৩০ আগস্ট ২০১৯, শুক্রবার, ৪:০৫

বিশ্বের পঞ্চম অনিরাপদ শহর ঢাকা: ইআইইউ

বিশ্বের সবচেয়ে অনিরাপদ শহরের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। লন্ডনভিত্তিক সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) এক সূচকে এমনটা বলা হয়েছে। ইআইইউ’র গত বছরের তালিকায় বিশ্বের তৃতীয়তম অনিরাপদ শহর হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হয়েছিল ঢাকা। এক বছরে দুই ধাপ উন্নতি হয়েছে শহরটির। এনইসি করপোরেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি ইআইইউ’র প্রতিবেদনে এমনটা জানানো হয়েছে।

বিশ্বের নিরাপদ শহর সূচক ২০১৯ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে অনিরাপদ শহর নাইজেরিয়ার লাগোস। তালিকায় এরপরে যথাক্রমে রয়েছে ভেনিজুয়েলার ক্যারাকাস, মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন, পাকিস্তানের করাচি, বাংলাদেশের ঢাকা, মিশরের কায়রো, মরেক্কোর ক্যাসাব্ল্যাংকা, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ও ভারতের নয়াদিল্লি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের ৬০টি শহরের ডিজিটাল, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিষয়ক সূচক মূল্যায়ন করে তালিকাটি তৈরি হয়েছে। সূচকে প্রাপ্ত তথ্যগুলো বিশেষজ্ঞরা বৃহৎ পরিসরে গবেষণা ও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে যাচাই করে তালিকাটি তৈরি করেছেন।

তালিকায় নিরাপদ শহর হিসেবে শীর্ষস্থানে রয়েছে যথাক্রমে- জাপানের টোকিও, ওসাকা, সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ডসের অ্যামস্টারডাম, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, কানাডার টরন্টো, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি, ডেনমার্কের কোপেনহেগেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ও অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন।

প্রতিবেদন অনুসারে, ডিজিটাল ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তার দিক দিয়ে ঢাকা বিশ্বের চতুর্থ অনিরাপদ শহর। একইভাবে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দিক দিয়ে পঞ্চম অনিরাপদ শহর হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে ঢাকা। তবে সবচেয়ে অবনতি দেখা গেছে অবকাঠামোগত নিরাপত্তার সূচকে। এই সূচকে বিশ্বের দ্বিতীয় অনিরাপদ শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে রাজধানী শহরটি।

ইকোনমিস্ট প্রতিবেদনটি নিয়ে বলেছে, বর্তমান বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ নগরপন্থি। পুরো বিশ্বের ৫৬ শতাংশ জনগণ বিভিন্ন শহরে বাস করেন। ২০৫০ সালে এই হার ৬৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গ্রামীণ জীবন ছেড়ে শহরের দিকে অভিবাসনের হার বেশি দেখা যায়। বেশির ভাগ উন্নয়নশীল দেশগুলো এই ধরনের পরিবর্তন সামলাতে হিমশিম খায়।

নগরায়নের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সঠিকভাবে মোকাবিলা না করা গেলে তা বিশ্বের জন্য অর্থনৈতিক ও মানবিক হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সমপর্ক বিষয়ক পরিষদের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রবীণ অধ্যাপক থমাস বলিকি জানান, সামপ্রতিক দশকগুলোতে নগরায়ণ দ্রুত হারে বাড়ছে। গত ১০ বছরে ঢাকায় গড়ে প্রতি বছর আবাসন গড়ে তুলেছে ৪ লাখ ৫০ হাজার মানুষ। লন্ডনে প্রতি বছর গড়ে এক লাখ জনসংখ্যা বাড়ছে। একইভাবে নিউ ইয়র্কে বাড়ছে ২ লাখ ২০ হাজার করে।

প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, নিরাপদ শহরের তালিকার শীর্ষে থাকা শহরগুলো মৌলিক প্রয়োজনগুলো মেটাতে সক্ষম হয়েছে। নিরাপত্তা সূচকগুলোকে যে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে, তালিকার শীর্ষে থাকা শহরগুলোয় সেগুলো কার্যকরীভাবে নিশ্চিত হয়েছে। তবে প্রতিবেদনে আরো বলা হয় যে, এই শ্রেণিগুলোর মধ্যে খুব একটা ফারাক নেই। প্রত্যেকটি শ্রেণির উন্নয়ন অপর শ্রেণিগুলোর ওপর নির্ভরশীল। যেমন অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে তা পর্যায়ক্রমে স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক নিরাপত্তার উন্নতি ঘটাবে। আবার সাইবার-নিরাপত্তা জোরদার করা হলে তাতে শহরের সকল ধরনের নিরাপত্তাই জোরদার হবে।

http://mzamin.com/article.php?mzamin=188056