ইয়াঙ্গুনে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ল বিমান।
৯ মে ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১০:২১

ইয়াঙ্গুনে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ল বিমান

মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন বিমানবন্দরে বুধবার সন্ধ্যায় বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে অবতরণ করতে গিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়েছে।

এ ঘটনায় অল্পের জন্য যাত্রীদের প্রাণ রক্ষা হলেও পাইলটসহ ১৯ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সবাই শঙ্কামুক্ত। এতে ফ্লাইটটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। আহতদের আনতে রাতেই বিমানের বিশেষ ফ্লাইট মিয়ানমার গেছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র জানান, বিজি-০৬০ ফ্লাইটটি বুধবার বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। মিয়ানমারের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২২ মিনিটে ফ্লাইটটি ইয়াঙ্গুন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বৈরী আবহাওয়ার কারণে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে।

এ সময় বৃষ্টি ও ঘন ঘন বজ পাত হচ্ছিল বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় পাইলট ও ১৮ যাত্রী আহত হন। ফ্লাইটটিতে এক শিশুসহ ২৯ যাত্রী, দুইজন পাইলট ও দুইজন কেবিন ক্রু ছিলেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী।

ইয়াঙ্গুনে দুর্ঘটনার কবলে পড়া আহত যাত্রীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইট মিয়ানমারে পাঠানো হয়েছে। রাত ১১টা ২০ মিনিটে বিশেষ ফ্লাইট ড্যাশ-৮ কিউট-৪০০ ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে মিয়ানমারের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

বিশেষ এ ফ্লাইটে রয়েছে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চিফ অব ফ্লাইট সেফটি ক্যাপ্টেন সোয়েব চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি দল। ফ্লাইটটি নিয়ে যান ক্যাপ্টেন আনিস। তবে আহত যাত্রীদের নিয়ে ফ্লাইটটি আবার রাতেই ঢাকায় ফিরবে কিনা, তা জানা যায়নি।

মিয়ানমারের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে স্থানীয় দৈনিক মিয়ানমার টাইমস জানায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ায় পাইলট ও ১৮ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। তাদের সবাইকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ দুর্ঘটনার পর ওই রানওয়ে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দীর্ঘ সময় বিমান ওঠানামা স্থগিত হয়ে যায়। এ সময় আশপাশের বিমানগুলোকে থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই বিমানবন্দরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।

মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকেও বিমান ছিটকে পড়ার তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় বিমানটির বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে বলেও জানা গেছে।

মিয়ানমার পুলিশের একজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বিবিসি জানায়, ফ্লাইটির সামনের অংশসহ দুটো পাখা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে একজন পাইলট, একজন বিমানবালা এবং ৯ জন যাত্রী আহত হয়েছেন বলে ওই কর্মকর্তা জানান।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র জেনারেল ম্যানেজার শাকিল মেরাজ যুগান্তরকে বলেন, বিমানটি অবতরণের আগে স্থানীয় আবহাওয়া খুবই খারাপ ছিল। বজ পাতসহ মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। ওই অবস্থায় পাইলট বিমানটি অবতরণ করতে গেলে এটি রানওয়ে থেকে ছিটকে যায়।

এতে বিমানের ব্যাপক ক্ষতি হলেও যাত্রীদের নিরাপদে এয়ারক্রাফটটি থেকে বের করে আনা সম্ভব হয়। ওই ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসার কথা ছিল। ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য রাত ১০টায় ঢাকা থেকে বিকল্প একটি ফ্লাইট পাঠানো হয়েছে।

বিমানের প্রকৌশল শাখার একটি সূত্র জানায়, বিমানটিতে পাইলটের দায়িত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন নজরুল শামীম। জরাজীর্ণ ড্যাশ-৮ কিউ-৪০০ উড়োজাহাজটি অনেক দিন থেকে ভালো চলছিল না।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/175483