২৯ আগস্ট ২০২২, সোমবার

৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম দিবস

গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের নিকট ফেরত দেওয়ার আহবান

৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ২৯ আগস্ট এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম দিবস। বাংলাদেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর তথ্যানুযায়ী বর্তমান সরকারের আমলে ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতা-কর্মী-ছাত্রসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার ৬ শতাধিক মানুষকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা অপহরণ করে গুম করেছে। এদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে ৭৮ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। ৮৯ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং ৫৭ জন ফেরত এসেছে। অন্যদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য গণমাধ্যম সূত্রে এখনো জানা যায়নি। এ পর্যন্ত অজ্ঞাত স্থান থেকে যারা ফিরে এসেছেন তারা কেউই অপহরণকারীদের ব্যাপারে মুখ খোলার সাহস করেননি। অনেকে ফিরে আসার পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।

যাদের গুম করা হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের পুত্র সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নির্বাহী পরিষদ সদস্য শহীদ মীর কাসেম আলীর পুত্র সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাসেম আরমান, হাফেজ জাকির হোসাইন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা আল মোকাদ্দাস ও মোহাম্মদ ওলিউল্লাহ এবং বিএনপি’র নেতা জনাব ইলিয়াস আলী ও সাবেক কমিশনার চৌধুরী আলম প্রমুখ।

যাদেরকে গুম করা হয়েছে তাদের পরিবার-পরিজন অত্যন্ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে জীবন-যাপন করছেন। অনেকেরই পিতা-মাতা এবং স্ত্রীসহ আপনজন শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গুম হওয়া ব্যক্তিদের তাদের পরিবারের নিকট ফেরত দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট আবেদন-নিবেদন করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকার গুম হওয়া ব্যক্তিদের ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। গুম হওয়া ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজন সাংবাদিক সম্মেলন করে আপনজনকে পরিবারের নিকট ফেরত দেয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

আজ বাংলাদেশের মানুষের সকল অধিকার গুম হয়ে গিয়েছে। মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার, স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার বলতে দেশে কিছুই নেই। অন্ন-বস্ত্র-চিকিৎসাসহ মানুষের সব ধরনের অধিকার হরণ করেছে বর্তমান সরকার। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে সকল প্রকার জুলুম-নির্যাতন ও ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”