১ অক্টোবর ২০১৯, মঙ্গলবার, ৭:০০

কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে পেঁয়াজ এখন ১২০ টাকা

এইচ এম আকতার : সিন্ডিকেটের কবল থেকে বেরুতে পারছে না পেঁয়াজের বাজার। ভারত থেকে আমদানি বন্ধ ঘোষণার পর ২৪ ঘণ্টায় দেশের বাজারে পেঁয়াজের দামে যেন আগুন লেগেছে। লাগামহীন পেঁয়াজের বাজার জনজীবনে নতুন অস্থিরতা। রাতারাতি দাম বেড়ে কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম ১২০ টাকা ছাড়িয়েছে। একদিনে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪০ টাকা। সরকার বলছেন, পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। দাম বাড়ালেই ব্যবস্থা। জনমনে প্রশ্ন আর কত বাড়লে ব্যবস্থা নেয়া হবে। লাগাম টেনে না ধরলে আরও বাড়তে পারে পেঁয়াজের দাম।

পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। গত রোববার এ সংবাদে দেশের বাজারে হু হু করে বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি বাজারে গতকাল সোমবার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে। ভারত ও মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। খুচরা বাজারে দেশি আর ভারতীয় পেঁয়াজের দামের কোনো ভেদাভেদ নেই। সব পেঁয়াজই এখন কেজিপ্রতি ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।

বাণিজ্য সচিব বললেন, পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। দাম বৃদ্ধির কোন কারণ নেই। যদি কেউ দাম বৃদ্ধি করে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। খোলা বাজারে রাজধানীর ৪০ টি স্থানে পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে। এতে করে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রনে আসবে বলে তিনি মনে করেন। রাজধানীতে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রনে আসলে সারা দেশে কিভাবে দাম কমবে। এর কোন উত্তর নেই তার কাছে।

পেঁয়াজের লাগামহীন দাম জনজীবনে অস্থিরতার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ক্ষুব্ধ ক্রেতাদের অভিযোগ, অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের বাজারে আগুন। আর বাজারে দাম বাড়ার প্রতিযোগিতায়ও এখন শীর্ষে রয়েছে পণ্যটি। কোরবানির ঈদের পর থেকে কয়েক ধাপে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের চোখে-মুখে ছিল অসন্তুষ্টির ছাপ।

গতকাল সোমবার সকালে কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) পেঁয়াজ ৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এক কেজি কিনতে হচ্ছে ১১০ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ ও অনেকটা দেশি পেঁয়াজের মতো দেখতে মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে এক পাল্লা ৪৫০ টাকায়। খুচরা বাজারে দাম আরও কিছুটা বেশি। বাজার ঘুরে দেখা গেল, অন্য সময়ের চেয়ে বাজারে পেঁয়াজের বিক্রেতা অনেক কম। অন্যদিকে ক্রেতারা সংখ্যায় অনেক বেশি।

কারওয়ান বাজারের মতো রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে রাতারাতি বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা আনোয়ার জানান, সকালে খুচরা বাজার থেকে ১২০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কিনেছেন তিনি। কোনো কোনো বিক্রেতা ১৩০ টাকা কেজিও চাইছিলেন। আগারগাঁওয়ের বাসিন্দা রহমান মিয়া জানান, ১২০ টাকার কেজির নিচে কোনো ধরনের পেঁয়াজই পাননি তিনি।

এদিকে রাতারাতি এত দাম বেড়েছে কেন জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের পাইকারি এক বিক্রেতা জানান, রোববার দুপুরের পরও প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৭২ টাকায়। সন্ধ্যায় তিনি ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছেন। গতকাল সকাল থেকে তিনি ১০৫ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, কাল দুপুরের পর থেকেই কেনা দাম বেশি পড়ছে। ফলে বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোববার রপ্তানি নীতি সংশোধন করে পেঁয়াজকে রপ্তানি নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। রপ্তানি বন্ধের ওই সিদ্ধান্ত রাতারাতি কার্যকর করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ থাকবে। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরটি গতকাল বেলা তিনটার দিকে ভোমরা ও সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আসে। তখনই বাংলাদেশের পথে থাকা সব ট্রাক আটকে দেয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। আর এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়তে সময় লাগেনি।
দেশের বাজারে চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকেই পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানিতে ন্যূনতম মূল্য টনপ্রতি ৮৫০ ডলার বেঁধে দেয়। এক দিন পর বাংলাদেশের বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বাড়ে প্রায় ১৫ টাকা। এরপর আরও কয়েক দফা দাম বেড়ে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭৫-৮০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। এর মধ্যে রোবার পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিল ভারত।

মূলতঃ ভারতের মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে বন্যার কারণে পেঁয়াজ উৎপাদন বড় ধাক্কা খেয়েছে। ফলে ভারতে পেঁয়াজের পাশাপাশি নিত্যপণ্যের দামও বেড়েছে। তাই অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরটি গতকাল বেলা তিনটার দিকে ভোমরা ও সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আসে। তখনই বাংলাদেশের পথে থাকা সব ট্রাক আটকে দেয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। আর এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়তে সময় লাগেনি।

এই মুহূর্তে দেশে পেঁয়াজের মজুদ ‘সন্তোষজনক’ পর্যায়ে রয়েছে এবং দাম নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই’ দাবি করে বাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দীন বলেছেন, কেউ বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করলে সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পরদিন সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিজের কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন সচিব। তিনি বলেন, দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজ মিলিয়ে মজুদ এখন ‘সন্তোষজনক’ পর্যায়ে রয়েছে।

এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। যারা পেঁয়াজের দর বাড়ানোর চেষ্টা করছেন, তাদের কোনো যুক্তি এখানে নেই। যারা মজুদ করবেন এবং বাজারকে অস্থির করার চেষ্টা করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। এখানে কম্প্রোমাইজ করার কোনো সুযোগ নেই।

দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বছরে ১৭ থেকে ১৯ লাখ টনের মত। চাহিদা পূরণ না হওয়ায় আমদানি করতে হয় ৭ থেকে ১১ লাখ মেট্রিক টন। স্বল্প দূরত্ব ও সহজলভ্যতার কারণে বেশিরভাগটা ভারত থেকে আসে।

কিন্তু বৃষ্টি ও বন্যায় এবার পেঁয়াজের ফলন মার খাওয়ায় ভারত সরকার গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৮৫০ ডলারে বেঁধে দেয়। ওই খবরে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম এক লাফে বেড়ে যায় ২০ থেকে ২৫ টাকা।

এরপর রোববার ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধের ঘোষণা দিলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ ছাড়িয়ে যায়। সকালে তা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়।কোথায় কোথায় বিকেলে বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে এসব দেখা কেউ নেই।
সচিব বলেন, ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে আমরা বসে নেই। এ নিয়ে আজ সকালেও বসেছিলাম। মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ নিয়ে দুটি জাহাজ ইতোমধ্যে বন্দরে ভিড়েছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে একটি জাহাজের পেঁয়াজ গতকাল খালাস হয়েছে। আর একটি জাহাজ আজ খালাস হবে। এছাড়া তুরস্ক ও মিশর থেকে পেঁয়াজ আনার প্রক্রিয়া চলমান। আসতে যতটা সময় লাগে।

সচিব জানান, দেশি পেঁয়াজের মজুদ পরিস্থিতি জানতে ১০টি দলকে দশ জেলায় পাঠানো হচ্ছে, এসব জেলা থেকেই বেশিরভাগ পেঁয়াজ আসে। এছাড়া স্থলবন্দরগুলোতেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা থাকবেন, যাতে দ্রুত পণ্য ছাড় করা হয়।

টিসিবিকে ইতোমধ্যে ৭৫টি ট্রাকে করে সারা দেশে পেঁয়াজ বিক্রির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, দ্রুতই এর সুফল পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। আমাদের মোবাইল কোর্ট রয়েছে। ভোক্তা অধিকার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ চারটি টিম কাজ করছে, মার্কেট মনিটরিং করছে।

ভবিষ্যতে যাতে পেঁয়াজ নিয়ে কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য কৃষি ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়কে সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, আমাদের ঘাটতি খুব বেশি না। যেহেতু আমরা খাদ্যে স্বয়ঃসম্পূর্ণ হয়েছি, কাজেই পেঁয়াজ, রসুন, আদা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদে পদক্ষেপ নিয়েছি। যাতে ভবিষ্যতে আমদানির দিকে তাকিয়ে থাকতে না হয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে ২৩ লাখ ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, একই বছর আমদানি হয়েছে প্রায় ১০ লাখ ৯২ হাজার টন।

পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের পেঁয়াজ-রসুন ব্যবসায়ী সমিতির নেতা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারত পেঁয়াজের রফতানি মূল্য তিনগুণ বাড়িয়ে দেয়। পরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৩৫-৪০ টাকা কেজি পেঁয়াজ দাম বেড়ে ৬০-৬৫ টাকায় ওঠে। কিন্ত গতকাল বিকেলে যখন বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর আসল ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে, তারপর থেকেই দাম বাড়তে থাকে।

কনজিউমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) জানায়, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ না থাকলে দাম ক্রমান্বয়ে আরো বাড়বে, আমদানিকারকদের আরো বেশি করে বিকল্প বাজার থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে উৎসাহিত করতে হবে।

বাজারদর নিয়ন্ত্রণে রাখতে ট্রাকে করে ৪৫ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এক বিজ্ঞপ্তিতে টিসিবি জানায়, সোমবার থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হবে পেঁয়াজ। এছাড়া চট্টগ্রামসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহরগুলোতেও পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পণ্য বিক্রি চলবে। তবে শুক্রবার বন্ধ থাকবে।
টিসিবি জানায়, একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ দুই কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারবেন। একজন ডিলার কেজি ৪৫ টাকা দরে প্রতিদিন এক হাজার কেজি (এক টন) পেঁয়াজ বিক্রি করবে।

১. সচিবালয়ের গেইট, ২. প্রেস ক্লাব, ৩. কাপ্তান বাজার, ৪. ভিক্টোরিয়া পার্ক, ৫. সায়েন্সল্যাব মোড়, ৬. নিউ মার্কেট/নীলক্ষেত মোড়, ৭. শ্যামলী/কল্যাণপুর, ৮. ঝিগাতলা মোড়, ৯. খামারবাড়ি, ফার্মগেট; ১০. কলমীলতা মোড়, ১১. রজনীগন্ধা সুপার মার্কেট, কচুক্ষেত; ১২. আগারগাঁও তালতলা ও নির্বাচন কমিশন অফিস, ১৩. রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স, উত্তরা; ১৪. মিরপুর-১ নং মাজার রোড, ১৫. শান্তিনগর বাজার, ১৬. মালিবাগ বাজার, ১৭. বাসাবো বাজার, ১৮. আইডিয়াল স্কুল, বনশ্রী; ১৯. বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বর, ২০. মহাখালী কাঁচাবাজার, ২১. শেওড়াপাড়া বাজার, ২২. দৈনিক বাংলা মোড়, ২৩. শাহজাহানপুর বাজার, ২৪. ফকিরাপুল বাজার ও আইডিয়াল জোন, ২৫. মতিঝিল বক চত্বর, ২৬. খিলগাঁও তালতলা বাজার, ২৭. রামপুরা বাজার, ২৮. মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বর, ২৯. আশকোনা হাজি ক্যাম্প, ৩০. মোহাম্মদপুর টাউনহল কাঁচাবাজার, ৩১. দিলকুশা, ৩২. মাদারটেক নন্দীপাড়া কৃষি ব্যাংকের সামনে ও পলাশী মোড়ে।

https://www.dailysangram.com/post/391356