বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ সুমাইয়ার পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করতে যান আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান। ১৪ আগস্ট বুধবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী দোয়েল চত্বর এলাকায় সুমাইয়ার মায়ের বাড়িতে যান তিনি। আমীরে জামায়াত তাঁদের খোঁজখবর নেন এবং শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানান। তিনি শহীদ সুমাইয়ার ২ মাসের শিশু কন্যা সুয়াইবার সকল দায়িত্ব নেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা অঞ্চল দক্ষিণ পরিচালক সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মোঃ নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার, জেলা জামায়াতের আমীর আলহাজ্ব মমিনুল হকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা এখানে এসেছিলাম শহীদ বোন সুমাইয়ার অবুঝ শিশুকে দেখতে। যার মুখে এখনো ভাষা ফুটেনাই। এই শিশুর যখন মুখে ভাষা ফুটবে তখন তার মা ডাকার মতো কেউ রইলো না। এই শিশুর মতো যারা মা হারিয়েছে, যারা বাবা হারিয়েছে, যারা নিজেদের সন্তানদের হারিয়েছে আল্লাহর কাছে দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদের ধৈর্য্য ধারণ করার ক্ষমতা দেন। এই অবুঝ বাচ্চার এখন থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত যাবতীয় দায়িত্ব আমরা নিলাম ।”
তিনি বলেন, “যারা যালিমের হাতে মৃত্যুবরণ করলেন আল্লাহ তায়ালা তাদের শহীদের মর্যাদা দান করুন। এলাকাবাসীর নিকট অনুরোধ রইলো, যারা লুটতরাজ, চাঁদাবাজি করতে আসবে তাদেরকে কোনো ছাড় দিবেন না। ছাড় দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। এবার জনগণ প্রমাণ করে দিয়েছে তারা অন্যায়ের সঙ্গে কোনো আপস করে না। তারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে প্রমাণ করলো তারা দেশে শান্তি চায়। আমরা যেন দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারি আল্লাহ তায়ালা আমাদের সেই তৌফিক দান করুন।
এখন যদি কেউ আবারো এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাহলে তা শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি হবে। আর যেন কেউ তা না করতে পারে সেজন্য আপনারা অলিগলিতে, এলাকায় এলাকায় তাদের হাত অবশ করে দিবেন। যারা এসব অপকর্মে জড়িত হচ্ছেন তাদের বিনয়ের সঙ্গে বলবো, আপনারা শিক্ষা নিন। এখনো মানুষের বুকের চাপা কষ্ট দূর হয়নি। বাড়াবাড়ি যারাই করবেন জনগণ তাদের উচিত শিক্ষা দেবে।”
উল্লেখ্য যে, গত ২১ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশের বেপড়োয়া গুলিতে মিজমিজি পাইনাদী দোয়েল চত্বর এলাকায় দৌড়াদৌড়ির আওয়াজ শুনে ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখছিলেন সুমাইয়া। এসময় হেলিকপ্টার থেকে র্যাবের ছোড়া গুলিতে জানালার এসএস পাইপ ছিদ্র করে তার মাথার বাম পাশে লেগে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন।