বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেমে দ্বীন এবং সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অবদানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমান ৯ মে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন,
“শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী বাংলাদেশের জনগণের নিকট অতি পরিচিত একটি নাম, একজন আলেমে দ্বীন ও ইসলামী চিন্তাবিদ। সততা, যোগ্যতা, উদারতা, বিনয়, ক্ষমাশীলতা তাকে অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। আল্লাহ তা'য়ালার প্রদত্ত যোগ্যতা বলে বাল্যকাল থেকেই তিনি তার সমসাময়িক সময়ের প্রতিটি স্তরে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন। তিনি তার জীবনের শুরু থেকে ইসলামী আদর্শ প্রচার, প্রসার ও প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়েজিত ছিলেন। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। বাংলাদেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ন্যায় বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তিনি জোরালো ভূমিকা পালন করেন।
তিনি তার নিজ এলাকা থেকে ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বিপুল ভোটে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জাতীয় সংসদে তার গঠনমূলক ভূমিকা জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। বিভিন্ন ইস্যুতে জাতীয় সংসদে তার বক্তব্য ছিল দিক-নির্দেশনামূলক। ইসলামী শিক্ষার প্রসারে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। কওমী মাদ্রাসার শিক্ষাকে সরকারি স্বীকৃতি দেয়ার জন্য তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন।
তিনি সততা, যোগ্যতা, দক্ষতার সাথে কৃষি ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তার কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় শিল্পখাত একটি লাভজনক খাতে পরিণত হয়।
আন্তর্জাতিক অঙ্গণে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ছিল। ২০০৬ সালে জর্ডান থেকে প্রকাশিত একটি তালিকায় বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০০ জনের মধ্যে মাওলানা নিজামীকে তালিকাভুক্ত করা হয়। ২০০৯ সালে এক জরিপে তিনি বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০ জন মুসলমানের অন্যতম বলে বিবেচিত হন।
তিনি অনেকগুলো মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন- যা মানুষের আত্মগঠন, পরিবার ও সমাজ গঠনে আলোর দিশা দিবে। দেশে-বিদেশে অসংখ্য সেমিনার, সভা ও সমাবেশে তার দাওয়াতী বক্তব্য মানুষের চিন্তার জগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
তাকে রাজৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। ২০১৬ সালের ১০ মে দিবাগত রাত ১২:১০টায় তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
আমি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মানের সাথে সাবেক আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অবদানকে স্মরণ করছি। মহান রাব্বুল আলামীন তাকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন এবং জান্নাতুল ফিরদাউসের উচ্চ মর্যাদায় আসীন করুন। তার অসমাপ্ত কাজ আঞ্জাম দেয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে আসার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”