২ ডিসেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার

শেওড়াপাড়ায় ঔষধ ব্যবসায়ীদের সাথে জামায়াতের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

দেশের ঔষধশিল্পকে বৈশ্বিক মানে উন্নীত করতে হবে— ডা. শফিকুর রহমান

আমাদের বিপুল জনসংখ্যা কোনো বোঝা নয়; বরং এটি মানবসম্পদ। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে কর্মক্ষম জনশক্তিতে রূপান্তর করতে পারলেই দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, আত্মনির্ভরশীল রাষ্ট্র হিসেবে দাঁড় করানো সম্ভব — এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি আজ ২ ডিসেম্বর দুপুর ১টায় রাজধানীর শেওড়াপাড়ার মেহফিল কনভেনশন হলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ঢাকা-১৫ আসনের ঔষধ ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বিসিডিএস-এর কেন্দ্রীয় নেতা এ.এ.এম. আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে এবং বিসিডিএস-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক।

এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—পেশাজীবী জোনের সহকারী পরিচালক জিয়াউল হাসান, কাফরুল জোনের সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল্লাহ, আসনের সদস্য সচিব শাহ আলম তুহিন, কাফরুল দক্ষিণ থানা সেক্রেটারি আবু নাহিদ, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থানার আমীর সোহেল রানা, সাহিত্য-সংস্কৃতি থানার আমীর আবেদুর রহমান, কাফরুল পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত আমীর আতিক হাসান রায়হান, আদর্শ শিক্ষক পরিষদের সভাপতি প্রফেসর কামাল উদ্দিন, ব্যবসায়ী বিভাগের সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মাদ ইসমাঈল, ডা. হাসানুল বান্না, জসিম উদ্দিন, হাফেজ আশিকুর রহমান, আবু নাহিদ ও মুফতি মাসুদুর রহমান প্রমুখ।

আমীর জামায়াত বলেন, বাংলাদেশ আমাদের প্রিয় জন্মভূমি। আয়তনে ছোট হলেও জনসংখ্যা বেশি। কেউ কেউ এই বাড়তি জনসংখ্যাকে দেশের জন্য বোঝা মনে করলেও মানুষ কখনোই কোনো দেশের বোঝা নয়; বরং তা মানবসম্পদ। তাই দেশের মানুষকে দক্ষ জনশক্তিতে গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, রাসূল (সা.) দুর্বল মানুষের চেয়ে সবল মানুষকে বেশি পছন্দ করতেন। সবল হওয়ার দুটি দিক—একটি শারীরিক শক্তি, অন্যটি ঈমানী শক্তি। সুস্থতা আল্লাহ তা’য়ালার মহান নিয়ামত। তাই অসুস্থ হওয়ার আগে সুস্থতাকে গুরুত্ব দেওয়ার শিক্ষা ইসলাম দিয়েছে। একটি দেশকে এগিয়ে নিতে চাইলে স্বাস্থ্যবান জনশক্তির বিকল্প নেই; তাহলেই আমরা আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো।

তিনি আরো বলেন, দেশের একশ্রেণির চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তারা অনেক সময় ঔষধ কোম্পানির অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে কোম্পানিগুলোর স্বার্থে কাজ করেন। এতে নীতি-নৈতিকতা উপেক্ষিত হয় এবং বৈষয়িক স্বার্থ প্রধান হয়ে ওঠে। লোভের কারণে তারা হালাল-হারামের তোয়াক্কা করেন না—যা মানুষের জীবনের প্রতি দায়িত্বহীনতার পরিচয়।

ঔষধশিল্প নিয়ে তিনি বলেন, একসময় বাংলাদেশের ঔষধশিল্প ছিল বিদেশি কোম্পানিনির্ভর। বর্তমানে সেই অবস্থা পরিবর্তন হয়েছে—এখন বাংলাদেশের ঔষধ ৩৮টি দেশে রপ্তানি হয়। তিনি দেশীয় ঔষধশিল্পকে বৈশ্বিক মানে উন্নীত করতে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

আমীরে জামায়াত বলেন, যেমন সব চিকিৎসক ভালো নন, তেমনি সবাই খারাপও নন। একশ্রেণির ঔষধ কোম্পানি চিকিৎসকদের পেছনে অযথা বিনিয়োগ করে, আর কিছু চিকিৎসক ব্যক্তিগত আর্থিক লাভের জন্য জনগণকে প্রতারিত করে প্রেসক্রিপশনে কোম্পানির স্বার্থ বাস্তবায়ন করেন। এগুলো অনৈতিক ও অন্যায়ের সামিল।

তিনি বলেন, মানুষ দুনিয়ায় প্রশংসা না করলেও আল্লাহর কাছে ভালো কাজের মহাপুরস্কার রয়েছে। জীবনের সব ক্ষেত্রে আল্লাহর আনুগত্য করার এবং চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট সবাইকে নৈতিকতার পথে চলার আহ্বান জানান তিনি।