবং শিক্ষা-সংস্কৃতি দ্বারা আবদ্ধ।

মানুষ ইচ্ছা করলেই সব কিছু করতে পারে না। তার বিবেকবুদ্ধি বিবেচনা দ্বারা পরিচালিত হতে হয়। ’৭৩-এর অধ্যাদেশ আমাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা দিয়েছে, দিয়েছে বিবেকের স্বাধীনতা। ৪৬ বছর ধরে অধ্যাদেশের যে বাস্তব অনুশীলন জাতির সামনে উপস্থাপিত হয়েছে তা মোটেই শুভ নয়। সামরিক শাসকেরা এটা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন। প্রকাশও করেছেন। কিন্তু ক্ষমতার মোহে তারা রদবদল করেননি। তারা আতঙ্কিত ছিলেন, ছাত্র-শিক্ষকেরা একবার ক্ষিপ্ত হলে ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না। দেশপ্রেম এবং জাতির ভবিষ্যৎ তাদের কাছে ক্ষমতার চেয়ে বড় হয়ে দেখা দেয়নি কখনো। অনাকাক্সিক্ষত ‘১/১১’-এর সময়কালে খুব জোরেশোরে ’৭৩-এর অধ্যাদেশ পরিবর্তনের কথা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু একই কারণে তখনো তা আলোর মুখ দেখেনি। আবার ১/১১-এর কুশীলবেরা ক্ষমতা কুক্ষিগতকরণের স্বপ্ন দেখছিলেন। সেই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আকস্মিক ঘটনা সেনাবাহিনীকে ভড়কে দেয়। এর আগে ১৯৯১ সালে বেগম খালেদা জিয়া সরকারের সময় বিষয়টি নিয়ে বেশ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বুদ্ধিজীবী সমাজ তথা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকমণ্ডলী নিজ নিজ দলীয় অবস্থান থেকে অধ্যাদেশটি ব্যাখ্যা করতে থাকেন। সরকারদলীয় লোকেরা পরিবর্তনকে ‘সময়ের দাবি’ বলে অভিহিত করেন। অপর দিকে, সরকারবিরোধীরা অধ্যাদেশটি সংস্কার ও পুনর্গঠনের মধ্যে ‘স্বাধীনতা হরণ ও গণতন্ত্রের সর্বনাশ সাধনের ষড়যন্ত্র’ আবিষ্কার করেন। ১৯৯২ সালের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তারেক ফজল বিষয়টি নিয়ে গবেষণার সূচনা করেন। এতে দেখা যায়, অধ্যাদেশটির পুনর্গঠন ও সংস্কার চান গরিষ্ঠ শিক্ষকেরা। তারা আরো স্বীকার করেন, অধ্যাদেশের অপব্যবহার ও অতিব্যবহার বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসনকে প্রশ্নের মুখোমুখি করেছে।

এ মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যে চেহারা-চরিত্র জনসমক্ষে প্রকাশ হচ্ছে, তাতে ’৭৩-এর অধ্যাদেশের কথা বারবার মনে পড়ছে। তিনটি পর্যায়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিশ্লেষণ করতে পারি। প্রথমত, একাডেমিক অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম ও গবেষণা। দ্বিতীয়ত, শিক্ষকদের সামগ্রিক অবস্থান এবং তৃতীয়ত শিক্ষার পরিবেশ। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বৈশ্বিক মানের প্রতিযোগিতায় তলানিতে পৌঁছেছে। শিক্ষকদের চাকরি এখন আর মেধার ওপর নির্ভর করে না। দলের পদ-পদবি এবং কোনো কোনো সময়ে অর্থের প্রতিযোগিতার ওপর নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি। সুতরাং তেঁতুল গাছ থেকে মিষ্টি আম খাওয়ার চিন্তা বৃথা যেতে বাধ্য। শিক্ষার পরিবেশের দুটো অঙ্গ- প্রশাসন ও প্রাঙ্গণ। ভাইস চ্যান্সেলররা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে যে নি¤œস্তরে পৌঁছে দিয়েছেন, তা থেকে উদ্ধার পাওয়া কঠিন। আর শিক্ষা প্রাঙ্গণ বা ক্যাম্পাস শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দ্বারা কলুষিত হয়ে গেছে অনেক আগেই। এরা এখন শিক্ষার পরিবর্তে চাঁদাবাজি ও অর্থকড়ি গোছানোতে ব্যস্ত। এমন কোনো শিক্ষাঙ্গন নেই যেখানে সন্ত্রাস, সহিংসতা ও পাশবিকতার ঘটনা ঘটছে না।

এসব কিছুর জন্য ’৭৩-এর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ একমাত্র কারণ না হলেও অনেক কারণের একটি। প্রথম থেকে যদি বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনীতির প্রতিযোগিতামুক্ত রাখা যেত, তাহলে এ শোচনীয় অবস্থা ঘটত না। শিক্ষকরাজনীতির সুযোগ না থাকলে সাদা, সবুজ, লাল বা নীলের প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয় হতো না ক্লেদাক্ত। ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশের সবটুকুই যে নেতিবাচক ফল প্রদান করছে- তা নয়। এই অধ্যাদেশ আমাদের চিন্তার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করেছে। বাংলাদেশে ‘শতফুল ফুটতে দিয়েছে’। এখন ভালো-মন্দের বিশ্লেষণে মন্দটুকু আমাদের সর্বনাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ’৭৩-এর অধ্যাদেশের বিষয়টি এতটাই সংবেদনশীল যে, বিগত সরকারগুলো এটি স্পর্শ করেনি। নিরপেক্ষ দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবীরা গরিষ্ঠ অংশের বিরূপ মনোভাবের কারণে সত্য প্রকাশ করেননি। এখন সময় এসেছে, বিষয়টি নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা করবার। মাথাব্যথা করে বলে মাথাটি কেটে দেয়ার কোনো অর্থ হয় না, তদ্রƒপ অধ্যাদেশটি বাতিল করে দিলে সব সর্বনাশের অবসান হবে- এ কথা বিশ্বাস করাও কঠিন। পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিবেচনায় অধ্যাদেশটির আশু সংস্কার প্রয়োজন। যারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিয়ে চিন্তা করেন, যারা দেশ-জাতি-রাষ্ট্রের কর্ণধার এবং যারা দেশের স্বার্থে ঝুঁকি নিতে চান- তারা অকপটে সত্য কথাটি বলুন, নির্ভয়ে এগিয়ে আসুন এবং সঠিক কাজটি করুন। জাতীয় কবি নজরুলের ভাষায় বলি-‘চক্ষে জ্বলুক জ্ঞানের মশাল, বক্ষে দেশপ্রেম।’ হ

লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com

http://www.dailynayadiganta.com/post-editorial/446904