২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, সোমবার

রাজধানীর মানিকনগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে জামায়াত ইসলামী

রাষ্ট্র সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে- নূরুল ইসলাম বুলবুল

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, ইসলামী সমাজব্যবস্থা বিনির্মাণের স্বপ্ন ও আর্ত-মানবতার সেবার মহতি উদ্দেশ্য নিয়ে জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তিনি বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম, ত্যাগ কোরবানি ও মানব সেবার মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী সে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আজ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সোমবার সকালে রাজধানীর মানিকনগরের কুমিল্লা পট্টিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে আর্থিক সহযোগিতা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সহ খাবার ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কালে এসব কথা বলেন।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, আদর্শবাদী সংগঠনটি বরাবরই জনগণের যেকোন বিপদ-অপদে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছে। আর দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর এই গণমুখী প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। তিনি অগ্নিদুর্গতদের কল্যাণে কাজ করতে সমাজের বিত্ত্ববান ব্যক্তি সহ সকল স্তরের মানুষসহ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান।

তিনি বলেন, আইনের শাসন, নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা, দেশের শান্তিশৃঙ্খলা ও যেকোন রাষ্ট্রীয় দুর্যোগ মোকাবেলা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার অধিকারের নিশ্চয়তার দায়িত্বও রাষ্ট্র কোন ভাবেই উপেক্ষা করতে পারে না। যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলায় শুধু আমাদের দেশে নয় বরং প্রতিটি রাষ্ট্রেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় রয়েছে। যেকোন দুর্ঘটনাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু আমাদের দেশে নেতিবাচক রাজনীতির কারণে রাষ্ট্র গণমুখী চরিত্র হারিয়ে ফেলায় রাষ্ট্রের কোন অঙ্গই আইন ও সংবিধান অনুযায়ি কাজ করতে পারছে না। ফলে রাষ্ট্র সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। এমতাবস্থায় জামায়াতে ইসলামী সবসময়ই দুর্গত ও বিপন্ন মানুষের কল্যাণে তাদের পাশে থেকেছে। কিন্তু রাষ্ট্রের অভাব ব্যক্তি বা সাংগঠনিক পর্যায়ে কোন ভাবেই সমাধান করা সম্ভব নয়। তবুও আমাদের সীমিত সামর্থ নিয়ে সাধ্যমত দুর্গত মানুষের দুর্দশা লাঘবে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে অগ্নিদুর্ঘটনার সংখ্যা আগের তুলনায় কমে আসলেও আমাদের দেশে তা আশঙ্কাজনকভাবেই বেড়েই চলেছে। আমাদের দেশের অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা আজও সেকেলে রয়ে গেছে। সরকার দেশের প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবি করলেও আমাদের দেশে অগ্নি নির্বাপনে এখনও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নেই। নেই দুর্গতদের দ্রুত চিকিৎসা ও পূনর্বাসনের ব্যবস্থাও। যা এক ধরনের রাষ্ট্রীয় দায়িত্বহীনতা। তিনি অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের যথাযথ ক্ষতিপূরণসহ স্বল্প সময়ের মধ্যে পূনর্বাসন, হতাহতদের সুচিকিৎসা সহ অর্থিক সাহায্য এবং ঘটনার পূনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।

এসময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি হাফিজুর রহমান, জামায়াতের মুগদা উত্তর থানা আমীর মোঃ মতিউর রহমান, মুগদা দক্ষিণ থানা আমীর অধ্যাপক বনি ইয়ামিন, থানা সেক্রেটারি রিয়াজ উদ্দিন, শ্রমিক নেতা সোহেল রানা মিঠু, মুগদা থানা কর্মপরিষদ সদস্য ইয়াকুব আলী, আবু মাহীর, জয়নাল আবেদীন, ইকবাল হোসাইন, আল আমিন, সেলিম রেজা, আব্দুর রহমান, ইমদাদুল হক প্রমুখ।