২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, রবিবার, ২:০৮

পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা ছুঁতে পারে

পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা ছুঁতে পারে। ভারতে ইতোমধ্যে পেঁয়াজের কেজি ৫০ রুপি অতিক্রম করেছে। ভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া এই দামকে গত চার বছরের মধ্যে সর্Ÿোচ্চ বলে অভিহিত করেছে। গতকাল শনিবার রাজধুনীর বাজারে দেশী পেঁয়াজের কেজি ৮৫ টাকা উঠেছে। অন্য দিকে মাস খানেক আগে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বাজার ভেদে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, এ মাসের শুরুতে ভারত পেঁয়াজের প্রতি টন রফতানিমূল্য বাড়িয়ে ৮৫২ ডলার করেছে। এর আগে এটি ছিল ৪৫০ ডলার। বর্ধিত রফতানিমূল্য আরোপের কারণে পাইকারি পর্যায়ে পণ্যটির দাম কেজিপ্রতি ৮৫ টাকার নিচে বিক্রি সম্ভব হবে না। তাই দেশের বাজারে পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকায় পৌঁছতে পারে। আর নভেম্বর মাস আসার আগে পেঁয়াজের দাম কমারও সম্ভাবনা নেই। কারণ নভেম্বর মাসে দেশীয় পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু করবে। তখন বাজারে পেঁয়াজের দাম কমবে।
এ দিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত সপ্তাহে বৈঠক করে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমবে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা তো দূরের কথা, চার দিন কেটে যাওয়ার পরও পেঁয়াজের দাম তো কমেইনি, উল্টো বেড়েছে। গত মঙ্গলবার পেঁয়াজের দর নিয়ে এক বৈঠকের পর ট্যারিফ কমিশনের সদস্য আলবিরুনী বলেছিলেন, পেঁয়াজ সিজনাল এবং পচনশীল হওয়ায় আমদানি করতে হয়। আমাদের চাহিদা ২৪ লাখ টন। উৎপাদনও প্রায় ২৪ লাখ টন। কিন্তু পচনের কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সাড়ে সাত লাখ টন। এজন্য আমরা ১০ থেকে ১১ লাখ টন আমদানি করি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য দিয়ে ট্যারিফ কমিশনের এই সদস্য বলেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১২ লাখ টনের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে। আমাদের মজুদও সন্তোষজনক। আমদানির পর্যায়ে রয়েছে ৪০ হাজার টন। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশীয় নতুন পেঁয়াজ আসবে এবং ভারতেও এর এক মাস আগে নতুন পেঁয়াজ নামবে। তখন ভারত বেরিয়ার (বাধা) উঠিয়ে দেবে। ফলে তখন দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এটা নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু নেই।

তখন বাণিজ্যসচিব জাফর উদ্দিন বলেন, খুব শক্তভাবে বলতে চাই আমাদের মজুদ সন্তোষজনক। যেভাবে দাম বাড়ানো হচ্ছে, সেটা আশা করি থাকবে না আজকের মিটিংয়ের পরে।

দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করে বাণিজ্যসচিব বলেন, সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজের ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে দর বেশ বৃদ্ধি পায়। ফলে ভারত সরকার পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানিমূল্য টনপ্রতি ৮৫০ ডলার নির্ধারণ করে। আগে যেখানে ২৫০-৩০০ ডলারে আমদানি করা যেত, তা ৮৫০ ডলারে এসেছে এবং বাংলাদেশে পেঁয়াজের দরে ঊর্ধ্বগতি দেখা দেয়।

এ দিকে ভারত গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানিমূল্য তুলে নেয়। অভ্যন্তরীণ বাজারের সঙ্কট উল্লেখ করে ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানিমূল্য ৮৫২ ডলার নির্ধারণ করে। এর আগে জুন পর্যন্ত প্রতি টনের দাম ছিল ১৫০-২০০ ডলার। আর জুলাইয়ে দাঁড়ায় ৩৫০-৪০০ ডলার। নতুন দাম নির্ধারণ করায় ৩২-৩৬ টাকার পেঁয়াজের আমদানিমূল্য দাঁড়িয়েছে ৭২ টাকা। আগে এলসি করা পণ্য থেকেও নতুন মূল্য নেয়া হচ্ছে। এতে অনেকেই আমদানি বন্ধ রেখেছেন। দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/442021/