২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ১২:০০

ভোগান্তির শেষ কোথায়?

মতিঝিলে কাটা রাস্তায় গাড়ি পার্কিং বাণিজ্য

নগরীর ব্যস্ততম মতিঝিল, দিলকুশাসহ আশপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে পাইপ বসাতে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চললেও শেষ হওয়ার নাম নেই। কবে এসব কাজ পুরোপুরি শেষ হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই কারো কাছে। এদিকে, খোঁড়াখুঁড়ির সুযোগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রাস্তার উভয় পাশ দখল করে গাড়ি পার্কিং বাণিজ্য শুরু করেছে। ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অনেকে সিন্ডিকেট করে এ পার্কিং ব্যবসা করছে। এতে মতিঝিলসহ আশপাশের মানুষের ভোগান্তি ছাড়াও আশপাশের সড়কে সবসময় তীব্র যানজট লেগে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে থাকা অসহায় নগরবাসীর কেবল একটাই জিজ্ঞাসা এ ভোগান্তির শেষ কোথায়?

নিয়ম অনুযায়ী বছরের মে থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ঢাকার রাস্তা খনন করার নিয়ম না থাকলেও খোদ সিটি করপোরেশনই এ নিয়ম মানছে না। অন্যান্য সেবা সংস্থা আরও একধাপ এগিয়ে এ সময়ে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে ব্যস্ত থাকে। জলাবদ্ধতা নিরসনে পাইপ বসানোর জন্য এই খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু করা হলেও কাজ শেষ করা সংশ্লিষ্ট সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোন মাথাব্যাথা নেই।

মতিঝিল ও দিলকুশা এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ রাস্তায় বড় বড় গর্ত করা হয়েছে। এসব গর্ত খোঁড়ার পর মাটি এবং পিচ পাথরের বড় বড় খÐ এলোপাতাড়িভাবে রাস্তার ওপরই রাখা হয়েছে। একইভাবে সাড়ে পাঁচ ও তিন ফুট ব্যাসের পাইপ রাখা হয়েছে রাস্তার ওপরে। এর মধ্যেই রাস্তার উভয় পাশ দখল করেছে গাড়ি পার্কিং বাণিজ্য গড়ে তুলেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি রাখা ছাড়াও অনেকে সিন্ডিকেট করে গাড়ি পার্কিং বাণিজ্য গড়ে তুলেছে।

সরেজমিনকালে দেখা গেছে, রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি ও খোঁড়া রাস্তা দখল করে গাড়ি রাখার কারণে সকালে অফিসে আসা ও বিকেলে অফিস শেষে ফেরার সময় পুরো মতিঝিল এলাকা পরিণত হয় তীব্র যানজটের নগরীতে। কোন কোন রাস্তা দিয়ে ছোট যান তো দূরের কথা সাধারণ মানুষের পায়ে হেটে চলতেও কষ্ট হয়। এসব যেসব সড়কে গাড়ি চলছে সেখানেও গতি অনেক কম। রিকশা ও গাড়িতে থাকা বেশিরভাগ যাত্রীকেই চরম বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে। কাটা রাস্তার কারণে ধুলাবালু উড়ছে। ফুটপাথে থাকা অনেক দোকান মাঝ রাস্তার ওপরে বসানো হয়েছে। যার কারণে এসব সড়কের চাপ অন্য সড়কে পড়ায় আশপাশের সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির মৌসুম এই খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলার কারণে সৃষ্টি হয়েছে চরম জনদুর্ভোগ। এসব রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী অফিসগামী লোকজন, দোকানি, যাত্রী ও পথচারীদের দুর্ভোগ ও ভোগান্তির কোন শেষ নেই।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হলেও কবে নাগাদ এসব কাজ শেষ হবে সেটি জানা নেই কারো। রাস্তা কাটা থাকার কারণে রিকসা বা সিএনজি অটোরিকশা চালকরা অনেক বেশি টাকা ভাড়া নিচ্ছে। অনিচ্ছা সত্তে¡ও বেশি টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের।

স্থানীয়দের অভিযোগ, একবার খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হলে শেষ হওয়ার আর নাম থাকে না। যানজট ছাড়াও সামান্য বৃষ্টিতে পুরো এলাকা কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। তখন পায়ে হাটারও উপায়ও থাকে না। এছাড়া শুকনোর সময় ধুলাবালি উড়ার কারণে নাক চেপে হাটতে হয়। কোথাও ধীরগতিতে কাজ চললেও অনেক রাস্তার কাজ পুরোপুরি বন্ধ দেখা গেছে। তারা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ দ্রæত শেষ করার দাবি জানান।

এ বিষয়ে সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মতিঝিলসহ আশপাশের এলাকার জলাবদ্ধতা কমাতে পাইপ বসাতে এসব খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। বিভিন্ন ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান এসব কাজ করছে। তবে কত দিনের মধ্যে খনন ও পাইপ বসানোর কাজ পুরোপুরি শেষ হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাব কিছুই বলতে পারছেন না তারা।

https://www.dailyinqilab.com/article/235415/