৬ মার্চ ২০১৮, মঙ্গলবার

জামায়াতকে জড়িয়ে অর্থমন্ত্রীর আপত্তিকর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা

দেশের বৃহৎ ও প্রতিষ্ঠিত একটি ইসলামী দল সম্পর্কে অর্থমন্ত্রীর হাস্যকর ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যে দেশবাসী বিস্মিত

অর্থমন্ত্রী জনাব আবুল মাল আবদুল মুহিত গত ৫ মার্চ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে যে সব আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করেছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আজ ৬ মার্চ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “অর্থমন্ত্রী জনাব আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল ৫ মার্চ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে যে সব আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করেছেন তা সম্পূর্ণ অন্যায়, অসত্য, অযৌক্তিক ও কুরুচিপূর্ণ। দেশের অন্যতম বৃহৎ ও প্রতিষ্ঠিত একটি ইসলামী দল সম্পর্কে তার এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন, হাস্যকর ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যে দেশবাসী বিস্মিত হয়েছে।

বাংলাদেশের জনগণ খুব ভাল করেই জানেন যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী দেশের একটি আইনানুগ ইসলামী রাজনৈতিক দল। জামায়াতে ইসলামী দেশের আইন ও সংবিধান মেনে রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালনা করে আসছে। জামায়াতের ভূমিকা গঠনমূলক। স্বাধীনতার পর থেকে দেশের সকল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত দলীয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং প্রত্যেক সংসদেই জামায়াতের জনপ্রতিনিধি ছিল। দেশের বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদেও জামায়াতের বিপুল সংখ্যক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি রয়েছে। দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জামায়াত জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও জোটের পাশে থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর ও ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা অধ্যাপক গোলাম আযম (রাহিমাহুল্লাহ) উপস্থাপিত কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা সর্বমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। সেই কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থার সুবাদেই বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সুযোগ পেয়েছে। তারা তাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে দেশে-বিদেশের সর্বমহলে সমাদৃত নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। আজ বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে জনগণের কোন রাজনৈতিক অধিকার নেই। সরকারের প্রতিহিংসার শিকার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

বর্তমান সরকার বেআইনীভাবে জামায়াতসহ সকল রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক তৎপরতায় বাধা দিয়ে একের পর এক সংবিধান লংঘন করেই চলেছে। এ সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। বর্তমান সরকার একটি অনির্বাচিত ফ্যাসিবাদী সরকার। ফ্যাসিবাদী সরকারের অর্থমন্ত্রী একই সুরে বক্তব্য দিবেন এটাই স্বাভাবিক। তিনি ‘জামায়াতকে এখনই দেশ থেকে বের করে দেওয়া উচিত’ বলে যে সন্ত্রাসী বক্তব্য দিয়েছেন জনগণ তা প্রত্যাখ্যান করেছে। জামায়াত জনগণের সহানুভূতি নিয়ে বাংলাদেশে রাজনীতি করছে। জামায়াতের উপর সরকারের জুলুম-নির্যাতনের ফলে জনগণের সমর্থন ও সহানুভূতি আরও অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থমন্ত্রীর দয়া এবং করুণার উপর নির্ভর করে জামায়াত রাজনীতি করে না। জামায়াতের রাজনীতি এ দেশের মানুষের জন্য। জনগণের কল্যাণের উদ্দেশ্যে। তাই তার হাস্যকর বক্তব্য জনগণের উপর কোনই প্রভাব ফেলেনি।

আমি আশা করি একজন বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি হিসেবে সম্মানিত অর্থমন্ত্রী জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে এ ধরনের অন্যায়, অযৌক্তিক, বেআইনী ও হাস্যকর বক্তব্য প্রদান করা থেকে বিরত থাকবেন। সেই সাথে জামায়াতে ইসলামীসহ ২০ দলীয় জোটের কারাবন্দী সকল নেতা-কর্মীকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে সভা-সমাবেশ করার সকল গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার ও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানচ্ছি।”